1. admin@thedailypadma.com : admin :
পুতিন কখনোই এটা করবেন না-এমন কথা অন্তত আর বলার অবকাশ নেই - দ্য ডেইলি পদ্মা
মঙ্গলবার, ০৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২:১৫ অপরাহ্ন

পুতিন কখনোই এটা করবেন না-এমন কথা অন্তত আর বলার অবকাশ নেই

  • Update Time : মঙ্গলবার, ১ মার্চ, ২০২২
  • ১৩৭ Time View
ইউক্রেনের রুশ আগ্রাসনের পঞ্চম দিনে সোমবার যুদ্ধ বন্ধের লক্ষ্যে দুই দেশের প্রতিনিধিদের মধ্যে শান্তি আলোচনা শুরু হয়েছে। প্রিপিয়াত নদীর কাছে ইউক্রেন-বেলারুশ সীমান্তের গোমেল অঞ্চলে এ বৈঠক শুরু হয়।
এমন স্বস্তির খবরেও অস্বস্তি রয়ে যায় যখন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন পারমাণবিক অস্ত্রের বহর তৈরি রাখার হুকুম দিয়েছেন সেনাবাহিনীকে। এমন ক্ষণে ভয় জাগে পারমাণবিক অস্ত্রের ব্যবহার ইউক্রেনে শুরু হলে যুদ্ধ বাড়বে বৈ কমবে না। আর তা শেষ পর্যন্ত বিশ্বকে তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের দিকে নিয়ে যায় কিনা সেই শঙ্কা থেকেই যায়।
আরো শঙ্কা আছে পুতিনকে ঠিক বোঝা যায় না। প্রতিবারই সবাই ভেবেছে পুতিন ধাপ্পা দিচ্ছেন; এমন পাগলামি তিনি করতে পারেন না। কিন্তু ঠিক সেটাই তিনি করেছেন। পুতিন ক্রিমিয়া দখল করেছেন। দনবাসে পুতিন যুদ্ধ শুরু করেছেন। অনেকেই ভাবেননি ইউক্রেনে পুতিন সত্যি সত্যি সামরিক অভিযান শুরু করে দেবেন। কিন্তু সেটাও তিনি করেছেন।
যেমনটি ধারণা করেছেন মস্কোয় বিবিসির সাংবাদিক স্টিভ রোজেনবার্গ। তার মতে- ‘পুতিন কখনোই এটা করবেন না-এমন কথা অন্তত আর বলার অবকাশ নেই।’
সোমবারের বৈঠক যদি ভেস্তে যায় আর পুতিন যদি সর্বশেষ অস্ত্র পারমাণবিক অস্ত্রের ব্যবহার করেন তবে তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ আসন্নই বলা চলে। দুটি বিশ্বযুদ্ধের পটভূমিকা বিশ্লেষণে দেখা যায় খুব বেশি বড় কারণে তা বাধেনি।
পুতিনের সাম্প্রতিক কথামালা বড়ই আগ্রাসী। সর্বশেষ গত বৃহস্পতিবার ভোরে টিভিতে ভাষণ দিয়ে পুতিন যখন ইউক্রেনে ‘বিশেষ সামরিক অভিযান’ শুরুর ঘোষণা দিলেন, রক্ত হিম করা এক বার্তাও তিনি দিয়ে রেখেছিলেন, ‘কেউ যদি বাইরে থেকে এর মধ্যে নাক গলানোর কথা ভাব, সে তুমি যেই হও, এমন এক পরিণতি তোমাকে ভোগ করতে হবে, যা ইতিহাসে কেউ কখনো করেনি।’
এমন কথা চূড়ান্ত পরিণতি অর্থাৎ পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহারের প্রচ্ছন্ন হুমকিই বলা চলে। কথা ঘুরিয়ে ফিরিয়ে তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের দিকেই ধাবিত করে।
স্মরণ করা যেতে পারে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের কথা। তিনি বলেছেন, রাশিয়ার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞার বিকল্প হলো তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ। ব্লগার ব্রায়ান টাইলার কোহেনের সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে এসব কথা বলেন বাইডেন। রাশিয়ার বার্তা সংস্থা তাসের খবরে এসব তথ্য জানানো হয়।
ইউক্রেনের সামরিক হামলার পর দেশটিতে উভয় পক্ষের প্রচুর প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে। রাশিয়ার এই সামরিক অভিযানের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ পশ্চিমা বিশ্ব সরব হয়েছে। ইতোমধ্যে নানা ক্ষেত্রে রাশিয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হচ্ছে।
সাক্ষাৎকারে প্রেসিডেন্ট বাইডেন বলেন, ‘দুটো বিকল্প আমাদের হাতে আছে। এক, তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরু করা, রাশিয়ার সঙ্গে সরাসরি যুদ্ধে যাওয়া। দুই, যে দেশটি আন্তর্জাতিক সব নিয়মনীতি লঙ্ঘন করছে, তার জন্য তাকে মূল্য দিতে বাধ্য করা।’
কোহেনের ইউটিউব পেজে এই সাক্ষাৎকারের ভিডিও প্রকাশ করা হয় গত শনিবার। বাইডেন এও বলেন, ‘কোনো নিষেধাজ্ঞাই সত্ত্বর হচ্ছে না। তবে তিনি জানান, এসব নিষেধাজ্ঞা হবে ব্যাপক এবং ইতিহাসের বৃহত্তম। এর মধ্যে অর্থনৈতিক এবং রাজনৈতিক নিষেধাজ্ঞাও আছে।’ বাইডেনের এসব কথায়ও তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের প্রসঙ্গ আসে।
ইউক্রেনে রাশিয়ার আক্রমণের নিন্দা জানিয়েছেন চীনের পাঁচজন প্রখ্যাত ইতিহাসবিদ। এক খোলা চিঠিতে তারা রাশিয়ার হামলা প্রত্যাখ্যান করে শান্তির আহ্বান জানিয়েছেন। লেখকরা চিঠিতে আশা করেছেন বেইজিং নিজের অবস্থান স্পষ্ট করবে- রাশিয়া যা করছে ভুল এবং চীনের উচিত জোর গলায় তা বলা। এই ইতিহাসবিদদের একজন জু গউকি। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ানকে তিনি বলেছেন, ‘পুতিন হয়তো চীনকে বোকা বানিয়েছেন।’ এখন দেখার পালা পুতিন পুরো বিশ্ববাসীকে বোকা বানান কিনা!
চীনা ইতিহাসবিদ আরো বলেন, প্রথম বিশ্বযুদ্ধের একজন ইতিহাসবিদ আমি। ১০০ বছর আগে ইউরোপ চোখ বুজে একটি বড় যুদ্ধে জড়িয়েছে। যেটির ভয়াবহ পরিণতি চীনকে ভোগ করতে হয়েছে। এই যুদ্ধ কোথায় গড়াবে? এটি কি বড় আকারের যুদ্ধে পরিণত হবে? ইতিহাসের বড় বড় বিপর্যয়গুলো প্রায়ই স্থানীয় সংঘাতে শুরু হয়েছে। আমরা ইউক্রেনে রাশিয়ার যুদ্ধের দৃঢ় বিরোধিতা করি। শক্তির জোরে একটি সার্বভৌম রাষ্ট্রে আক্রমণ জাতিসংঘের চার্টার অনুসারে আন্তর্জাতিক রীতির লঙ্ঘন এবং বিদ্যমান আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা ভঙ্গ করা।
সর্বশেষ খবরে যুক্তরাজ্যের প্রতিরক্ষামন্ত্রী বেন ওয়ালেস বলেছেন, রাশিয়া পারমাণবিক অস্ত্র সম্পর্কিত কিছু ঘটালে পশ্চিমাদের দিক থেকেও কঠোর জবাব দেওয়া হবে। বিবিসির প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।
যুক্তরাজ্যের প্রতিরক্ষামন্ত্রী বলেন, রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ঘোষণা করেছেন, তার পারমাণবিক বাহিনী উচ্চ সতর্কতার মধ্যে রয়েছে। এর মাধ্যমে তিনি বিশ্বকে স্মরণ করিয়ে দিচ্ছেন যে, তার একটি প্রতিরোধ ব্যবস্থা রয়েছে এবং একইসঙ্গে এটি ইউক্রেনে সংগঠিত বাজে পরিস্থিত থেকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টাও বটে।
তিনি বলেন, ব্রিটেনও একটি পারমাণবিক শক্তিধর দেশ এবং পুতিন জেনে রাখবেন যে, পারমাণবিক অস্ত্র সম্পর্কিত কিছু ঘটলে পশ্চিমাদের দিক থেকেও সমপরিমাণ কিংবা কঠোর জবাব মিলবে। বেন ওয়ালেস বলেন, পারমাণবিক পরিস্থিতি উসকে দিতে যুক্তরাজ্য কিছু করবে না। তবে ‘এটি একটি বাগযুদ্ধ এবং এটি যাতে সঠিকভাবে পরিচালিত হয় সেটি আমাদেরকে নিশ্চিত করতে হবে’।
কথার বান শেষে পরমাণু শক্তিধর কোনো দেশ রাশিয়াকে আঘাত করলেই আরেকটি বিশ্ব যুদ্ধ বেধে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন সমর বিশেষজ্ঞরা। সিএনএনের রাজনীতি বিশ্নেষক জশ রোগিন বলেন, পশ্চিমা নেতাদের দুর্বলতার পাঠ পুতিন ভালো করেই অধ্যয়ণ করেছেন।
ইউক্রেন-রাশিয়া সংকট বাগযুদ্ধ ছাড়িয়ে এখন প্রকৃত সমর। এই সমর কোথায় গড়ায় ভাবনার বিষয়। নিন্দুকের কথা যেন না ফলে। তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের মুখোমুখি হতে চায় না বিশ্ব!

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
স্বপ্নপূরণের ক্ষণগণনা
অপেক্ষা উদ্বোধনের
দিন
ঘন্টা
মিনিট
সেকেন্ড
© স্বর্বস্বত্ব সংরক্ষিত। এই ওয়েবসাইটের লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Theme Customized By BreakingNews