সুব্রত ববি; সিনিয়র করসপোন্ডেন্ট; এন টিভি: দিনেশ কার্তিক অবাক করেই চলেছেন। বয়স ৩৭ চলছে কিন্তু এখনো কি ধার ব্যাটে তার। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে প্রথম টি টোয়েন্টিতে ৪ ওভার বাকি থাকতে ৭ নম্বরে নেমে ১৯ বলে ২টা ৬ ও ৪টা ৪এ ৪১ রানের অপরাজিত ইনিংস খেললেন। বিস্ফোরক ব্যাটিং। বুঝিনা এই বয়সে কোথা থেকে এত শক্তি পান!
দিনেশ কার্ত্তিকের বুড়ো হাড়ে ভেল্কিবাজি চলছে। ষোল বছর আগে টিম ইন্ডিয়ার জার্সিতে যাদের সাথে প্রথম টি-টোয়েন্টি খেলেছিলেন, তাদের কেউ এখন কোচ, কেউ ধারাভাষ্যকার।
কিন্তু দিনেশ কার্ত্তিক এখনও ভারতীয় দলেই আছেন। ম্যাচ সেরার পুরস্কারও জিতছেন।
ষোল বছর আগে ২০০৬ সালে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ভারত তাদের ইতিহাসের প্রথম আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্ট ম্যাচ খেলেছিলো। বিরেন্দর শেবাগের নেতৃত্বে জোহানেসবার্গের ওয়ানডারার্স স্টেডিয়ামে ভারতের সেই একাদশেও ছিলেন দিনেশ কার্ত্তিক। শুধু ছিলেন না ১২৭ রানের টার্গেটে ২৮ বলে ৩১ রানের ম্যাচ ফিনিশিং ইনিংস খেলে সেরাও হয়েছিলেন। ষোল বছরেও রানের ক্ষুধা কমেনি একটুও। বরং তা আরো বেড়েছে। বয়স বাড়লেও হাড়ের জোড় কমেনি বরং আরো বিধ্বংসী হয়েছেন তিনি।
মহেন্দ্র সিং ধোনী ভারতীয় দলে যে ফিনিশারের রোল প্লে করতেন, কার্ত্তিক এই মুহুর্তে ম্যান ইন ব্লু টিমের
বেস্ট ফিনিশার।
কিছুদিন আগে শেষ হওয়া আইপিএলে ১৪ ম্যাচে ৫৭.৪০ গড়ে ২৮৭ রান করেছিলেন। তার স্ট্রাইকরেট দেখলে চোখ চড়ক গাছে উঠবে।১৯৯.৩৩। এই মৌসুমে কোন ব্যাটসম্যানের যা সর্বোচ্চ স্ট্রাইকরেট। রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালুরুতে এই ফিনিশিং রোলের কারনেই কার্ত্তিক ৩ বছর পর আবার জায়গা ফিরে পেয়েছেন ভারতের জাতীয় দলে। এখন স্বপ্ন দেখছেন অক্টোবরে অস্ট্রেলিয়ায় হতে যাওয়া টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপও খেলার।
১৬ বছর আগে ২০০৬ সালের প্রথম টি-টোয়েন্টিতে তার সতীর্থ ছিলেন-শেবাগ, শচীন, দিনেশ মোঙ্গিয়া, ধোনী, রায়না, ইরফান পাঠান, হরভজন, জহির খান, অজিত আগারকার ও শ্রীশান্ত। এরা সবাই বহু আগেই সাবেক হয়ে গেছেন।
সেই ম্যাচের দক্ষিণ আফ্রিকা দলের এবিডি ভিলিয়ার্স, হার্শেল গিবস, গ্রায়েম স্মিথ, আলবি মরকেল- সবাই অবসরে নিয়ে ফেলেছেন। ঐ ম্যাচের ২২ জনের মধ্যে একলা এখনো ২২ গজে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন, ব্যাট দিয়ে দর্শকদের বিনোদন দিচ্ছেন দিনেশ কার্ত্তিক। বয়স কিন্তু ৩৭ চলছে। সবচে বেশী বয়সি হিসেবে ম্যান অব দ্যা ম্যাচ হবার রেকর্ডও গড়েছেন। এই প্রসংগে ডিকে বলেছেন
“ প্রথম টি-টোয়েন্টির কথা মনে করলে নিজেকে বুড়ো মনে হয়। আমি বিভিন্ন জেনারেশনের সঙ্গে খেলেছি। আমার সঙ্গে খেলা ২১/২২ জন অবসর নিয়েছেন। আমি এখনও খেলা চালিয়ে যাচ্ছি।এটাই ভালো বিষয়”
টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ার ১৬ বছরের হলেও ভারতের হয়ে ম্যাচ খেলেছেন মাত্র ৪৩টি।টানা খুব একটা খেলতে পারেননি। যুবরাজ,রায়না,ধোনীদের দাপটের সময় দলের বাইরেই থাকতে হয়েছে তাকে। ধোনী কিপার হবার কারনে কম্বিনেশন তার দলে থাকার পথেও অন্তরায় ছিলো।তবে কখনোই নিজের উপর বিশ্বাস হারান নি তিনি। বিশ্বাস ছিলো,আর পারফরমেন্স করেছেন। ফলে ৩৭ বছর বয়সটা- তার ভারতীয় দলে ফেরার স্বপ্নে অন্তরায় হতে পারেনি।
Leave a Reply