মাহবুব পিয়াল,ফরিদপুর : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আজকে পদ্মা সেতুতে রেল উপহার দিয়ে গেলাম। আপনারা ফরিদপুর বাসী নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে এ উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখবেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন,আমি জানি ফরিদপুরে কোন বিশ^বিদ্যালয় নাই, ফরিদপুর সবথেকে একটা পুরনো শহর অথচ সব সময় অবহেলিত, ফরিদপুরবাসীর অনেক দিনের আশা একটি বিশ^বিদ্যালয়ের। ইনশাআল্লাহ আগামীতে সরকারে আসতে পারলে ফরিদপুরে একটি বিশ^বিদ্যালয় করে দিব।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মঙ্গলবার (১০ অক্টোবর) বিকালে ফরিদপুরের ভাঙ্গা পৌরসভার ডা. কাজী আবু ইউসুফ স্টেডিয়ামে ফরিদপুর জেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত জনসভায় প্রধান অতিথি হিসাবে বক্তৃতাকালে এ কথা বলেন।
ফরিদপুর জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি শামীম হকের সভাপতিত্বে ও ফরিদপুর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহ মোঃ ইশতিয়াক আরিফের সঞ্চালনায় সভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগ প্রেসিডিয়াম সদস্য কাজী জাফরউল্লাহ, আওয়ামী লীগ প্রেসিডিয়াম সদস্য ও কৃষি মন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক এমপি, আওয়ামী লীগ প্রেসিডিয়াম সদস্য ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, শাহজাহান খান এমপি, কর্নেল (অব) ফারুক খান এমপি, জাহাঙ্গীর কবির নানক, আব্দুর রহমান, আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুল আলম হানিফ এমপি, আফম বাহাউদ্দিন নাসিম, সাংগঠনিক সম্পাদক বিএম মোজাম্মেল হক, এসএম কামাল, মির্জা আজম এমপি, পানি সম্পদ উপমন্ত্রী এনামুল হক শামীম এমপি, যুবলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি শেখ ফজলে শামস পরশ, আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ইকবাল হোসেন অপু এমপি, মারুফা আক্তার পপি, ফরিদপুর-৪ আসনের এমপি ও যুবলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য মজিবুর রহমান চৌধুরী নিক্সন, ফরিদপুর জেলা আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি ফারুক হোসেন ও সাইফুজ্জামান চৌধুরী জুয়েল, ফরিদপুর পৌরসভার মেয়র অমিতাভ বোস, ভাঙ্গা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সাইফুর রহমান মিরন, সাধারণ সম্পাদক আকরামুজ্জামান রাজা প্রমুখ।
প্রধানমন্ত্রী মঙ্গলবার দুপুর ২টা ৪০ মিনিটের দিকে সভা মঞ্চে উপস্থিত হন। বিকাল ৩ টার দিকে তিনি তাঁর বক্তব্য শুরু করেন। প্রায় ২৬ মিনিট বক্তব্য প্রদান করেন। তিনি তাঁর বক্তব্যে বলেন, একটি উপহার নিয়ে আপনাদের সামনে এসেছি। পদ্মা সেতু ও পদ্মা সেতুর উপর দিয়ে রেল লাইন আপনাদের উপহার দিয়ে গেলাম।
তিনি বলেন, জাতির পিতার স্বপ্ন ছিল বাংলার মানুষ উন্নত জীবন পাবে। প্রতিটি মানুষের ঘর শিক্ষার আলোয় আলোকিত করবেন। ৭৫ এর ১৫ আগষ্ট বাঙ্গালি জাতির ইতিহাসে সবচেয়ে কলঙ্কিত দিন। স্বজন হারিয়ে এ দেশে ফিরে এসেছিলাম ৬ বছর পর। যখন আওয়ামী লীগ আমাকে সভাপতি নির্বাচিত করেছিল। একটা প্রত্যয় নিয়ে এসেছিলাম, একটা প্রতিজ্ঞা নিয়ে এসেছিলাম। আমার বাবা এ দেশ স্বাধীন করে দিয়ে গেছেন, সেদেশে মানুষের ভাতের অভাব থাকবে না, কেউ গৃহহীন থাকবে না। প্রত্যেকের ঘরে ঘরে চিকিৎসা সেবাসহ শিক্ষার আলো পৌছে দেব। জিয়া ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ জারি করে বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচারের পথ বন্ধ করেছিল। যুদ্ধাপরাধীদের ক্ষমতায় বসিয়েছিল জিয়াউর রহমান। দেশে আসার পর বোমা হামলা, গুলি, গ্রেনেড অনেক কিছুর মুখোমুখি হয়েছি। কৃতজ্ঞতা জানাই বাংলাদেশের জনগণ, আওয়ামী লীগের নেতা কর্মীদের প্রতি। ৯৬ সালে সরকার গঠন করি। সে সময় দেশের অনেক কিছুর উন্নয়ন করেছিলাম। পরবর্তীতে খালেদা জিয়া ২০০১ সালে ক্ষমতায় এসে সন্ত্রাস, ষড়যন্ত্র, দুর্নীতি, মানিলন্ডারিং, বোমা হামলা, খুন, গুম ঠিক জিয়াউর রহমান যা শুরু করেছিল, এরশাদও তাই করে গেছে, খালেদা জিয়া এসেও তাই করেছে। মানুষের ভোটের অধিকার ছিল না। কমিউনিটি ক্লিনিক পর্যন্ত বন্ধ করে দিয়েছিল। আমরা পুনরায় ক্ষমতায় এসে কমিউনিটি ক্লিনিক চালু করেছি। মা-বোনেরা যাতে পায়ে হেঁটে গিয়ে চিকিৎসা নিতে পারে। প্রত্যেক গ্রামে স্কুলগুলো উন্নত করেছি। প্রত্যেক জেলায় জেলায় বিশ^বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেছি। আমি জানি ফরিদপুরে কোন বিশ^বিদ্যালয় নেই। ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ ছিল ২৫০ বেডের। আমি ক্ষমতায় আসার পর মেডিকেল কলেজ উন্নত করেছি। তিনি আরও বলেন, নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে আমরা স্বাধীনতা পেয়েছি। ইনশাআল্লাহ আগামীতে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসলে ফরিদপুরে একটি বিশ^বিদ্যালয় করে দিব।
গত নির্বাচনের সময় ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার ঘোষণা দিয়েছিলাম। আজ বাংলাদেশ ডিজিটাল। বাংলাদেশে আজ গণতন্ত্র আছে, স্থিতিশীলতা আছে। সমস্ত দেশে ওয়াইফাই কানেকশন আছে। মানুষের পাশে দাড়ানোইতো রাজনীতি।
২০০১ সালে পদ্মাসেতু ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করি। খালেদা জিয়া ক্ষমতায় এসে সেটা বন্ধ করে দেয়। পুনরায় ক্ষমতায় এসে যখন পদ্মা সেতু করতে গেলাম তখন আমাদের দেশের স্বনামধন্য এক ব্যাক্তি ৬০ বৎসর বয়সে ব্যাংকের এমডি পদ টিকিয়ে রাখার জন্য হিলারি ক্লিন্টনকে দিয়ে দুর্নীতির অভিযোগ তুললেন। আমি চ্যালেঞ্জ দিয়ে বললাম, শেখ মুজিবের মেয়ে দুর্নীতি করে না। তার পর আমাদের টাকায় পদ্মা সেতু নির্মাণ করেছি।
তিনি বলেন, আমাদের লক্ষ মানুষের কল্যাণ করা। কোভিডের সময় অনেক ধনী দেশ বিনা পয়সায় টিকা দেয় নাই। আমি কিন্তু কোন দিকে তাকাই নাই। আমি তাকিয়েছি মানুষের দিকে। টাকা পয়সার দিকে তাকাইনি। আওয়ামী লীগ মানুষের জন্য, দেশের কল্যাণের জন্য কাজ করে। আমাদের দেশকে আরও উন্নত করতে চাই।
Leave a Reply