রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়ার পাঁচ বছর পূর্ণ হলো বৃহস্পতিবার (২৫ আগস্ট)। কূটনৈতিক জটিলতায় আটকে আছে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন। যদিও আন্তর্জাতিক চাপের মুখে রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতে ২০১৭ সালের শেষ দিকে বাংলাদেশের সঙ্গে চুক্তি করেছিল মিয়ানমার সরকার। কিন্তু সেই প্রত্যাবাসন আজো শুরু হয়নি। এতে দীর্ঘ হচ্ছে রোহিঙ্গা সংকট।
একইসঙ্গে রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোতে বাড়ছে নানা অপরাধ। এ কারণে স্থানীয়দের মধ্যে দেখা দিয়েছে আতঙ্ক। অবশ্য, বরাবরের মতোই রোহিঙ্গারা বলছেন, নিরাপদ পরিবেশ ও নাগরিকত্ব পেলে মিয়ানমারে ফিরতে আগ্রহী।
২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট মিয়ানমার থেকে দলবেঁধে বাংলাদেশে আসতে শুরু করেছিল রোহিঙ্গারা। মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে নির্মম নির্যাতনের মুখে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের মানবিক কারণে আশ্রয় দেয় বাংলাদেশ। ওই সময় সাড়ে সাত লাখ রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দেওয়া হয়। অবশ্য এর আগে সাড়ে তিন লাখের বেশি রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দেওয়া হয়েছিল। বর্তমানে কক্সবাজারে ১১ লাখের বেশি রোহিঙ্গা রয়েছেন।
এদিকে, রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া যত দেরি হচ্ছে তত বাড়ছে নানা অপরাধ। ক্যাম্পের অভ্যন্তরে খুন, ধর্ষণ, অপহরণ, গ্রুপে-গ্রুপে গোলাগুলি, আধিপত্য বিস্তার, মাদক, অস্ত্রসহ নানা সহিংসতার ঘটনা ঘটছে। এ নিয়ে কক্সবাজারের স্থানীয়রা রয়েছেন আতঙ্কে।
আইনশৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর তথ্য মতে, ‘গত পাঁচ বছরে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে অপরাধ মাত্রাতিরিক্ত হারে বেড়েছে। ২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট থেকে ২০২২ সালের ২০ আগস্ট পর্যন্ত মামলা হয়েছে ২ হাজার ৪৩৮টি। এসব মামলায় আসামির সংখ্যা পাঁচ হাজার ২২৬ জন। এর মধ্যে অস্ত্র মামলা ১৮৫টি, মাদক মামলা এক হাজার ৬৩৬টি, ধর্ষণ মামলা ৮৮টি, হত্যা মামলা ১১৫টি, অপহরণ ও মুক্তিপণ সংক্রান্ত মামলা হয়েছে ৩৯টি। তবে অন্যান্য সময়ের তুলনায় রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোতে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে। পাশাপাশি বাড়ানো হয়েছে আইনপ্রয়োগকারী সংস্থার সদস্য। এরপরও অপরাধ কমছে না তাদের।’
পরিসংখ্যানই বলে দিচ্ছে, মানবিক বাংলাদেশে আশ্রিত রোহিঙ্গাদের মাঝে প্রতি বছরই অপরাধপ্রবণতা বাড়ছে। শুধু ইয়াবা নয়, ভয়ংকর মাদক ক্রিস্টাল মেথ বা আইস পাচারেও জড়িয়ে পড়েছে তারা। এ ছাড়াও আধিপত্য বিস্তার নিয়েও হত্যা, গুম, অপহরণ করে চাঁদা দাবিসহ নানা অভিযোগে তারা অভিযুক্ত।
স্থানীয়দেরও অভিযোগ, রোহিঙ্গারা দিন দিন বেপরোয়া হয়ে উঠছে। ক্যাম্পে কয়েকটি গ্রুপ মাদক পাচারের সঙ্গে জড়িত। তারা মিয়ানমার থেকে সরাসরি ইয়াবার চালান এনে ক্যাম্পে মজুত রাখে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর কড়াকড়ির মধ্যেও তারা ক্যাম্পে ইয়াবার চালান, মজুত ও লেনদেন করছে।
প্রসঙ্গত, রাখাইন রাজ্যে সীমান্তরক্ষী বাহিনীর তল্লাশিচৌকিতে হামলার অভিযোগে মিয়ানমার সেনাবাহিনী রোহিঙ্গাদের ওপর নির্যাতন শুরু করে। এ সময় গণহত্যা, নির্যাতন, ধর্ষণ এবং বাড়িঘরে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। তাদের নির্যাতনের মুখে ২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট সীমান্ত পাড়ি দিয়ে বাংলাদেশে আসে রোহিঙ্গারা। কক্সবাজারের উখিয়া ও টেকনাফের ৩৪টি ক্যাম্পে ১১ লাখ ১৮ হাজারের বেশি রোহিঙ্গা আশ্রয় নেন। গত পাঁচ বছরে রোহিঙ্গা জনসংখ্যা বেড়েছে আরও দেড় লাখের বেশি।
<p>সম্পাদক: মো:রোকন উদ্দিন রুমন </p><p>লেখক: আবদুল্লাহ যায়েদ তানজিন </p><p>উপদেষ্টা: মো: মোশাররফ হোসেন </p><p>thedailypadma@gmail.com<br></p><p> বার্তা কার্যালয়: দক্ষিন কমলাপুর,ফরিদপুর সদর, ফরিদপুর। </p><p>মোবাইল:০১৭১১১৪৮৯৫১, ০১৯১১৩০৩২২৯ ইমেইল: thepadma24@gmail.com<br></p>
© স্বর্বস্বত্ব সংরক্ষিত। এই ওয়েবসাইটের লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।