
২০০৮ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি মারা যান বাংলা চলচ্চিত্রের জনপ্রিয় নায়ক এস এম আসলাম তালুকদার মান্না। বুকে ব্যথা অনুভব করায় এদিন ভোর ৪টায় ইউনাইটেড হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। কিন্তু চিকিৎসকরা হাসপাতালে আসেন সকাল ৯টায়। এতে হাসপাতালটির হৃদরোগ বিভাগের ৬ চিকিৎসকের অবহেলার জন্য মান্নার মৃত্যু হয় বলে অভিযোগ করেন স্বজনরা। পরবর্তীতে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে (সিএমএম) মামলা দায়ের করা হয় পরিবারের পক্ষ থেকে। কিন্তু হাইকোর্টের স্থগিতাদেশের কারণে ১৫ বছর ধরে আটকে আছে মামলার বিচার কার্যক্রম।
২০০৮ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর চিকিৎসকদের বিরুদ্ধে মান্নার স্ত্রী শেলী কাদেরের ভাই রেজা কাদের ঢাকা সিএমএম আদালতে মামলা করেন। আদালত মামলা বিচার বিভাগীয় তদন্তের নির্দেশ দেন। মামলার দুই মাস পর ১৩ নভেম্বর তৎকালীন ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সাইফুর রহমান সিদ্দিক বিচার বিভাগীয় তদন্ত শেষে ৬ চিকিৎসকের বিরুদ্ধে প্রতিবেদন দাখিল করেন।
পরবর্তীতে ২০০৯ সালের ১৮ অক্টোবর আসামিদের বিরুদ্ধে চার্জগঠন করেন তৎকালীন ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-১ এর বিচারক ফিরোজ আলম। এরপর ১, ২ ও ৩ নভেম্বর সাক্ষ্যগ্রহণের দিন ধার্য করেন আদালত। সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য ধার্য থাকা দিনেই সংশ্লিষ্ট বিচারক বদলি হয়ে যান। থেমে যায় সাক্ষ্যগ্রহণ। এরপর আসামিরা মামলার কার্যক্রম স্থগিত চেয়ে উচ্চ আদালতে আবেদন করলে আদালত তা মঞ্জুর করেন।
আসামিরা হলেন—ডা. মো. এনায়েত হোসেন শেখ, ডা. জহির উদ্দিন মাহমুদ ইলিয়াস, ডা. মোমেনুজ্জামান, ডা. ফাতেমা, ডা. মাইনুল ইসলাম মজুমদার ও ডা. খন্দকার মাহবুব হোসাইন।
মামলাটি বর্তমানে ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-১ এ বিচারাধীন। সংশ্লিষ্ট আদালতের স্পেশাল পাবলিক প্রসিকিউটর জাহাঙ্গীর হোসেন (দুলাল) বলেন, সাক্ষ্যগ্রহণের প্রথম দিনই মামলা স্থগিত করে হাইকোর্ট। ১৪ বছর হয়ে গেছে স্থগিত রয়েছে মামলাটি। এজন্য দীর্ঘদিন ধরে মামলাটির বিচার হচ্ছে না। স্থগিতাদেশ তুলে নিলে সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হবে।
বাদীপক্ষের আইনজীবী ব্যারিস্টার খন্দকার মুশফিকুল হুদা বলেন, স্থগিতাদেশ এখনও রয়েছে। অদৃশ্য কোনো কারণে তা বাতিল হচ্ছে না। তবে আমরা নতুন আইনি পদক্ষেপ নিতে যাচ্ছি। আশা করছি আগামী দুই মাসের মধ্যে ভালো ফলাফল পাবো।
এ বিষয়ে মান্নার স্ত্রী শেলী কাদের ও মামলার বাদী রেজা কাদেরের মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে তাদের পাওয়া যায়নি।
Leave a Reply