সব ধরনের ফুটবলে ভারতকে নিষিদ্ধ করেছে খেলাটির সর্বোচ্চ নিয়ন্ত্রক সংস্থা ফিফা। ফুটবলীয় কার্যক্রমে তৃতীয় পক্ষের প্রভাব খাটানোর অভিযোগে অল ইন্ডিয়া ফুটবল ফেডারেশনকে (এআইএফএফ) এই নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে।
ফিফার দেওয়া নিষেধাজ্ঞার ফলে অনূর্ধ্ব-১৭ মেয়েদের বিশ্বকাপ ফুটবল আয়োজন প্রবল অনিশ্চয়তায় পড়ল। একই সঙ্গে সঙ্কটে পড়েছে পুরো দেশের ফুটবল।
এক বিবৃতিতে ফিফা জানিয়েছে, ‘এখন এআইএফএফের ক্ষমতায় রয়েছে কমিটি অব অ্যাডমিনিস্ট্রেটর্স। এর বদলে যে দিন থেকে নির্বাচনের মাধ্যমে তৈরি হওয়া কমিটি এআইএফএফ-এর দৈনন্দিন কাজকর্ম দেখতে শুরু করবে, সে দিন থেকে এই নির্বাসনের শাস্তি উঠে যাবে। ’
আগামী ১১ অক্টোবর থেকে ৩০ অক্টোবর ভারতে মেয়েদের অনূর্ধ্ব-১৭ বিশ্বকাপ ফুটবল হওয়ার কথা। এর মধ্যে পরিস্থিতি না বদলালে এই প্রতিযোগিতা ভারত থেকে সরিয়ে নেওয়া হবে। ফিফা বিবৃতিতে বলেছে, ‘নিষেধাজ্ঞার অর্থ হল, ভারত অক্টোবরে মেয়েদের অনূর্ধ্ব-১৭ বিশ্বকাপ ফুটবল আয়োজন করতে পারবে না। এই প্রতিযোগিতা নিয়ে পরবর্তী পদক্ষেপ কী হবে, তা নিয়ে ফিফা চিন্তা-ভাবনা করছে। ’
শেষে ফিফা লিখেছে, ভারতের কেন্দ্রীয় ক্রীড়া মন্ত্রনালয়ের সঙ্গে তারা যোগাযোগ রাখছে। তারা আশা করছে, এখনও ইতিবাচক সমাধান সম্ভব।
কী কারণে এই নিষেধাজ্ঞা
ভারতীয় ফুটবলের সর্বোচ্চ সংস্থায় অনিয়মের অভিযোগ তুলে গত ১২ মে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হন দিল্লি ফুটবল ক্লাবের শীর্ষ কর্তা। তিনি অভিযোগ জানান, বেআইনিভাবে এক দশকের বেশি সময় এআইএফএফ-এর সভাপতির পদ দখল করে বসে রয়েছেন প্রফুল প্যাটেল।
সেই মামলার শুনানিতে ভারতের শীর্ষ আদালত রায় দেন, নির্বাচন করে নতুন কমিটি গঠন না হওয়া পর্যন্ত ফেডারেশনের সমস্ত দায়িত্ব এবং কর্মকাণ্ড পরিচালিত হবে তিন সদস্যের সুপ্রিম কোর্ট নিযুক্ত কমিটির মাধ্যমে।
এর পরই শুরু হয় জটিলতা। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশের পর ভারতীয় ফুটবলের পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে আসে ফিফা এবং এএফসির প্রতিনিধি দল। ওই সফরে এসে ফেডারেশনের দায়িত্বে থাকা সিওএ কর্তাদের সঙ্গে আলোচনা হয় প্রতিনিধি দলের।
ফিফা স্পষ্ট জানিয়ে দেয়, এআইএফএফ-এর নতুন সংবিধান চূড়ান্ত করতে হবে ৩১ জুলাইয়ের মধ্যে। নির্বাচন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে হবে ১৫ সেপ্টেম্বরের মধ্যে। নির্বাচনে যারা জিতবেন, সেই কমিটিকে ২০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে কাজ শুরু করতে হবে।
ফিফার এই নির্দেশের পরই স্পষ্ট ছিল, বেঁধে দেওয়া সময়ের মধ্যে সমস্ত প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে না পারলে নির্বাসনের মুখে পড়তে হবে ভারতীয় ফুটবলকে। ৩১ জুলাই পেরিয়ে যাওয়ার পর আরও ১৫ দিন অতিরিক্ত সময় দিয়েও যখন কাজ হয়নি, তখন ভারতীয় ফুটবলে নেমে এলো ফিফার শাস্তির খাড়া।
Leave a Reply