ইউক্রেনের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আন্তন হেরাশচেঙ্কো বলেছেন, রাশিয়ান বাহিনী তাদের রাজধানী কিয়েভের একটি টেলিভিশন টাওয়ারে হামলা চালিয়েছে, সম্ভবত এর সিগনাল ব্যাহত করার জন্য।
ওয়ান প্লাস ওয়ান নামের স্থানীয় ওই টেলিভিশন চ্যানেল বলেছে, যে কোনো হারানো সংকেত পুনরুদ্ধারের জন্য কাজ করা হবে।
রাজধানীতে অবস্থিত ইউক্রেনের ইংরেজি ভাষার নিউজ আউটলেট কিয়েভ ইন্ডিপেন্ডেন্ট জানিয়েছে, হামলার পর ইউক্রেনীয় টিভি চ্যানেলগুলো সম্প্রচার বন্ধ করে দিয়েছে।
এক প্রতিবেদনে আল জাজিরা এই খবর দিয়েছে। তবে স্বাধীনভাবে খবরের সত্যতা যাচাই করতে পারেনি আল জাজিরা।
এর আগে আনুষ্ঠানিকভাবে ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভে হামলা শুরুর ঘোষণা দিয়ে শহরটির বাসিন্দাদের জন্য সতর্কতা জারি করেছে রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়। আজ মঙ্গলবার সন্ধ্যায় এই সতর্কতা জারি করা হয়।
রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের বরাতে বিবিসি জানায়, ইউক্রেনের আইন প্রয়োগকারী সংস্থার প্রযুক্তিগত কেন্দ্র এবং কিয়েভের ৭২তম প্রধান সাইঅপস কেন্দ্রের সুনির্দিষ্ট লক্ষ্যবস্তুতে হামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে রাশিয়া।
বিবৃতিতে রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানায়, ‘আমরা ইউক্রেনের সাধারণ নাগরিক, যাদেরকে উগ্র জাতীয়তাবাদীরা রাশিয়ার বিরুদ্ধে উস্কানির জন্য ব্যবহার করছে তাদের এবং একইসঙ্গে রিলে স্টেশনের কাছাকাছি বসবাসকারী কিয়েভের বাসিন্দাদের বাড়ি ছেড়ে যাওয়ার অনুরোধ করছি’।
৬ষ্ঠ দিনে পড়া ইউক্রেনে রাশিয়ার সামরিক অভিযান নতুন মোড় নিতে যাচ্ছে আজ। ব্যাপক প্রতিরোধের মুখে পড়লেও রাজধানী কিয়েভ দখলে মরিয়া রুশ বাহিনী।
বিবিসি বলছে, রাশিয়ার একটি বিশাল সামরিক বহর ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভের দিকে অগ্রসর হচ্ছে। স্যাটেলাইট কোম্পানি ম্যাক্সার টেকনোলজির প্রকাশিত স্যাটেলাইট ছবিতে দেখা যাচ্ছে, সামরিক বহরটি প্রায় ৪০ কিলোমিটার দীর্ঘ। রাশিয়ার এই বিশাল সেনা বহর সন্ধ্যার মধ্যেই কিয়েভের কাছে পৌঁছে গেছে।
ইউক্রেনের সামরিক বাহিনী বলছে রাশিয়ার সেনাবাহিনী রাজধানী কিয়েভের ওপর হামলা শুরু করেছে। কিয়েভসহ ইউক্রেনের সব প্রধান প্রধান শহরে বিমান ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলার সতর্কতায় সাইরেন বাজানো হচ্ছে।
ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভ থেকে বিবিসির চিফ ইন্টারন্যাশনাল করেসপন্ডেন্ট লিস ডুসেট জানাচ্ছেন, রাশিয়ার বিশাল সামরিক বহর কিয়েভমুখী হবার কারণে ব্যাপক আতঙ্ক তৈরি হয়েছে। রাশিয়ার সামরিক বহরের এই গতিপথ পর্যবেক্ষণ করছে পুরো বিশ্ব।
কিয়েভ শহরের অনেকে আশঙ্কা করছেন রাশিয়ার সৈন্যরা ‘মধ্যযুগীয় কায়দায়’ শহরকে অবরোধ করে রাখবে। শহরের বাসিন্দাদের জন্য খাদ্য, পানি এবং জরুরি সরবরাহ বন্ধের আশংকা করা হচ্ছে।
রাশিয়া যখন ইউক্রেনে হামলা শুরু করে তখন ধারণা করা হয়েছিল শক্তিশালী রাশিয়া মাত্র কয়েকদিন কিংবা কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই কিয়েভ দখল করে নেবে।
কিন্তু হামলার পর পাঁচদিন অতিবাহিত হয়েছে। পশ্চিমা দেশগুলোর সরবরাহ করা অস্ত্র দিয়ে ইউক্রেনের সেনাবাহিনী এবং সাধারণ মানুষ একত্রিত হয়ে রাশিয়ার বিরুদ্ধে প্রতিরোধ তৈরি করেছে। অনেক সাধারণ মানুষ হাতে অস্ত্র তুলে নিয়েছে এবং রাশিয়ার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে যোগ দিয়েছে।
Leave a Reply