ইউক্রেনের যে চারটি (খেরসন, জাপোরিঝিয়া, দোনেতস্ক ও লুহানস্ক) অঞ্চল মস্কো দখল করেছে সেগুলোকে রাশিয়ায় যুক্ত করতে চলেছেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন।
শুক্রবার (৩০ সেপ্টেম্বর) এই চার ইউক্রেনীয় ভূখণ্ডকে আনুষ্ঠানিকভাবে রাশিয়ার বলে ঘোষণা করবেন ভ্লাদিমির পুতিন।
এ উপলক্ষে যাবতীয় প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে পুতিন প্রশাসন। এতে করে সাত মাস ধরে চলে আসা এই যুদ্ধের তীব্রতা নতুন মাত্রায় পৌঁছাবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। শুক্রবার এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স।
রয়টার্স বলছে, রাশিয়ার স্থানীয় সময় শুক্রবার বিকেল তিনটায় (বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যা ৬টায়) গ্র্যান্ড ক্রেমলিন প্রাসাদের সেন্ট জর্জ হলে ‘রাশিয়ান ফেডারেশনে নতুন অঞ্চলগুলোর প্রবেশ’ সংক্রান্ত ওই চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানটি অনুষ্ঠিত হবে। কলামযুক্ত এই হলটির সোনায় খোদাই করা মার্বেল ফলক রাশিয়ান সামরিক বীরদের স্মরণ করে থাকে।
বৃহস্পতিবার প্রেস সেক্রেটারি ও মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ মস্কোতে এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, শুক্রবার মস্কোতে ইউক্রেনের চার অঞ্চলের নেতাদের সঙ্গে রাশিয়ায় যোগদান বিষয়ক চুক্তি স্বাক্ষর হবে। পাশপাশি সেখানে ভাষণও দেবেন প্রেসিডেন্ট পুতিন।
রাশিয়া থেকে খবর পাওয়া যাচ্ছে, পুতিনের এই ভাষণের জন্য মস্কোর রেড স্কয়ার ইতোমধ্যেই একটি মঞ্চ তৈরি করা হয়েছে। সেখানে যেসব বিলবোর্ড লাগানো হয়েছে সেগুলোতে ইউক্রেনের খেরসন, জাপোরিঝিয়া, দোনেতস্ক ও লুহানস্ক অঞ্চলকে রাশিয়ার অংশ হিসেবে দেখানো হয়েছে। এই ভূমি সংযোজন প্রক্রিয়া আনুষ্ঠানিকভাবে সম্পন্ন করার আগে রুশ পার্লামেন্টের উভয় কক্ষে প্রস্তাবটি পাস করাতে হবে।
যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন ইতিমধ্যে ঘোষণা দিয়েছে, তারা রাশিয়ার ওপর আরও নিষেধজ্ঞা আরোপ করবে। তবে ইইউর পক্ষ থেকে যে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হবে, সেটি নিয়ে মতবিরোধ রয়েছে। হাঙ্গেরি বলেছে, এই নিষেধাজ্ঞার আওতায় জ্বালানি থাকলে তারা তাতে সমর্থন দেবে না।
রাশিয়ার মিত্র হিসেবে পরিচিত সার্বিয়া, কাজাখস্তানও বলছে, রাশিয়ার এই পদক্ষেপের স্বীকৃতি তারা দেবে না। আর ইউক্রেন ও রাশিয়াকে আলোচনার টেবিলে বসানো তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ানও পুতিনের এই পদক্ষেপের নিন্দা জানিয়েছেন।
ইউক্রেন যুদ্ধকে কেন্দ্র করে এর আগে রাশিয়ার বিরুদ্ধে সাত দফা নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে ইইউ। এবার নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হলে আটবারের মতো নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হবে।
ইউক্রেনের ভূমি রাশিয়ার দখলে যাওয়ার ঘটনা এবারই প্রথম নয়। এর আগে ২০১৪ সালে ক্রিমিয়া দখল করে গণভোট দিয়ে সেই এলাকা রুশ ফেডারেশনের সঙ্গে যুক্ত করা হয়। এবার খেরসন, জাপোরিঝঝিয়া, দোনেৎস্ক ও লুহানস্ক অঞ্চল রাশিয়ার নিয়ন্ত্রণে যাচ্ছে। রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিন আজ যে ঘোষণা দেবেন, তাতে ১৫ শতাংশ ভূখণ্ড ইউক্রেনের নিয়ন্ত্রণের বাইরে যাবে। এসব এলাকা হাতছাড়া হলে ইউক্রেনের কৃষি উৎপাদন ১৩ থেকে ১৬ শতাংশ কমে যাবে।
Leave a Reply