পুলিশের কাছে গেলে ন্যায়বিচার পাবে— মানুষের এই আত্মবিশ্বাসটা সবসময় যেন থাকে সেই অনুযায়ী কাজ করতে বলেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, পুলিশ জনগণের সেবক হবে। জনগণের আস্থা ও বিশ্বাস অর্জন করবে। পুলিশের কাছে গেলে ন্যায়বিচার পাবে বা একটা ন্যায্যতা পাবে— এই আত্মবিশ্বাসটা যেন মানুষের মধ্যে সবসময় থাকে। পুলিশকে সেই সেবাই দিয়ে যেতে হবে।
রোববার (১০ এপ্রিল) জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে বাংলাদেশ পুলিশের উদ্যোগে ‘দেশের ৬৫৯টি থানায় নারী, শিশু, বয়স্ক ও প্রতিবন্ধীদের সেবায় স্থাপিত সার্ভিস ডেস্কের উদ্বোধন এবং গৃহহীনদের জন্য নির্মিত গৃহ হস্তান্তর’ অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন তিনি। রাজারবাগের ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ লাইন্সে অনুষ্ঠিত এ অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী তার সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হন।
শেখ হাসিনা বলেন, যেকোনো বাহিনী ও ব্যক্তির জীবনে সফলতা তখনই আসে, যখন তার ওপর অর্পিত দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করে মানুষের আস্থা, বিশ্বাস ও ভালোবাসাটা অর্জন করতে পারবে। বাংলাদেশে পুলিশ যাতে মানুষের আস্থা অর্জন করতে পারে, এটাই আমরা চাই।
নারী, শিশু, বয়স্ক ও প্রতিবন্ধীদের সেবায় স্থাপিত পুলিশের সার্ভিস ডেস্কের প্রশংসা করেন প্রধানমন্ত্রী। বলেন, আমাদের নারী সমাজ, শিশু বা বয়স্করা, তাদের বিরুদ্ধে অন্যায় হলে বলতে পারে না। নারীদের ব্যাপারে তো এটা আরও বেশি। তাদের পক্ষে অন্যায়ের প্রতিকার চাওয়ার সুযোগটা আপনারা করে দিয়েছেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা সমাজটাকে উন্নত করতে চাই। পিছিয়ে পড়া, অনগ্রসর, তৃণমূল পর্যায়ে পড়ে থাকে বা যারা বিভিন্ন ক্ষেত্রে নিজেদের অবাঞ্ছিত মনে করে, শত নির্যাতনের মুখেও প্রতিকার চাইতে পারে না, সেই মানুষগুলোর মধ্যে আস্থা-বিশ্বাস ফিরিয়ে আনতে চাই। নাগরিক অধিকার রয়েছে, সেটা নিশ্চিত করা এবং তাদের সহযোগিতা করতে চাই।
সেবাপ্রার্থীদের আইনগত সহায়তা করতে পুলিশের প্রতি অনুরোধ জানান প্রধানমন্ত্রী।
তৃণমূল পর্যায় পর্যন্ত সরকারের উন্নয়নের পদক্ষেপের কথা তুলে ধরেন সরকার প্রধান। বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার গঠনের পর থেকে উন্নয়নটা তৃণমূল থেকেই শুরু করেছি। শুধুমাত্র রাজধানী কিংবা শহরভিত্তিক নয়, সর্বস্তরের মানুষ যেন উন্নয়নের ছোঁয়াটা পায়, সেটা লক্ষ্য রেখে সরকার কাজ করে যাচ্ছে।
তিনি বলেন, যার শুভ ফল সারা দেশে ছড়িয়ে যাবে। উন্নয়নটা গতিশীল হবে। মানুষের যখন থাকার জায়গা হয়, তখন তার কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা হয়। এতে মানুষের ভেতরে আত্মবিশ্বাস ও আস্থা সৃষ্টি হয়। সেটা তাকে সুযোগ করে দেয় নিজের পায়ে দাঁড়ানোর, আত্মকর্মসংস্থান করার।
পুলিশকে প্রযুক্তিগতভাবে যুগোপযোগী করতে সরকারের উদ্যোগের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ডিজিটাল বাংলাদেশের প্রতিটি ইউনিয়ন পর্যায় পর্যন্ত ব্রডব্যান্ড পৌঁছে যাচ্ছে। কাজেই এখন যোগাযোগের সুযোগ অনেক বেশি। তাই যেকোনো জায়গায় বসে মানুষের দুঃখ, দুর্দশা জানা বা কোনো নির্যাতন করলে তার প্রতিকার করার সুযোগ আছে।
পুলিশের ৯৯৯ সেবার কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, কোনো দুর্গত এলাকায় কেউ পথ হারিয়ে ফেললে, তাকেও পুলিশ উদ্ধার করে নিয়ে আসছে। করোনাকালে পুলিশের কর্মকাণ্ডের প্রশংসা করেন সরকার প্রধান।
শেখ হাসিনা বলেন, জাতির পিতা আমাদের স্বাধীনতা দিয়ে গেছেন, তা সমুন্নত করে মানুষের সেবা দেওয়াটাই দায়িত্ব।
প্রশিক্ষণে গুরুত্ব দিয়ে তিনি বলেন, যারা পুলিশের হেল্প ডেস্কে কাজ করেন তাদের শুধু দেশে না, বিদেশেও প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করে দেব। তারা যেন বিদেশ থেকেও প্রশিক্ষণ নিয়ে আসতে পারে। কারণ কোন দেশে, কীভাবে… এটাতে মানবিক দিক ও মনস্তাত্ত্বিক বিষয় রয়েছে। সেই বিষয়ে অভিজ্ঞতা সঞ্চয়ের প্রয়োজন রয়েছে। তাই এখানে কাউকে বিদেশে পাঠিয়েও যদি ট্রেনিং করিয়ে আনতে হয়, সেটা করাবো এবং তারা অন্যদের ট্রেনিং করাবেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, সুপ্রশিক্ষিত একটা বাহিনী, যে বাহিনী মানুষের পাশে থাকবে। মানুষের কল্যাণ ও কাজ করবে। সেটাই আমরা চাই। সেইভাবে আমরা গড়ে তুলব।
পুলিশকে জনগণের পুলিশ হতে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের উদ্ধৃতি তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, আমি মনে করি হেল্প ডেস্ক নির্মাণের মাধ্যমে নারী, বয়স্ক, শিশু ও প্রতিবন্ধীদের সেবা দান করা এবং গৃহহীনদের গৃহ দেওয়া, এটা জনগণের পুলিশেরই কাজ। আজকের পুলিশ জনগণের পুলিশ হিসেবেই মানুষের আস্থা ও বিশ্বাস অর্জন করেছে।
বাংলা নববর্ষ ও ঈদের আগাম শুভেচ্ছা জানান প্রধানমন্ত্রী। বলেন, আপনারা জনগণের পাশে দাঁড়িয়েছেন। জনগণের পাশে থাকবেন। জনগণের কল্যাণে কাজ করে যাবেন। সেটাই আমাদের লক্ষ্য। সেই লক্ষ্যেই আওয়ামী লীগ সরকারে আসার পর পুলিশ বাহিনীর জন্য যত রকমের সুযোগ সুবিধা করা এবং বিশেষায়িত বাহিনী গড়ে তুলছি। এর মাধ্যমে সেবাটা মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছে নেওয়ার চেষ্টা করছি।
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব মো. আখতার হোসেন, পুলিশের মহাপরিদর্শক বেনজীর আহমেদ প্রমুখ।
<p>সম্পাদক: মো:রোকন উদ্দিন রুমন </p><p>লেখক: আবদুল্লাহ যায়েদ তানজিন </p><p>উপদেষ্টা: মো: মোশাররফ হোসেন </p><p>thedailypadma@gmail.com<br></p><p> বার্তা কার্যালয়: দক্ষিন কমলাপুর,ফরিদপুর সদর, ফরিদপুর। </p><p>মোবাইল:০১৭১১১৪৮৯৫১, ০১৯১১৩০৩২২৯ ইমেইল: thepadma24@gmail.com<br></p>
© স্বর্বস্বত্ব সংরক্ষিত। এই ওয়েবসাইটের লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।