তীব্র গরমে পুড়ছে দক্ষিণপূর্ব পাকিস্তানের চোলিস্তান। ওই অঞ্চলের তাপমাত্রা ৫০ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছাড়িয়ে গেছে।
প্রচণ্ড গরমের সঙ্গে তৈরি হয়েছে তীব্র পানি সঙ্কট। পানির অভাবে বহু গরু ছাগল আর ভেড়ার মৃত্যু হয়েছে এরই মধ্যে।
গেল এক বছরের বেশি সময় ওই এলাকায় বৃষ্টি হয়নি। এরসঙ্গে আরও যুক্ত হয়েছে তীব্র দাবদাহ; যা শুরু হয়েছে স্বাভাবিক সময়ের আগেই।
চোলিস্তানেস যে সম্প্রদায়ের মানুষের বাস, তাদের শত শত গবাদি পশু রয়েছে। গ্রীষ্মের শুরুতেই পারদ ৫০ ডিগ্রির ওপরে, তাই তারা কঠিন গ্রীষ্মের আশঙ্কা করছেন। এত তীব্র গরম তারা বহু বছর দেখেননি।
চোলিস্তান এমন অঞ্চল রয়েছে যেখানে একসময় পানি ছিল কিন্তু এখন মাটি একেবারে শুকনো। গবাদি পশুর খাবারের জন্য মাঠে কোনো ঘাসপাতা নেই।
চোলিস্তানের কলারওয়ালের বাসিন্দা আবদুস সাত্তার তার একটি গরু দেখিয়ে বলেন, ‘এই গরুটা অন্য গরুগুলোর সাথে চরতে গিয়েছিল। প্রচণ্ড গরমে সারা দিন এক ফোঁটা পানিও পেটে পড়েনি। ফলে গরুটা নেতিয়ে পড়েছে। এটাকে বাঁচানো যাবে না।
তিনি বলেন, ওরা শীতের সময় পানি ছাড়া লম্বা পথ চলতে পারে, কিন্তু এই গরমে সেটা পারে না।
চোলিস্তানের মানুষ জীবিকার জন্য গবাদি পশুর ওপর নির্ভরশীল। গরু-ছাগল হারানো তাদের জন্য বিশাল একটা ক্ষতি।
মাটির নিচ থেকে পানি তুলতে কৃষকরা নিজেদের অর্থ ব্যয়ও করছেন। কিন্তু কাজ হয়নি। ওখানে পানি লবণাক্ত, পশুরা ওই পানি খেতে পারে না।
চোলিস্তানের মানুষ নিজের জন্য পানি যোগাড় করতেও হিমশিম খাচ্ছে।
চোলিস্তান থেকে দেড়শ কিলোমিটার দূরে পাকিস্তান-ভারত সীমান্তে অবস্থা আরও খারাপ। নাওয়ানখু নামে সেখানকার গ্রামে মানুষ আছে কম।
ওই গ্রামের বাসিন্দা মুহাম্মদ সিদ্দিক বলেন, ১৫ দিনে ৭০ এর ওপর গরু-ছাগল মারা গেছে। তাপমাত্রা খুবই বেশি। তাপে আক্রান্ত হলে প্রাণীরা বিশাল হাঁ করে জোরে জোরে শ্বাস নেয়।
মূলত কয়েক মাস আগেই ওই অঞ্চলের বাসিন্দারা টের পান ভূপৃষ্ঠের পানির মজুত শুকিয়ে যাচ্ছে। এরপর মাটির নিচের পানির ট্যাংকগুলোও শুকিয়ে যায়।
চোলিস্তান উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের ব্যবস্থাপনা পরিচালক খালিদ আহমেদ বলেন, সাম্প্রতিক এই দাবদাহ খুব তাড়াতাড়ি এসেছে। মে’র প্রথম সপ্তাহেই প্রচণ্ড গরম পড়েছে। এর আগের বছরগুলোতে এমন গরম পড়ত জুনের গোড়ায়। চোলিস্তানের মানুষ সময় থাকতে তাদের গবাদি পশু সরিয়ে নিত। এবার তারা এই দাবদাহের জন্য তৈরি না থাকায় সঙ্কট দেখা দিয়েছে।
১৫ বছর আগে চোলিস্তানে পানি নিতে পাইপলাইন প্রকল্প শুরু করা হয়। কিন্তু সে কাজ এখনও শেষ হয়নি। বৃষ্টিপাতের অভাবে আর তাপমাত্রা বৃদ্ধি আগামী বছরগুলোতেও যদি চলে মানুষ আর গবাদি পশু চোলিস্তানে টিকে থাকা কঠিন হয়ে উঠবে।
সেটা যদি হয় সরকারকে বিশাল অভিবাসী সঙ্কট মোকাবিলা করতে হবে।
সূত্র : বিবিসি।
<p>সম্পাদক: মো:রোকন উদ্দিন রুমন </p><p>লেখক: আবদুল্লাহ যায়েদ তানজিন </p><p>উপদেষ্টা: মো: মোশাররফ হোসেন </p><p>thedailypadma@gmail.com<br></p><p> বার্তা কার্যালয়: দক্ষিন কমলাপুর,ফরিদপুর সদর, ফরিদপুর। </p><p>মোবাইল:০১৭১১১৪৮৯৫১, ০১৯১১৩০৩২২৯ ইমেইল: thepadma24@gmail.com<br></p>
© স্বর্বস্বত্ব সংরক্ষিত। এই ওয়েবসাইটের লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।