পদ্মা সেতু উদ্বোধনের আগেই পদ্মা নদীর পাড়বাসীরা নতুন সুখবর পাচ্ছেন। তাদের দীর্ঘদিনের দাবি নতুন বিভাগের কার্যক্রম চূড়ান্ত হয়েছে। ‘পদ্মা’ নামে বৃহত্তর ফরিদপুরের পাঁচটি জেলা নিয়ে নতুন বিভাগ হচ্ছে। অন্যদিকে কুমিল্লা ও নোয়াখালী দুই জেলার তিনটি করে মোট ছয়টি জেলা নিয়ে ‘মেঘনা’ বিভাগ হচ্ছে। আগামীকাল বৃহস্পতিবার সকাল ১০টায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে তার কার্যালয়ে প্রশাসনিক পুনর্বিন্যাস সংক্রান্ত জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটির (নিকার) বৈঠকের তারিখ নির্ধারিত হয়েছে। এর মাধ্যমে দেশে বিভাগের সংখ্যা দাঁড়াবে ১০টিতে। এর আগের সব বিভাগের নাম স্থানীয় শহরের নামে হলেও এবার প্রথমবারের মতো দুই নদীর নামে দুটি বিভাগ হতে যাচ্ছে। সরকারের উচ্চ পর্যায়ের একাধিক সূত্র যুগান্তরকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
দায়িত্বশীল সূত্রগুলো জানায়, বৃহস্পতিবারের বৈঠকে নতুন একটি পৌরসভা ও আরেকটি পৌরসভার সীমানা নির্ধারণসহ মোট ছয়টি এজেন্ডা উপস্থাপনের প্রস্তুতি চূড়ান্ত হয়েছে। তবে অন্য এজেন্ডাগুলোর বিস্তারিত জানা যায়নি। ঢাকা বিভাগ ভেঙে প্রস্তাবিত বৃহত্তর ফরিদপুরের পাঁচ জেলা ফরিদপুর, শরীয়তপুর, রাজবাড়ী, গোপালগঞ্জ ও মাদারীপুর নিয়ে পদ্মা নদীর নাম অনুযায়ী পদ্মা বিভাগ হচ্ছে। এ বিভাগ প্রতিষ্ঠার সঙ্গে যুক্ত আন্দোলনকারীরা ফরিদপুরের নামেই বিভাগের নামকরণের জোর দাবি জানিয়েছিলেন। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আর কোনো বিভাগের নাম সংশ্লিষ্ট জেলার নামে হবে না বলে এর আগে একাধিক বৈঠকে বলেছিলেন। তার সেই কথার বাস্তবায়নই হতে যাচ্ছে। বৃহত্তর কুমিল্লা ও বৃহত্তর নোয়াখালীর ছয়টি জেলায় প্রায় দুই কোটি মানুষের বসবাস।
এদিকে বিভাগ গঠন নিয়ে কুমিল্লা ও নোয়াখালীর বাসিন্দাদের মধ্যে ব্যাপক প্রতিযোগিতা থাকলেও কোনো জেলাই প্রাধান্য পাচ্ছে না। বৃহত্তর কুমিল্লার তিনটি কুমিল্লা, ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও চাঁদপুর এবং বৃহত্তর নোয়াখালীর তিন জেলা নোয়াখালী, ফেনী ও লক্ষ্মীপুর থাকছে ‘মেঘনা’ বিভাগে। ঢাকা ও চট্টগ্রামের ওপর চাপ কমানো ও প্রশাসনিক বিকেন্দ্রীকরণের লক্ষ্যে প্রায় এক দশক আগেই সরকার দুটি বিভাগ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। এরপর বিভিন্ন সময় বিভাগ সম্পর্কিত বিষয় আলোচনায় এলে সংশ্লিষ্ট জেলাগুলোর নেতাদের প্রতিযোগিতার কারণে সিদ্ধান্ত নিতে সময় নিয়েছে সরকার।
ফরিদপুর নাগরিক মঞ্চের সক্রিয় কর্মী ও সাবেক অধ্যক্ষ আলতাফ যুগান্তরকে বলেন, ফরিদপুরকেন্দ্রিক বিভাগের দাবি অনেক দিনের। এই সিদ্ধান্তটি বাস্তবায়নের অপেক্ষায় ফরিদপুরবাসী অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে। তিনি বলেন, বিভাগ প্রতিষ্ঠিত হলে পর্যায়ক্রমে সিটি করপোরেশন হবে। শহরের ভৌত অবকাঠামোগত অনেক উন্নয়ন হবে। এই এলাকার মানুষকে আর কষ্ট করে ঢাকায় যেতে হবে না। সব মিলিয়ে এটা আমাদের জন্য বিরাট এক সুখবর।
Leave a Reply