রাশিয়ার সঙ্গে চলমান যুদ্ধ পরিস্থিতির মধ্যেই ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভে পৌঁছেছেন পূর্ব ইউরোপের তিন দেশ চেক প্রজাতন্ত্র, পোল্যান্ড ও স্লোভেনিয়ার প্রধানমন্ত্রীরা। স্থানীয় সময় মঙ্গলবার (১৫ মার্চ) সন্ধ্যায় পোল্যান্ড থেকে ট্রেনে দীর্ঘ পথ পাড়ি দিয়ে তারা কিয়েভে পৌঁছান। বর্তমানে শহরটিতে ৩৫ ঘণ্টার কারফিউ চলছে।
চেক প্রধানমন্ত্রী পিটার ফিয়ালা ও পোল্যান্ডের মাতিউস মোরাভিয়েস্কি এর আগে এ সফরের ঘোষণা দিয়ে বলেন, এ সফরের উদ্দেশ্য হলো ইউক্রেন ও ইউক্রেনীয়দের প্রতি আমাদের সমর্থনকে বিস্তৃত আকারে তুলে ধরা। খবর বিবিসির।
প্রধানমন্ত্রী পেত্র ফিয়ালা জেলেনস্কিকে উদ্দেশ্য করে বলেন, আপনি আপনার জীবন এবং স্বাধীনতার জন্য লড়াই করছেন। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে আমরা জানি, আপনি আমাদের সকলের জীবন এবং স্বাধীনতার জন্যও লড়াই করছেন।
এরপর ইউক্রেনের জনগণকে আশ্বস্ত করে তিনি বলেন, আমরা সবসময় আপনাদের সাহসের প্রশংসা করি। আপনাদের প্রতি আমাদের সমর্থন অব্যাহত থাকবে সর্বদা। ইউরোপ সবসময় ইউক্রেনের মানুষের পাশে থাকবে। আমরা আপনাদের জন্য আরও বেশি সহায়তা ও সমর্থন জুগিয়ে যাব।
স্লোভেনিয়ান প্রধানমন্ত্রী জেনেজ জানসা বলেন, আপনারা (ইউক্রেনের জনগন) কখনই একা নন। আপনাদের লড়াই মানেই আমাদের লড়াই এবং আমরা একসঙ্গেই বিজয়ী হবো।
এসময় তারা ইউক্রেনের জনগণকে উজ্জীবিত করতে দেশটির জাতীয় স্লোগান উচ্চারণ করে বলে ওঠেন, ‘গ্লোরি টু ইউক্রেন’। ইউক্রেন প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি এই সফরের জন্য তিন দেশের প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদও জানিয়েছেন।
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টের অফিস থেকেও ইউরোপের তিন দেশের প্রধানমন্ত্রীর সফরের কথা নিশ্চিত করা হয়। তিন সপ্তাহ আগে ইউক্রেনে রুশ সামরিক হামলা শুরুর পর এই প্রথম কোনো বিদেশি নেতা দেশটিতে সফর করছেন।
তারা এমন সময় সফর করছেন, যখন কিয়েভের শহরতলীতে গত কয়েকদিন ধরে রুশ সেনাদের সঙ্গে ইউক্রেনীয় সেনাদের তীব্র লড়াই চলছে।
ইউরোপীয় ইউনিয়নের নেতাদের তিন প্রতিনিধির এমন সাহসের প্রশংসা করেছে ইউক্রেন। পোল্যান্ড থেকে কিয়েভ পর্যন্ত দীর্ঘ পথ রেলযোগে পাড়ি দিতে তিন প্রধানমন্ত্রী বড় ধরনের ঝুঁকি নিয়েছেন। ইউরোপীয় ইউনিয়ন সম্ভাব্য নিরাপত্তা ঝুঁকি সম্পর্কে সতর্ক করার পরও পিছিয়ে যাননি এই তিন প্রধানমন্ত্রী।
পোল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী বলেন, কিয়েভেই ইতিহাস তৈরি হচ্ছে। এক টুইটে তিনি জানান, এখানেই স্বাধীনতা অত্যাচারের বিরুদ্ধে লড়াই করে। এখানেই আমাদের সবার ভবিষ্যৎ ঝুলে আছে। ইউক্রেন এখনও তার বন্ধুদের ওপর নির্ভর করতে পারে- এমন বার্তা পৌঁছে দিচ্ছেন তারা।
Leave a Reply