সুব্রত ববি; সিনিয়র করসপোন্ডেন্ট; এন টিভি: শান্তকে আর কত টেনে তোলার চেষ্টা চলবে? প্রতিভার তকমা দিয়েই ৫ বছর কাটিয়ে দিলেন বাহাতি ব্যাটার!
কিছুতেই কিছু হচ্ছে না, তবু যেন নাজমুল হোসেন শান্তকে টেনে তোলার প্রচেষ্টা থামছেই না।
ক্যারিবীয় সফরে শান্তকে টেনে তুলতে গিয়েই ঘরোয়া ক্রিকেটে দুর্দান্ত পারফর্ম করে জাতীয় দলে ফেরা এনামুল হক বিজয়ের সাথে অন্যায় করা হলো। ওয়ানডে সিরিজে একটা ম্যাচও খেলানো হলো না তাকে। আর যাকে জাতীয় দলে টিকিয়ে রাখার চেষ্টা সেই শান্ত তিন ওয়ানডেতে ৩৭, ২০ আর শেষ ম্যাচে করলেন ১ রান। দ্বিতীয় ও তৃতীয় ম্যাচেতো তাকে ওপেনই করানো হলো।
প্রশ্নটা ক্রমশ:ই বাড়ছে শান্তর এতো সুযোগ পাবার কারনটা কি?
প্রতিভার তকমা দিয়েই ৫ বছর পার করে দিলেন অথচ নাজমুল হোসেন শান্তর মধ্যে কি প্রতিভা আছে সেটা এখনো বুঝে উঠতে পারলেন না কেউই।
খুজে পাওয়া কঠিন এ যাবত কালে তারচে বেশী সুযোগ কিংবা সুবিধা আর কোন বাংলাদেশী ক্রিকেটার পেয়েছেন কিনা। কারও ওপর বিসিবি এত পরিমানে বিনিয়োগ করেছে কিনা?
কেউ মনে করতে পারবেন শেষ কবে শান্তকে ভালো ব্যাটিং করতে দেখেছেন।
টেস্টের তিন নম্বর পজিশনের ব্যাটসম্যান-যার শেষ চৌদ্দ ইনিংসে নাই কিনা একটা ফিফটির ইনিংস।
এই ১৪ ইনিংসে সবমিলে রান করেছেন মাত্র ২৫০।
অনূর্ধ্ব ১৯ পর্যায়ে সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক হিসেবে শেষ করেছিলেন। বিসিবি মনে করেছিলো টেস্টে বাংলাদেশের ওয়ান ডাউন পজিশনের সমস্যাটা বোধহয় দূর হচ্ছে। বয়স ভিত্তিক দলের পর থেকেই নিয়মিত এ দলে টেনা নেয়া হলো। কখনো কখনো অধিনায়কও বানানো হলো ভবিষ্যতের কথা ভেবে জাতীয় দলের সাথেও তাকে বিভিন্ন সময় সফরে পাঠানো হতো। ২০১৭ সালে এমনই এক নিউজিল্যান্ড সফরে হঠাত করেই টেস্টে নামিয়ে দেয়া হলো তাকে। দুই ইনিংস মিলে অভিষেক টেস্টে ৩০ রান করেছিলেন শান্ত।
বাহাতি টপ অর্ডারের মধ্যে আলোর দিশা দেখতে পাচ্ছিলো বাংলাদেশের ক্রিকেট। তবে সেটা আলো নয় যেন আলেয়া।
দেখতে দেখতে সাদা পোশাকে ১৯ টেস্টে ৩৬ ইনিংসে ব্যাট করে ফেলেছেন। তার মধ্যে খুজে পাওয়া যায় মাত্র ২টি সেঞ্চুরি ও ২ টি ফিফটি।তার আউট হবার ধরনগুলো দেখেছেন। ৩৬ ইনিংসের মধ্যে ২১বার ক্যাচ আউট হয়েছেন
পরিসংখ্যান বলে তার মধ্যে ১৫বারই উইকেটের পেছনে মানে কিপার, স্লিপ কিংবা গালিতে ক্যাচ দিয়েছেন তিনি। যেটাতে স্পস্ট টেকনিকে সমস্যা আছে তার। তিন নম্বরের ব্যাটারদের থেকে নতুন বলে যেভাবে দেয়ালের মতো রক্ষনের প্রত্যাশা করা হয়, শান্ত তেমন ব্যাটার নন। তারপরও বিসিবি তিন নাম্বার জায়গাটা যেন লিখেই দিয়েছে নাজমুল হোসেন শান্তকে।১৯ টেস্টে ৯১৩ রান। এভারেজ ২৬.০৮। ওয়ানডেতে তাক তিনে খেলানোর জন্য সৌম্য সরকারকে সরিয়ে ৬/৭ খেলানো হয়েছে।
শান্ত তার খেলা ১১ ওয়ানডের সবগুলোতেই ওপেনিং না হয় ওয়ান ডাউনে ব্যাটিং করেছেন। তার থেকে বাংলাদেশের প্রাপ্ত রান ১৫১। সর্বোচ্চ স্কোর ৩৭।এভারেজ ১৩.৭২। স্ট্রাইকরেট ৫৯.৬৮। এই হচ্ছে প্রতিভাবান, সম্ভাবনময়ী ক্রিকেটার শান্তর স্ট্যাট। টি-টোয়েন্টিতেও তাকে চেষ্টা করা হয়েছে। ২০২১ সালের নভেম্বের পাকিস্তানের বিপক্ষে ৩ ম্যাচের সিরিজের একটিতে ৭ দ্বিতীয়টিতে ৪০ এবং তৃতীয় টি-টোয়েন্টিতে করেছিলেন ৫ রান। ৬ আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টির ক্যারিয়ারে ৭৬ রান করেছেন শান্ত।
প্রশ্ন তাই আর কত ঘষা মাজা করলে,আর কত সময়, শ্রম এবং অর্থ ঢাললে শান্তকে টেনে তোলা যাবে?
ম্যাচের পর ম্যাচ পারফর্ম না করেই কি খেলে যাবেন শান্ত বঞ্চিত হবে অন্য কেউ? শান্তর এত সুযোগ পাওয়াটাতো সাধারন দর্শক কেন বিশ্লেষকদের কাছেও রহস্যের।
Leave a Reply