1. admin@thedailypadma.com : admin :
অঞ্চল ভিত্তিক যথাযথ উন্নয়ন পরিকল্পনা গ্রহণের নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর - দ্য ডেইলি পদ্মা
বুধবার, ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৪:৩৪ অপরাহ্ন

অঞ্চল ভিত্তিক যথাযথ উন্নয়ন পরিকল্পনা গ্রহণের নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর

  • Update Time : রবিবার, ২২ মে, ২০২২
  • ১৮২ Time View

ডেল্টা প্ল্যানের মাধ্যমেই পরিবেশ রক্ষা করতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। রোববার (২২ মে) প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে ডেল্টা গভর্ন্যান্স কাউন্সিলের প্রথম সভায় কাউন্সিলের সভাপতির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

শেখ হাসিনা বলেন, যত্রতত্র অবকাঠামো তৈরি করা যাবে না। সমুদ্রের বিশাল জলরাশিকে কাজে লাগাতে হবে দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে। দেশ নিয়ে কাজ করতে হলে সংশ্লিষ্টদের ভালোভাবে আগে দেশটাকে চিনতে হবে।

তিনি বলেন, অবৈধভাবে সংবিধান লঙ্ঘন করে যারা ক্ষমতা দখল করেছে তারা মানুষের জন্য কোনো কাজই করেনি। জাতির পিতা মানুষের জীবন রক্ষায় উল্লেখযোগ্য সংখ্যক স্বেচ্ছাসেবীও তৈরি করে গেছেন। পরিকল্পতিভাবে পদক্ষেপ নিতে পারলে যে কোনো কঠিন কাজও সমাধান করা যায়।

সরকার প্রধান বলেন, ২০২১ থেকে ২০৪১ প্রেক্ষিত পরিকল্পানার পাশাপাশি ২১০০ সাল পর্যন্ত ডেল্টা প্ল্যানও নিয়েছি। জলবায়ু পরিবর্তনে আমাদের কোনো দায় না থাকলেও উন্নত দেশের সৃষ্ট এ সংকটে ক্ষতিগ্রস্তের তালিকায় বেশ ভালোভাবেই আছে বাংলাদেশ।

তিনি বলেন, সমুদ্রের বিশাল জলরাশিকে দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে কাজে লাগাতে হবে। যত্রতত্র যেন অবকাঠামো গড়ে না ওঠে। পানির গতিপথ কোনো অবস্থাতেই বন্ধ করা যাবে না।

ব-দ্বীপকে রক্ষা করে ভবিষ্যত প্রজন্মের জন্য উন্নত জীবন নিশ্চিত করাই সরকারের লক্ষ্য বলেও জানান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশকে চিনতে হবে, জানতে হবে। বাংলাদেশের কিন্তু একেক এলাকা একেক রকম, সেটাও মাথায় রাখতে হবে। সেটা মাথায় রেখেই আপনাদের কাজ করতে হবে।

বাংলাদেশের ভৌগলিক বৈচিত্রের কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, পদ্মা সেতু যখন হয় আমি কিন্তু সেতুকে ছোট হতে দেইনি। নদী যতটা ওই জায়গায় চওড়া সেটা মাথায় রেখে তারপর বাফার জোন রেখেই কিন্তু আমরা সেতু করেছি। সেজন্য সেতু সবচেয়ে দীর্ঘ হয়েছে। যমুনা সেতু (বঙ্গবন্ধু সেতু) কিন্তু এটাকে চার কিলোমিটারে কমিয়ে আনা হয়। আমি মনে করি এটা ছিল ভুল সিদ্ধান্ত। কিন্তু ডিজাইন প্ল্যান আগেই হয়ে গিয়েছিল যেটা আমাদের বেশি কিছু করার ছিল না। আমি শুধু রেললাইনটা সংযোজন করতে পেরেছিলাম।

শেখ হাসিনা বলেন, আমি মনে করি যে, ডেল্টা গভর্ন্যান্স কাউন্সিলের সভা থেকে একটা ভালো, যেসব এজেন্ডাগুলো আছে তার বিষয়ে ভালো একটা সুপারিশমালা যাবে, পরিকল্পনা বাস্তবায়নটা কীভাবে আমরা করতে পারি সেটা ত্বরান্বিত হবে এবং বাস্তবমুখী পদক্ষেপ কীভাবে নেব সেটাও আমাদের চিন্তা করতে হবে। সেভাবে আমাদের এগোতে হবে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ডেল্টা প্ল্যান যদি আমরা ভালোভাবে একটা গাইডলাইন তৈরি করে প্ল্যান ভালোভাবে বাস্তবায়ন করতে পারি, আর যেহেতু এটা ২১০০ সাল পর্যন্ত, তাই সময়ের সঙ্গে এটা পরিবর্তন, পরিবর্ধন, সংশোধন করতে হবে। সেভাবেই কিন্তু আমাদের সব প্ল্যান হাতে নিতে হবে, নিয়ে আমরা কাজ করতে পারব।

তিনি বলেন, আমাদের এই অঞ্চলের মানুষের আর্থ-সামাজিক উন্নতি করা সবচেয়ে বড় কথা। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। সেটা মাথায় রেখে আমরা কাজ করব।

শেখ হাসিনা বলেন, আমি মনে করি আমাদের ডেল্টা প্ল্যানের সঙ্গে আজকের যে বিশাল সমুদ্র রাশি আমরা পেয়েছি এই সম্পদটা আমাদের অর্থনৈতিক কার্যক্রমে কাজে লাগাতে হবে। এক্ষেত্রে আমরা ব্লু ইকোনোমি ঘোষণা দিয়েছি। অর্থাৎ সুনীল অর্থনীতি, সমুদ্র সম্পদকে আমাদের দেশের উন্নয়নে কাজে লাগানো। কিছু কিছু কাজ কিন্তু শুরু হয়েছে খুব সীমিত আকারে।

সমুদ্র সম্পদ কাজে লাগাতে একটি পরিকল্পনা গ্রহণের নির্দেশনা দিয়ে সরকারপ্রধান বলেন, সমুদ্র সম্পদ নিয়ে আমাদের একটা পরিকল্পনা থাকা উচিত। সেখানে আমরা কতটুকু কি কি করতে পারি। সেখানে আমরা তেল-গ্যাস উত্তোলন অর্থাৎ সামুদ্রিক যে সম্পদ যেগুলো আমাদের দৈনন্দিন জীবনে কাজে লাগে, খাদ্য নিরাপত্তায় কাজে লাগতে পারে বিভিন্ন ভাবে, বিশাল মৎস্য ভান্ডার এখানে।

তিনি বলেন, এই সম্পদ আমরা হেলায় হারাতে পারি না। এটা অর্থনৈতিক অঙ্গণে কীভাবে কাজে লাগাব এটা আমাদের দেখা দরকার।

শেখ হাসিনা বলেন, আরেকটি বিষয় হলো বঙ্গোপসাগরের সবচেয়ে গুরুত্বটা হলো যে আদিকাল থেকে এই বঙ্গোপসাগর দিয়ে সারা বিশ্বের ব্যবসা বাণিজ্য চলে। দুই পাশে দুইটা মহাসাগর। এই মহাসাগর থেকে আরেকটাতে যেতে গেলে এই বঙ্গোপসাগরের ওপর দিয়েই কিন্তু চলাচল হয়। সেদিক থেকে বঙ্গোপসাগরের গুরুত্ব কিন্তু অনেক বেশি। কাজেই এ রকম একটা গুরুত্বপূর্ণ সম্পদ আমরা কীভাবে আমাদের অর্থনৈতিক কাজে ব্যবহার করতে পারি সেটাও আমাদের চিন্তা করতে হবে।

মৎস্য সম্পদ, খনিজ সম্পদসহ সমুদ্র গবেষণা বাড়ানোর নির্দেশনা দেন শেখ হাসিনা।

বঙ্গোপসাগরকে দূষণমুক্ত রাখার নির্দেশনা দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এখন দূষণ তো সব দেশেই। সাউথ সিতে এমন অবস্থা যে সেখানে পানি পাওয়া যায় না। শুধু তেলের ফ্যানা, আমি নিজে সেখানে গিয়ে দেখে এসেছি। হাতে তুলেও নিয়েছিলাম। নেদারল্যান্ডসে থাকতে আমি

গিয়েছিলাম। কাজেই আমাদের উপমহাদেশে যেন, আমাদের বঙ্গোপসাগরটা যেন সেরকম দূষণ না হয় সেদিকে আমাদের দৃষ্টি দিতে হবে। এটা যেমন পল্যুশনমুক্ত রাখতে হবে। পাশাপাশি এই সম্পদটা আমরা কীভাবে কাজে লাগাব সেটাও আমাদের চিন্তা করতে হবে।

দেশের নদীগুলোকে দূষণ থেকে রক্ষা করার নির্দেশ দেন সরকারপ্রধান। যত্রতত্র শিল্প কারখানা যেন না হয় সেজন্য সরকার পদক্ষেপ নিয়েছে জানান তিনি। এক্ষেত্রে ১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠার কথা উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী।

নদী-খালগুলো সচল রাখার ওপর গুরুত্বারোপ করে শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের এটা মাথায় রাখতে হবে আমাদের নদীমাতৃক বাংলাদেশ। নদীগুলো হচ্ছে একটা মানুষের শরীরে যেমন শিরা-উপশিরা, ঠিক নদীগুলোও আমাদের দেশের জন্য শিরা-উপশিরা।

আগে এ অঞ্চলের নদীগুলো সচল রাখতে নিয়মিত ড্রেজিং হতো জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ছোট বেলায় বাবার কাছে গল্প শুনতাম আমাদের দেশে আগে নিয়মিত ড্রেজিং হত। ড্রেজারগুলো থাকত আসামে। সেগুলো নেমে নিচে চলে আসত এবং নদী কেটে সেগুলো আবার সেখানে থাকত। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় সেই ড্রেজারগুলো গানবোট হিসেবে ব্যবহার শুরু হয়। তারপর থেকে আর কোনো নদী ড্রেজিং হয়নি।

নদীর নাব্যতা ধরে রাখার নির্দেশনা দিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, প্রথমে ক্যাপিটাল ড্রেজিং করে সেগুলোর নাব্যতা বাড়ানো উচিত। পাশাপাশি প্রতিবছর সেগুলো রক্ষা করার জন্য ড্রেজিং এবং নদীগুলো যেন মরে না যায় সে ব্যবস্থা নেওয়া। ব-দ্বীপকে রক্ষা করা এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য একটা উন্নত জীবন দেওয়া আমাদের জন্য সবচেয়ে বেশি দরকার।

ডেল্টা প্ল্যান প্রসঙ্গে টানা তিনবারের প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের ডেল্টা প্ল্যান করার লক্ষ্য হলো- ভবিষ্যৎ করণীয় সেটা আমরা সুনির্দিষ্ট করে ফেলেছি। কাজেই ২০২০ এর মধ্যে আমাদের রূপকল্প বাস্তবায়ন করে ২১ সালে এসে সুবর্ণজয়ন্তী আমরা পালন করেছি। পরিকল্পনা আরেকটা নিয়েছি ২১ থেকে ৪১ পর্যন্ত আমাদের প্রেক্ষিত পরিকল্পনা। প্রেক্ষিত পরিকল্পনা হচ্ছে এটা একটা কাঠামো। এই কাঠামোর ওপর ভিত্তি করেই আমাদের পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা। তারই পাশাপাশি, আমরা এখানে বসে থাকিনি। ২১০০ সালের বাংলাদেশ সেটা মাথায় রেখে এই যে আমাদের ডেল্টা প্ল্যান।

শেখ হাসিনা বলেন, ব-দ্বীপ অঞ্চলের মানুষকে সুরক্ষিত করা এবং এদেশের মানুষকে সুন্দর জীবন দেওয়া, উন্নত জীবন দেওয়া। যেহেতু আমাদের নদীমাতৃক দেশ নদীগুলোর নাব্যতা ফিরিয়ে আনা। তাতে আমাদের পণ্য পরিবহন এবং দুযোর্গ মোকাবিলা সব দিকেই সুবিধা হবে। পাশাপাশি ক্ষতিগ্রস্ত মানুষ সেগুলো আমরা হাতে নিয়েছি।

জলবায়ু পরিবর্তনে বাংলাদেশের ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনে বাংলাদেশের কোনো দায়-দায়িত্ব নেই। কারণ আমরা জলবায়ু পরিবর্তনে, প্রকৃতির কোনোন ক্ষতি আমরা হতে দেই না। কিন্তু উন্নত দেশগুলো ক্ষতি করছে তার প্রভাবে জলবায়ুর ক্ষতি হচ্ছে। কিন্তু এর আঘাতটা বাংলাদেশের ওপর আসবে।

অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন কৃষি মন্ত্রী মো. আব্দুর রাজ্জাক, খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার, ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক মন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন, প্রধানমন্ত্রীর বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিষয়ক উপদেষ্টা ড. তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী, নৌ-পরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহ্মুদ চৌধুরী, পানি সম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক, প্রধানমন্ত্রীর এসডিজি বিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক জুয়েনা আজিজ, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সিনিয়র সচিব মো. তোফাজ্জল হোসেন মিয়া।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
স্বপ্নপূরণের ক্ষণগণনা
অপেক্ষা উদ্বোধনের
দিন
ঘন্টা
মিনিট
সেকেন্ড
© স্বর্বস্বত্ব সংরক্ষিত। এই ওয়েবসাইটের লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Theme Customized By BreakingNews