বরিশালের পর বিএনপির দৃষ্টি ফরিদপুরে। সাংগঠনিক বিভাগীয় এই গণসমাবেশ সফল করতে এরই মধ্যে প্রস্তুতি শুরু করেছে দলটি। আওয়ামী লীগ অধ্যুষিত এলাকা এবং বিগত গণসমাবেশের অভিজ্ঞতায় প্রশাসন ও ক্ষমতাসীন দলের পক্ষ থেকে ফরিদপুরেও প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করা হতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতারা। এরই মধ্যে কয়েক জায়গায় বাধাও পেয়েছেন। এসব বিবেচনায় কর্মকৌশল নির্ধারণ করছে দলটি। তবে সব বাধা পেরিয়ে গণসমাবেশ সফল করতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ বিএনপি। ফরিদপুর বিভাগীয় গণসমাবেশ বাস্তবায়ন কমিটির নেতাদের সঙ্গে কথা বলে এমনটা জানা গেছে।
নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যর ঊর্ধ্বগতি, চলমান আন্দোলনে দলের ৫ কর্মী নিহত হওয়ার প্রতিবাদ ও দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তিসহ একাধিক দাবিতে বিভাগীয় গণসমাবেশ করছে বিএনপি। এরই মধ্যে চট্টগ্রাম, ময়মনসিংহ, খুলনা, রংপুর এবং সর্বশেষ গত শনিবার বরিশালে গণসমাবেশ করেছে দলটি। আগামী ১২ নভেম্বর ফরিদপুরে গণসমাবেশ হবে। বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এ সমাবেশেও প্রধান অতিথি থাকবেন।
জানা গেছে, গণসমাবেশ সফলে এরই মধ্যে প্রস্তুতি শুরু করেছে বিএনপি। এর অংশ হিসেবে ৭টি উপকমিটি গঠন করা হয়েছে। সমাবেশ বাস্তবায়নে গঠিত কমিটির অধিকাংশ নেতা এখন ফরিদপুরে অবস্থান করছেন। স্থানীয় ও কেন্দ্রীয় নেতারা ফরিদপুরসহ বিভিন্ন জেলা ও উপজেলায় প্রস্তুতিমূলক সভা করছেন। ইউনিয়ন, এমনকি গ্রামপর্যায়েও কর্মিসভা করার পরিকল্পনা রয়েছে। পাশাপাশি লিফলেট বিতরণের কার্যক্রমও চলছে। প্রচারণার অংশ হিসেবে দু-এক দিনের মধ্যে মাইকিংও শুরু করবে। এ ছাড়া সমাবেশকে ঘিরে ফরিদপুর নগরের পাশাপাশি বিভিন্ন জেলা-উপজেলায় পোস্টার, ফেস্টুন ও বিলবোর্ড টাঙানোর কাজও চলমান।
বিএনপির ফরিদপুর সাংগঠনিক বিভাগীয় গণসমাবেশ বাস্তবায়ন কমিটির দলনেতা ও দলের যুগ্ম মহাসচিব মজিবুর রহমান সরোয়ার গতকাল রোববার কালবেলাকে বলেন, আগের পাঁচটি সমাবেশেই ক্ষমতাসীনরা বাধা দিয়েছে। ফরিদপুরেও বাধা দিতে পারে। আমরা কৌশলে কাজ করব।
তিনি বলেন, ফরিদপুর মূলত আওয়ামী লীগের বেল্ট। সেখানে আমাদের কে এম ওবায়দুর রহমান ছিলেন। তিনি মারা যাওয়ায় অভিভাবক সংকটে ভুগছি। তবে আওয়ামী লীগের বেল্ট হলেও ফরিদপুরের গণসমাবেশ ঘিরে মানুষের মধ্যে ব্যাপক আগ্রহ দেখছি। আশা করি, এখানেও জনতার ঢল নামবে।
বিএনপির ফরিদপুর বিভাগীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক সেলিমুজ্জামান সেলিম বলেন, প্রস্তুতি শুরু করেছি। ৬টি সাংগঠনিক জেলায় দল ও অঙ্গসংগঠনের কর্মিসভা করা হচ্ছে। নেতাকর্মীদের অনেক জায়গায় বাধা দেওয়া হয়েছে। গোপালগঞ্জের মুকসুদপুরে লিফলেট বিতরণের সময় কয়েক জনকে আটক করে কয়েক ঘণ্টা পরে ছেড়ে দিয়েছে। ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গা উপজেলায় কর্মীসভায় বাধা দিয়েছে। তার পরও আমরা হতাশ না। আশা করি, সব বাধা পেরিয়ে ফরিদপুরেও সফল গণসমাবেশ হবে।
ফরিদপুর জেলা বিএনপির সদস্য সচিব এ কে কিবরিয়া স্বপন বলেন, সমাবেশে গোপালগঞ্জ, রাজবাড়ী, মাদারীপুর, শরীয়তপুর এবং ফরিদপুর জেলা ও মহানগরের লোক অংশ নেবেন।
এদিকে বরিশালে অভূতপূর্ব সমাবেশ হয়েছে দাবি গণসমাবেশ বাস্তবায়ন কমিটির প্রধান উপদেষ্টা স্থায়ী কমিটির সদস্য বেগম সেলিমা রহমানের। তিনি বলেন, বরিশালে এর আগে কখনো এমন মিটিং হয়নি, জনতার ঢল নেমেছিল। মানুষের ভেতরে এত উদ্দীপনা, এত ভালোবাসা আগে দেখিনি। এক কথা অতুলনীয়-অভাবনীয়। জনগণ সরকারের দুঃশাসনের বিরুদ্ধে অনাস্থা জানিয়েছে।
Leave a Reply