1. admin@thedailypadma.com : admin :
জন্মাষ্টমী কি এবং কেন পালন করা হয় ? - দ্য ডেইলি পদ্মা
শনিবার, ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৩:৪৯ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম
নিরপেক্ষতার জন্য তফসিলের আগেই উপদেষ্টা পরিষদ থেকে দুই ছাত্র প্রতিনিধিকে পদত্যাগের দাবি জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় আগামী ২৪ ঘণ্টায় একটি লঘুচাপ সৃষ্টি হতে পারে জাকসু নির্বাচন: সন্ধ্যা নয়, ফলাফল হতে পারে রাত ১০টার পর জাকসু নির্বাচন : দায়িত্ব পালনকালে শিক্ষিকার মৃত্যু কয়েক সপ্তাহ ধরেই চড়া সবজির বাজার এখনো উত্তাপ ছড়াচ্ছে, বেড়েছে মুরগির দাম কোনো ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র হবে না: নেতানিয়াহু ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে নির্বাচনের বিকল্প আমাদের হাতে নেই: প্রধান উপদেষ্টা জাকসুর ভোট গণনা শুরু, প্রদর্শিত হচ্ছে এলইডি স্ক্রিনে এক নজরে বিশ্ব সংবাদ: ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৫ আজকে কোন টিভি চ্যানেলে কোন খেলা

জন্মাষ্টমী কি এবং কেন পালন করা হয় ?

  • Update Time : বুধবার, ৬ সেপ্টেম্বর, ২০২৩
  • ১০৩ Time View

দেখতে দেখতে চলে এলো ভগবান শ্রীকৃষ্ণের জন্মাষ্টমী তিথি ।

জন্মাষ্টমী হল শ্রীকৃষ্ণের জন্ম উদযাপনের একটি হিন্দু উৎসব। এটি প্রতি বছর আগস্ট মাসে পালিত হয়। কৃষ্ণপক্ষের অষ্টমী তারিখ জন্মাষ্টমী পালনের তারিখ। শ্রীকৃষ্ণকে ভগবান বিষ্ণুর দশটি অবতারের মধ্যে সবচেয়ে শক্তিশালী বলে মনে করা হয়। হিন্দুরা জাঁকজমক ও গৌরবের সঙ্গে জন্মাষ্টমী উদযাপন করে। ভগবান শ্রীকৃষ্ণ সম্পর্কে একটু কথা বলা যাক।

প্রতি বছর ভাদ্র মাসের কৃষ্ণপক্ষের অষ্টমীতে উদযাপিত হয় জন্মাষ্টমী । কৃষ্ণভক্তরা ওই দিন আরাধ্যের জন্মদিন ধুমধাম করে উদযাপন করেন এবার জন্মাষ্টমী পড়েছে ১৮ আগস্ট, বৃহস্পতিবার । রোহিণী নক্ষত্রে অষ্টমীতে জন্মগ্রহণ করেছিলেন শ্রীকৃষ্ণ । এ বার জন্মাষ্টমীতে বৃদ্ধি যোগ তৈরি হচ্ছে । তা অত্যন্ত শুভ ও ফলদায়ক বলে মত জ্য়োতিষ বিশেষজ্ঞদের । জন্মাষ্টমীর দিন শ্রীকৃষ্ণের শিশুরূপের পুজো করেন ভক্তরা ।

শুধু মথুরাবৃন্দাবন বা দ্বারকায় নয় জন্মাষ্টমীর উৎসব সারাদেশে ধুমধাম করে উদযাপিত হয় । পশ্চিমবঙ্গে বহু বাড়িতে গোপালকে পুজো করেন গৃহকর্ত্রীরা । ঘরে ঘরে দোলনায় দোল খান গোপাল ।

জন্মাষ্টমীর তারিখ এবং শুভ সময়

এবছর শ্রীকৃষ্ণের “জন্মাষ্টমী” ০৭/০৯/২০২৩ তারিখ বৃহস্পতিবার ।

“উদয়ে তূপবাসস্য নক্তস্যাস্তময়ে তিথিঃ।

মধ্যাহ্ন ব্যপিনী গ্রাহ্যা একভক্তে সদা তিথিঃ।।

উপবাসে উদয়গামিনী তিথি, নক্তব্রতে অস্তগামিনী ও একভক্তে মধ্যাহ্নগামিনী তিথি গ্রহণ ৬ সেপ্টেম্বর দুপুর ৩টা ৩৮ মিনিটে অষ্টমী তিথির সূচনা হবে । শেষ হবে ৭ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যা ৪টে ১৫ মিনিটে । কৃষ্ণ মাঝরাতে জন্মগ্রহণ করেছিলেন । জন্মাষ্টমীর পুজোও মাঝরাতে হয়। এ কারণে ৬ সেপ্টেম্বর পালিত হবে কৃষ্ণ জন্মাষ্টমী। আবার জন্মাষ্টমী পুজোর শুভ সময় মাঝরাত ১২টা ২ মিনিট থেকে ১২টা ৪৮ মিনিট পর্যন্ত ।

উল্লেখ্য এমন তিথির কারণে স্মার্ত ও বৈষ্ণব সম্প্রদায়ের জাতকরা পৃথক পৃথক দিনে জন্মাষ্টমী পালন করবেন । গৃহস্থ অর্থাৎ স্মার্ত সম্প্রদায়ভুক্তর জন্মাষ্টমী পালন করবেন ৬ সেপ্টেম্বর এবং বৈষ্ণব সম্প্রদায় এই উৎসব ৭ সেপ্টেম্বর পালন করবেন । পারণ করা হবে ৭ সেপ্টেম্বর ভোর ৬টা ৯ মিনিটের পর ।

শ্রীকৃষ্ণের জীবন কাহিনী

শ্রীকৃষ্ণ ভগবান বিষ্ণুর অন্যতম অবতার। তিনি প্রায় 5200 বছর আগে হিন্দু ক্যালেন্ডারের ভাদন মাসের অন্ধকার পাক্ষিকের 8 তম দিনে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। তাকে অত্যন্ত শক্তিশালী ঈশ্বর হিসেবে বিবেচনা করা হয়। অশুভ হাতছানি থেকে মুক্ত করার একটি বিশেষ উদ্দেশ্য নিয়ে তিনি পৃথিবীতে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। মহাকাব্য, মহাভারতে তার গভীর প্রভাব ছিল, যেখানে তিনি পাণ্ডবদের পক্ষ নিয়েছিলেন এবং কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধে তাদের বিজয়ের পথ দেখিয়েছিলেন। সারা জীবন তিনি ভক্তি ও কর্মের ধারণা প্রচার করেন।

ভগবান শ্রীকৃষ্ণ জেলে জন্মগ্রহণ করেছিলেন যেহেতু তার বাবা -মাকে তার মামা কংশা কারাগারে রেখেছিলেন। কংসের আশঙ্কা ছিল যে তাদের পিতামাতার অষ্টম সন্তান তাকে হত্যা করবে। কৃষ্ণ অষ্টম সন্তান হলেও তার বাবা বাসুদেব তাকে তার বন্ধু নন্দ দিয়ে কংশের হাত থেকে রক্ষা করেছিলেন। কৃষ্ণ গোকুল সমাজে তার পালক পিতা নন্দ এবং পালক মাতা যশোদার কাছে বড় হয়েছেন। তিনি তার শৈশব এবং যৌবনে বেশ কয়েকটি অসুরকে হত্যা করে বেশ কয়েকটি জাদুকরী অভিনয় দেখিয়েছিলেন এবং তিনি বড় হয়ে একজন শক্তিশালী ব্যক্তি হয়েছিলেন। অবশেষে, তিনি এবং তার ভাই বলরাম একটি যুদ্ধের টুর্নামেন্টের জন্য কংশের প্রাসাদে গিয়েছিলেন, যেখানে কৃষ্ণ কংসকে হত্যা করেছিলেন।

ভগবান শ্রীকৃষ্ণের বেশ কয়েকটি অনুষ্ঠান প্রতিদিন টেলিভিশনে সম্প্রচারিত হয়। আমি ছোটবেলায় তাদের দেখতে পছন্দ করতাম, এবং এখনও। আমি এই বিষয়টা পছন্দ করি যে কৃষ্ণ মাখন খেতে পছন্দ করেন, যা তিনি তার মায়ের রান্নাঘর থেকে চুরি করতেন। এই কারণে, ভগবান শ্রীকৃষ্ণ ‘নটখাত নন্দ লাল’ নামেও পরিচিত। ছোটবেলায় খুব দুষ্টু ছিলেন বলে তাকে নাটখট বলা হতো। তিনি বন্ধু এবং গরুদের সাথে খেলতেন, এবং তাই, তাকে গোবিন্দও বলা হয়।

ভগবান শ্রীকৃষ্ণ ছিলেন অন্ধকারাচ্ছন্ন, বৃষ্টিভেজা মেঘের মত অন্ধকার। ভগবান শ্রীকৃষ্ণের পরম বন্ধু হলেন তার খালা রাধা। ভগবান শ্রীকৃষ্ণের জীবনে রাধা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ভগবান শ্রীকৃষ্ণ তার সাথে সময় কাটাতে ভালোবাসেন। তিনি সুদামার মতো অন্যান্য বন্ধুদের সঙ্গেও সময় কাটাতে ভালোবাসেন।

জন্মাষ্টমী উদযাপন

যেহেতু ভগবান শ্রীকৃষ্ণের জন্ম হয়েছিল রাতে, তাই মানুষ মধ্যরাতে জন্মাষ্টমী উদযাপন করে। মানুষ জন্মাষ্টমী উদযাপনের একটি বিশেষ উপায় অনুসরণ করে। যেহেতু ভগবান শ্রীকৃষ্ণ মাখন খেতে পছন্দ করতেন, তাই মানুষ মাখনের সাথে খেলাধুলা করত। তারা মাখনকে একটি মাটির হাঁড়িতে রাখেন যার নাম মাতকি। বিচারক মাখন ভরা মটকি মাটির অনেক উঁচুতে বেঁধে দেন। মানুষ দলে দলে এই খেলা খেলে। এই লোকেরা এত লম্বা একটি পিরামিড তৈরি করে যে তারা উপরে বাঁধা মটকি পর্যন্ত পৌঁছাতে পারে। অন্যান্য দল তাদের মাতকি পৌঁছাতে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করে। প্রত্যেক দলেরই মাতকি পৌঁছানোর একটি নির্দিষ্ট সময় আছে। যদি কোনো দল সময়ের আগে মাতকিতে পৌঁছাতে ব্যর্থ হয়, তাহলে অন্যান্য দলকে মটকি পৌঁছানোর সুযোগ দেওয়া হয়। এই খেলাটি এতই আকর্ষণীয় যে অনেক মানুষ খেলা দেখতে আসে।

ঘরে ঘরে জন্মাষ্টমী বিভিন্নভাবে উদযাপিত হয়। লোকেরা ঘরের ভিতর এবং বাইরে উভয়ই লাইট দিয়ে সাজায়। তারা বিভিন্ন মন্দিরে পূজা এবং নৈবেদ্য প্রদান করে। জন্মাষ্টমীর প্রাক্কালে, আমরা সকলেই সারা দিনের জন্য মন্ত্র এবং ঘণ্টার শব্দ শুনি। অনেকে ধর্মীয় গান গাইতে এবং নাচতেও ভালোবাসেন। জন্মাষ্টমী হিন্দু ধর্মে অন্যতম আড়ম্বরপূর্ণ এবং আনন্দময় উৎসব হিসাবে বিবেচিত হয়।

জন্মাষ্টমী পুজো বিধি

জন্মাষ্টমীর দিন রাত ১২টায় জন্মগ্রহণ করেছিলেন  শ্রীকৃষ্ণ । এই দিনে শ্রীকৃষ্ণকে দুধ ও গঙ্গাজল দিয়ে স্নান করানো হয়। তার পর পরানো হয় নতুন পোশাক । এরপর ময়ূরের পালক, বাঁশি, মুকুট, চন্দন, মালা, তুলসি ইত্যাদি দিয়ে সাজানো হয় গোপালকে ।  ফল, ফুল, মাখন, মাখন, চিনি, মিষ্টি, শুকনো ফল ইত্যাদি নিবেদন করুন । তার পর শ্রীকৃষ্ণের সামনে প্রদীপ ও ধূপ জ্বালান । শেষে শ্রীকৃষ্ণের শিশুরূপের আরতি করুন । সকলের মধ্যে প্রসাদ বিতরণ করুন ।

জন্মাষ্টমী কেন পালন করা হয় ?

পাপমোচন ও ধর্মসংস্থাপন ও সাধুপরিত্রাণের জন্য ভাদ্রমাসের কৃষ্ণপক্ষের অষ্টমী তিথিতে শ্রীকৃষ্ণের জন্ম ।
এই দিনটিতে ব্রতপালন করলে মনের ও শরীরের ময়লা দূর হয় । সৎগুণের জয় হয় যার ফলস্বরূপ সাধু উদ্ধার হয় ।
সূক্ষ্মার্থে জন্মমৃত্যুর মাঝের অল্প সময়ের জীবনে পাপ থেকে দূরে থাকলে ও সৎ বৃত্তির বিকাশ হলে পৃথিবীতে পাপ ভোগ করতে আসতে হয়না ।

জন্মাষ্টমী পূজার উপকরন

আগের দিন নিরামিষ খেতে হয় ও রাত্রে উপাষ করতে হয় । পরের দিন উপাষ করে রাত্রির প্রথম প্রহরে কৃষ্ণের আরাধনা পূর্বক পূজো করতে হয় । নাড়ু ,ক্ষীর, তালবোড়া, লুচি, মিছরি, মাখন, আতপচাল, তুলসীপাতা, ফুল, সাদাফুল, ফল, দূর্বা, ধূপ দীপ, গব্য, গুড়ি, বর্ণগুঁড়ি, পাট, বালি, মধুপর্কের বাটী, আসন, অঙ্গুরী সহযোগে কৃষ্ণের পূজো করতে হয় । গীতা পাঠ করতে হয় ।

আমরা শ্রীকৃষ্ণের জন্ম দিবস (জন্মাষ্টমী) পালন করি, কিন্তু মৃত্যু দিবস পালন করিনা কেন ?

মৃত্যুদিবস ! কার মৃত্যুদিবস ? পরমেশ্বরের ? ঈশ্বর তো মৃত্যুবরণ করেন নি । তিনি তো লীলা সংবরন করেছিলেন মাত্র । হয়তো আপনারা এবার বলতে পারেন,  যাঁর জন্ম হয়েছে তাঁর মৃত্যুও আছে । হ্যাঁ, ঠিকই তো যার জন্ম আছে তাঁর অবশ্যই মৃত্যু ও আছে ।
কিন্তু সেটি শুধু আমাদের মতো সাধারন মানুষের জন্য । ভগবান তো জন্ম-মৃত্যু রহিত । কিন্তু তা সত্ত্বেও তিনি জীবের কল্যাণে, লোক শিক্ষা প্রদানের জন্য জন্মগ্রহন করেছিলেন । ভগবান কখনও সাধারণ মানুষকে বলেন না, “আমি তোমাদের ভগবান’’ জ্ঞানীরা তা বুঝে নেন । আর যারা তাঁর লীলা বুঝতে সক্ষম তাঁদেরকেই তিনি নিজ মহিমা বলেন । আর বাকিদের জন্য এমন কিছু করে যান যাতে তাঁরা ভগবানকে বুঝতে পারেন ।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
স্বপ্নপূরণের ক্ষণগণনা
অপেক্ষা উদ্বোধনের
দিন
ঘন্টা
মিনিট
সেকেন্ড
© স্বর্বস্বত্ব সংরক্ষিত। এই ওয়েবসাইটের লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Theme Customized By BreakingNews