ইউক্রেনে রাশিয়ার সামরিক অভিযানের শুরু থেকে এ পর্যন্ত ১১ হাজারেরও বেশি রুশ সেনা নিহত হয়েছে বলে দাবি করেছে ইউক্রেনের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়। রোববার মন্ত্রণালয় থেকে দেওয়া এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানানো হয়।
আগের দিন শনিবারের বিবৃতিতে ১০ হাজারের অধিক রুশ সেনা নিহত হয়েছে বলে জানিয়েছিল প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়। তবে, গত ১১ দিনের অভিযানে কত সংখ্যক ইউক্রেনীয় সেনা নিহত হয়েছে, সে বিষয়ে কোনো তথ্য দেওয়া হয়নি বিবৃতিতে।
এদিকে, শুক্রবার এক সংবাদ সম্মেলনে রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মেজর জেনারেল ইগর কোনাশেনকভ জানান, ইউক্রেনে চলমান অভিযানে এ পর্যন্ত ২ হাজার ২শ’রও বেশি সামরিক স্থাপনা ধ্বংস করেছে রুশ বাহিনী।
এছাড়া দেশটির প্রিইউৎনয়, জাভিত্নে-বাঝান্নে, স্তারোমলিয়ানোভকা, অক্তায়াব্রসকোয়ি, নোভোমায়াস্কয়ি শহরের সেনা নিবাস ও সেনা ছাউনি থেকে ইউক্রেনীয় সেনাদের হটিয়ে দেওয়া হয়েছে বলেও সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছেন রুশ প্রতিরক্ষা বাহিনীর এই মুখপাত্র। তবে কতজন ইউক্রেনীয় সেনা নিহত হয়েছেন— সে সম্পর্কিত কোনো তথ্য দেননি ইগর কোনাশেনকভ।
কয়েক বছর আগে পশ্চিমা দেশগুলোর সামরিক জোট ন্যাটোর সদস্যপদের জন্য আবেদন করে ইউক্রেন। তারপর থেকেই এই ব্যাপারটিকে ঘিরে দ্বন্দ্ব শুরু হয় রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে।
এর মধ্যে ন্যাটো ইউক্রেনকে পূর্ণ সদস্যপদ না দিলেও ‘সহযোগী দেশ’ হিসেবে মনোনীত করার পর দ্বন্দ্বের তীব্রতা আরও বাড়ে। ন্যাটোর সদস্যপদের জন্য আবেদন প্রত্যাহারে ইউক্রেনের ওপর চাপ প্রয়োগ করতে গত দুই মাস রাশিয়া-ইউক্রেন সীমান্তে প্রায় দুই লাখ সেনা মোতায়েন রেখেছিল মস্কো।
কিন্তু এই কৌশল কোনো কাজে আসেনি। উপরন্তু এই দু’মাসের প্রায় প্রতিদিনই যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্ররা অভিযোগ করে গেছে— যে কোনো সময় ইউক্রেনে হামলা চালাতে পারে রুশ বাহিনী।
অবশেষে গত ২২ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলীয় দুই ভূখণ্ড দনেতস্ক ও লুহানস্ককে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেয় রাশিয়া; এবং তার দু’দিন পর, ২৪ তারিখ ইউক্রেনে সামরিক অভিযান শুরুর নির্দেশ দেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন।
রোববার একাদশতম দিনে পৌঁছেছে এই অভিযান। প্রাণ বাঁচাতে ইতোমধ্যে ইউক্রেন থেকে পালিয়ে পার্শ্ববর্শিতী রাষ্ট্র পোল্যান্ড ও রোমানিয়ায় আশ্রয় নিয়েছেন প্রায় ১০ লাখ ইউক্রেনীয়। এছাড়াও দেশটিতে শতাধিক বেসামরিক মানুষ নিহত হয়েছেন, তাদের মধ্যে আছে উল্লেখযোগ্যসংখ্যক শিশুও।
সূত্র: রয়টার্স
Leave a Reply