1. admin@thedailypadma.com : admin :
পদ্মা সেতু থেকে বছরে ভ্যাট আসবে ২শ’ কোটি টাকা - দ্য ডেইলি পদ্মা
বৃহস্পতিবার, ০৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৬:৫০ অপরাহ্ন

পদ্মা সেতু থেকে বছরে ভ্যাট আসবে ২শ’ কোটি টাকা

  • Update Time : রবিবার, ৩ জুলাই, ২০২২
  • ১৫৫ Time View
পদ্মা সেতু চালুর ফলে শুধু অর্থনীতি বা মানুষের যাতায়াতের সুবিধা হবে তা নয়, দেশের রাজস্ব আহরণেও ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে। এই সেতু থেকে আয়কর এবং মূল্য সংযোজন কর বা ভ্যাট উভয়ই আদায় হবে।
যান চলাচল শুরুর দিন থেকেই সরকারি কোষাগারে ভ্যাট জমা শুরু হলেও আয়কর হচ্ছে না। কারণ, পদ্মা সেতু লাভে আসতে আরও কয়েক বছর সময় লাগবে। আর লাভ বা মুনাফার ওপরই আয়কর দেয়া হয়।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) ও অর্থমন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে।
পদ্মা সেতু থেকে কত আয় হবে, তা কোথায় ব্যয় হবে, ব্যয়ের খাতগুলো কী– এ সব বিষয় যাচাইয়ের পর তার উপর ভিত্তি করে অর্থমন্ত্রণালয়ের সঙ্গে ঋণচুক্তি সই করে সেতু কর্তৃপক্ষ। ২০১৯ সালের শেষের দিকে এ চুক্তি সই হয়।
চুক্তি অনুযায়ী, ৩৫ বছরে ঋণের টাকা ১ শতাংশ হারে সুদসমেত ফেরত দিতে হবে। এ জন্য তিন মাস পর পর কিস্তি পরিশোধ করতে হবে। সব মিলিয়ে ১৪০ কিস্তিতে ঋণের টাকা (সুদ ও আসলে) পরিশোধ করা হবে।
পদ্মা সেতু নিজস্ব অর্থায়নে নির্মাণ করা হয়েছে। তবে এই টাকা স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষকে ঋণ হিসেবে দিয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়। সেতু কর্তৃপক্ষ টোল বাবদ যা আয় করবে, তা থেকে ঋণের কিস্তিসহ অন্যান্য খরচ বহন করবে।
এনবিআর সূত্রে জানা গেছে, সেতুতে যানবাহন চলাচলের উপর টোল নির্ধারণ করে দেয় সরকার। ভ্যাট আইনে টোল সেবাখাত হিসেবে বিবেচনা করা হয়। যে কারণে টোল আদায়ের উপর ভ্যাট প্রযোজ্য এবং বর্তমানে টোলের ওপর ১৫ শতাংশ ভ্যাট আরোপ আগে থেকেই আছে।
যেমন, পদ্ম সেতুর ওপর দিয়ে একটি বড় বাস পার হলে তার জন্য ২ হাজার ৪০০ টাকা টোল দিতে হয়। ফলে প্রযোজ্য হারে টোল আসে ৩৬০ টাকা।
সেতু কর্তৃপক্ষ এই টোল আদায় করে সরকারি কোষাগারে জমা দেয়। এই টোলই হচ্ছে সেতুর আয়, যা দিয়ে ঋণের কিস্তি, রক্ষণাবেক্ষণ, টোল আদায়কারী প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন দেয়া হবে। এসব বাদ দিয়ে টোল বাবদ যে নিট আয়, সেটাই হবে সেতুর মুনাফা।
এনবিআরের দায়িত্বশীল এক কর্মকর্তা নিউজবাংলাকে বলেন, পদ্ম সেতু থেকে যে ভ্যাট আদায় করা হচ্ছে, তা টোলের সঙ্গে যুক্ত (ইনক্লসিভ)। অর্থাৎ টোল নির্ধারণে যে সব বিষয় বিবেচনায় আনা হয়েছে, তার মধ্যে ভ্যাটও রয়েছে।
বিষয়টি পরিষ্কার করতে বলা যায়, বড় বাসের জন্য ২ হাজার ৪০০ টাকা যে টোল নির্ধারণ করা হয়েছে, তার মধ্যে ভ্যাটও অন্তর্ভূক্ত। কাজেই টোলের সঙ্গে ভ্যাটের টাকা আলাদা কাটার কোনো নিয়ম নেই।
বর্তমানে দুই ভাবে টোল থেকে ভ্যাট আহরণ করা হয়। একটি হচ্ছে সরাসরি আদায়। অন্যটি, ইজারাদার বা লিজের মাধ্যমে।
বড় সেতুর জন্য ঠিকাদার আর ছোট সেতুর ইজারাদারের মাধ্যমে ভ্যাট আদায় করা হয়। তবে উভয় ক্ষেত্রে ভ্যাটের হার ১৫ শতাংশ।
ছোট সেতুর ভ্যাট আদায়ের জন্য ইজারা দেয় সরকার। প্রতিযোগিতার মাধ্যমে যে প্রতিষ্ঠান কাজ পায় চুক্তি অনুযায়ী, তারা কার্যাদেশের মূল্যের সঙ্গে একবারে ভ্যাট দিয়ে দেয় সরকারকে।
এনবিআর সূত্র বলেছে, এখন বঙ্গবন্ধু (যমুনা) এবং পদ্মা সেতু থেকে ঠিকাদারের মাধ্যমে সরাসরি ভ্যাট আদায় করা হয়, যা নিয়ন্ত্রণ করে থাকে বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষ।
অপরদিকে, ছোট সেতু থেকে ইজারাদারের মাধ্যমে ভ্যাট আদায় হয়। সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় বা বিভাগ ওই সব সেতু দেখভাল করে থাকে।
সেতু কর্তৃপক্ষ যে সম্ভাব্যতা যাচাই করেছে তার পূর্ভাবাসে বলা হয়েছে, যানবাহন চলাচল করলে পদ্মা সেতু থেকে প্রথম বছর টোল বাবদ আদায় হবে ১ হাজার ৪৩০ কোটি টাকা। এ হিসাবে প্রথম বছরেই ভ্যাট আসবে ২১৪ কোটি টাকা
তবে এই টাকার সবই সেতুর নির্মাণ ও পরিচালনাকারী সংস্থা বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষের ঘরে যাবে না। ভ্যাট আদায়ের পাশাপাশি টোল আদায়কারীর পেছনে খরচ আছে। এরপর যা থাকবে, তা থেকে অর্থ মন্ত্রণালয়কে পরিশোধ করতে হবে ঋণের কিস্তি। এ সব ব্যয়ের পর টাকা থাকলে তা সেতু কর্তৃপক্ষের মুনাফা হিসেবে বিবেচিত হবে।
সেতু বিভাগের সমীক্ষা অনুযায়ী, চলতি বছর প্রতিদিন পদ্মা সেতু দিয়ে প্রায় ২৪ হাজার যানবাহন চলাচল করবে। ২০২৯ সালে তা হবে প্রায় ৩৫ হাজার। ২০৫০ সালে এই সেতু দিয়ে যানবাহন চলাচল করবে ৬৭ হাজার।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে চুক্তিতে বলা হয়েছে, সেতুর রক্ষণাবেক্ষণে টোল আয়ের সাড়ে ৭ শতাংশ ব্যয় হবে। এর মধ্যে টোল আদায়কারী প্রতিষ্ঠানের খরচও আছে। প্রতি ১০ বছর পরপর বড় ধরনের মেরামত প্রয়োজন হতে পারে।
আদায় করা টোলের ১৫ শতাংশ হারে ভ্যাট কাটা যাবে। অবচয় হবে মোট নির্মাণব্যয়ের ২ শতাংশ হারে। সব ব্যয় শেষে যে টাকা থাকবে, তা থেকে অর্থ মন্ত্রণালয়ের কিস্তি পরিশোধ করতে হবে।
আর কিস্তি পরিশোধের পর যে টাকা (মুনাফা) থাকবে, তার ওপর ২৫ শতাংশ হারে আয়কর দেবে সেতু বিভাগ।
সূত্র জানায়, সেতু চালুর পরের কয়েক বছর মুনাফা হবে না। ২০২৯ সালে গিয়ে কিস্তি পরিশোধের পর মুনাফার মুখ দেখতে পারে সেতু বিভাগ।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
স্বপ্নপূরণের ক্ষণগণনা
অপেক্ষা উদ্বোধনের
দিন
ঘন্টা
মিনিট
সেকেন্ড
© স্বর্বস্বত্ব সংরক্ষিত। এই ওয়েবসাইটের লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Theme Customized By BreakingNews