সুব্রত ববি; সিনিয়র করসপোন্ডেন্ট; এন টিভি: একটা ছেলে ঘরোয়া ক্রিকেটের সবচে প্রতিদ্বন্দিতা পূর্ন টুর্নামেন্ট ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে ৮১.২৮ গড়ে ১১৩৮ রান করে লিস্ট এ ক্রিকেটে বিশ্ব রেকর্ড গড়লেন। ১৫ ম্যাচের মধ্যে ৩টাতে সেঞ্চুরি আর ৯টাতেই ফিফটির ইনিংস। ওয়েস্টইন্ডিজ সফরে পূর্ণাঙ্গ সিরিজে তাকে শুধু ওয়ানডে দলে ডাকলেন নির্বাচকরা। উইন্ডিজে গিয়ে প্রথম টেস্টে ব্যাটারদের ব্য র্থতার পর হঠাত করেই তাকে দ্বিতীয় টেস্টে অন্তর্ভুক্ত করে খেলিয়ে দেয়া হলো।সেই টেস্টে ২৩ ও ৪ রান করলেন। এরপর টি-টুয়েন্টি সিরিজেও অন্তর্ভুক্ত করা হলো তাকে। তিন ম্যাচে ১৬,৩ ও ১০ রান-প্রত্যাশা মেটাতে পারলেন না। ম্যানেজমেন্ট বুঝে ফেললো তাকে দিয়ে চলবে না।আর তাই এই সফরের জন্য তাকে যে ফরমেটে নিয়েছিলেন নির্বাচকরা, সেই ওয়ানডে সিরিজের তিন ম্যাচের একটাতেও তাকে খেলালোই না টিম ম্যানেজমেন্ট। বুঝতে কারো বাকি থাকার কথা না হঠকারী এই সিদ্ধান্তের ট্রাজিক গল্পটা কোন ক্রিকেটারের ক্যারিবীয় সফর- মন খারাপের, বিষাদের গল্প হয়েই থাকলো এনামুল হক বিজয়ের।
যে ফরমেটের পারফরমেন্স দিয়ে প্রায় ৩ বছর পর আবার জাতীয় দলে ফিরেছিলেন, উইন্ডিজ থেকে সেই ওয়ানডে না খেলেই দেশে ফিরছেন বিজয়। প্রশ্নবিদ্ধ হলো ক্যাপ্টেন-কোচ ও ম্যানেজমেন্টের সিদ্ধান্ত।
দ্বিতীয় ওয়ানডে জিতে সিরিজ নিশ্চিতের পরই ক্যাপ্টেন স্কোয়াডের – ম্যাচ না পাওয়া ক্রিকেটারদের শেষ ম্যাচে খেলানোর যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, সেটার মিল পাওয়া গেলো না বিজয়কে না খেলানোতে।
সিরিজ নিশ্চিত হয়ে যাবার পর শেষ ম্যাচ এমন কি গুরুত্বপূর্ন ছিলো যে বিজয়কে সুযোগই দেয়া গেলো না?
ম্যাচ পূর্ববর্তী সংবাদ সম্মেলনে হেড কোচ রাসেল ডোমিঙ্গো বলেছিলেন বিজয় ডানহাতির জন্য তাকে একাদশে রাখার সুযোগ নেই এটা কেমন সিদ্ধান্ত সেটা তিনি আর তার টিম ম্যানেজমেন্টই ভালো জানেন।
অথচ শেষ ম্যাচ কেন পুরো ওয়ানডে সিরিজটাতেই বিজয়কে খেলানোর সুযোগ ছিলো টিম ম্যানেজমেন্টের সামনে বিজয় যখন ডিপিএলে রানের পর রান করছেন তখন এই অঙ্ক মেলানো কঠিন ছিলো তাকে জাতীয় দলে নেয়া হলে খেলানো হবে কোন পজিশনে। কারন লিটন ও তামিম ওপেনিংয়ে সেট। তিনে সাকিব আর চারে মুশফিকের জায়গা পাকা। একজন ওপেনারকেতো আর ৫/৬ নম্বরে খেলানো যায় না। যখন মুশফিক ক্যারিবীয় সফর থেকে হজের জন্য ছুটি নিলেন তখন বিজয়কে চারে খেলানোর একটা পথ তৈরী হলো। তারপর সাকিব ওয়ানডে না খেলাতে বিজয়ের পথ পরিষ্কারই থাকার কথা কারন তিন,চার যে কোন পজিশনেই খেলানো যেতো ডানহাতি ব্যাটারকে। কিন্তু ম্যানেজমেন্টে ডিপিএলের সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক, এই ফরমেটে দুরন্ত ফর্মে থাকা বিজয়কে না খেলিয়ে প্রথম ওয়ানডেতে নাজমুল হোসেন শান্তকে খেলিয়ে চমক দিলেন। ১৫০ রানের মামুলি টার্গেটে তিন নম্বর নেমে বাহাতি ৩৭ রান করলেন। দ্বিতীয় ওয়ানডেতে আরো বড় চমক। শান্তকে এবার প্রমোশন দিয়ে ওপেন করানো হলো। আর বিজয়েরএই ম্যাচেও জায়গা সাইড লাইনে। ১০৯ রানের টার্গেটে শান্ত ওপেনে নেমে ২০ করলেন। শেষ ম্যাচে ১ রান।
ম্যাচের পর ম্যাচ বাজে পারফর্ম করেও সুযোগ পাচ্ছেন তিনি। এই সফরে দুই টেস্টে চার ইনিংসে শান্তর স্কোরগুলো ছিলো ০ ও ১৭ এবং ২৬ ও ৪২।এই পারফরমেন্স দিয়ে একজন ওয়ানডে সিরিজ খেলে ফেললেন অথচ যাকে যেই ফরমেটের জন্য নিয়ে যাওয়া হলো সেই ফরমেটে বিজয় নিজেকে মেলে ধরার সুযোগই পেলেন না। শেষ ম্যাচে শান্ত না হোক লিটন, মাহমুদুল্লাহ, সৈকত, সোহান-যে কাউকেই ড্রপ দিয়ে ইচ্ছে করলেই বিজয়কে অনায়াসেই খেলানো যেতো।
স্কোয়াডের সাথে নিয়ে গিয়ে কোন ম্যাচ না খেলিয়ে পরের সিরিজ বাদ দেয়ার ঘটনা বাংলাদেশের ক্রিকেট নিয়মিত চিত্র।বিজয়কে উইন্ডিজে না খেলিয়ে জিম্বাবুয়ে সফরে আবার বাদ দিয়ে দেবে না তো? হলেই অবাক কি।
Leave a Reply