কর্ণফুলী নদীর তলদেশে নির্মিত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেলের দক্ষিণ টিউবের পূর্ত কাজের সমাপ্তি ঘোষণা করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
শনিবার (২৬ নভেম্বর) সকালে গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে এ ঘোষণা দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এতে সভাপতিত্ব করেন সড়ক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। এছাড়াও টানেলস্থলে আয়োজিত মূল অনুষ্ঠানে মন্ত্রী, সংসদ সদস্য ও রাজনৈতিকসহ বিশিষ্ট ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন।
দক্ষিণ টিউবের পূর্ত কাজের সমাপ্তি ঘোষণার পর প্রধানমন্ত্রী বলেন, এখানে একটা টানেল হয়েছে দেখে এখনই উদ্বোধন করছি না। আমার ইচ্ছা ছিল দেখার যে, কেমন হলো। নিজে গিয়ে টানেলের টিউবটা দেখে আসতে পারতাম, খুশি হতাম
তিনি বলেন, দ্বিতীয় টিউবের কাজও শেষ; সামান্য কাজ বাকি। বিরাট কাজ বলে মনে করি। টানেল নির্মাণে যারা জড়িত, সবাইকে ধন্যবাদ।’
এ সময় বঙ্গবন্ধু টানেল চালু হলে দেশের অর্থনৈতিক কার্যক্রম আরও গতিশীল হবে বলেও জানান শেখ হাসিনা।
এদিকে পুরো টানেল জানুয়ারিতে উদ্বোধন করা হবে বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ। টানেলের অভ্যন্তরে ৯৩ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। এখনও বাকি রয়েছে ৭ শতাংশ কাজ। সম্পূর্ণ কাজ শেষ হতে ডিসেম্বর পর্যন্ত সময় লাগতে পারে। এরপর যানচলাচলের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হবে।
২০১৬ সালের ১৪ অক্টোবর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং যৌথভাবে কর্ণফুলী টানেলের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। ২০১৯ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রথম টানেল টিউবের বোরিং কাজের উদ্বোধন করেন এবং ২০২০ সালের ১২ ডিসেম্বর সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের দ্বিতীয় টিউবের বোরিং কাজের উদ্বোধন করেন।
টানেলটি চট্টগ্রামের পতেঙ্গার নেভাল একাডেমি প্রান্ত থেকে শুরু করে চট্টগ্রাম ইউরিয়া ফার্টিলাইজার লিমিটেড এবং আনোয়ারায় কর্ণফুলী ফার্টিলাইজার লিমিটেড কারখানার মধ্যে নদীর তলদেশে সংযোগ স্থাপন করছে।
মূল টানেলের দৈর্ঘ্য ৩ দশমিক ৩২ কিলোমিটার এবং এতে দুটি টিউব রয়েছে। প্রতিটিতে দুটি লেন রয়েছে। এই দুটি টিউব তিনটি জংশনের (ক্রস প্যাসেজ) মাধ্যমে সংযুক্ত করা হবে। এই ক্রস প্যাসেজগুলো জরুরি পরিস্থিতিতে অন্যান্য টিউবগুলোতে যাওয়ার জন্য ব্যবহার করা হবে। টানেল টিউবের দৈর্ঘ্য ২ দশমিক ৪৫ কিমি এবং ভিতরের ব্যাস ১০ দশমিক ৮০ মিটার।
মূল টানেলের পশ্চিম এবং পূর্ব দিকে একটি ৫ দশমিক ৩৫ কিলোমিটার সংযোগ সড়ক রয়েছে।
বাংলাদেশ ও চীন সরকারের যৌথ অর্থায়নে টানেল প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হচ্ছে। প্রকল্পটির মোট ব্যয় প্রায় ১০ হাজার ৫৩৭ কোটি টাকা। চীনের এক্সিম ব্যাংক ৫ হাজার ৯১৩ কোটি টাকা ঋণ দিচ্ছে এবং বাকি অর্থ দিচ্ছে বাংলাদেশ সরকার।
Leave a Reply