বিশ্বকাপের শুরুটা স্বপ্নের মতো করেছে দক্ষিণ আফ্রিকা। দারুণ ব্যাটিংয়ে শ্রীলঙ্কা, অস্ট্রেলিয়াকে স্রেফ উড়িয়ে দিয়েছে। তার মধ্যে একটিতে তো স্কোর ছিল চারশত ছাড়ানো! সেই দলটাকেই দুঃস্বপ্ন উপহার দিয়েছে নেদারল্যান্ডস। ২০১১ বিশ্বকাপের পর বড় আসরে খেলতে আসা ডাচ দলটি অবিশ্বাস্য নৈপুণ্যে প্রোটিয়াদের ৩৮ রানে হারিয়েছে। তাতে ওয়ানডে বিশ্বকাপটা আরও জমিয়ে দিয়েছে নেদারল্যান্ডস।
শেষের ব্যাটিং আর দারুণ বোলিংয়ে মুগ্ধতা ছড়িয়েছে কমলা শিবির। এর ফলে আফগানিস্তানের পর টুর্নামেন্টের অন্যতম অঘটনের জন্ম দিয়েছে তারা। এই ডাচদের কাছে ২০২২ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপেও প্রোটিয়া দল অঘটনের শিকার হয়েছিল। যা ছিল যেকোনও ফরম্যাটে প্রোটিয়াদের বিপক্ষে ডাচদের প্রথম জয়। মঙ্গলবারও এমনটা হবে তা কে ভেবেছিল? গৌরবময় অনিশ্চয়তার খেলা ক্রিকেটে ডাচ দল শেষের ব্যাটিংয়েই সবাইকে অবাক করে দিয়েছে।
ধর্মশালার হিমাচল প্রদেশ ক্রিকেট স্টেডিয়ামে এই ম্যাচে বৃষ্টির কারণে যথাসময়ে টস অনুষ্ঠিত হয়নি। শেষ পর্যন্ত একঘণ্টা বিলম্বে টস হলেও ম্যাচ মাঠে গড়াতে সময় চলে যায় দুই ঘণ্টারও বেশি। ফলে ওভার কমিয়ে দেওয়া হয় ৭টি করে।৪৩ অভারে ৮ উইকেটে ২৪৫ রানের চ্যালেঞ্জিং সংগ্রহ করে নেদারল্যান্ডস।
২৪৬ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে সাবধানী শুরু করেন দক্ষিণ আফ্রিকার দুই ওপেনার বাভুমা ও ডি কক। প্রথম ওভারটিই মেডেন আদায় করে নেন আরিয়ান দত্ত। ধীরে ধীরে রানের খাতা খুলতে থাকে প্রোটিয়ারা।
প্রথম ৭ ওভারে বিনা উইকেটে ৩২ রান করে। কিন্তু ৮ম ওভারেই প্রোটিয়া শিবিরে প্রথম আঘাত হানেন অ্যাকারম্যান। বিশ্বকাপে দুটি সেঞ্চুরি করা ডি কককে মাত্র ২০ রানেই ফিরিয়ে দেন এই পেসার। শর্ট ফাইনে ডাচ অধিনায়ক এডওয়ার্ডসের হাতে ধরা পড়া তিনি।
ডি ককের বিদায়ের পর যেন তাসের ঘরের মত ভেঙে পড়তে থাকে দক্ষিণ আফ্রিকার ব্যাটিং লাইন-আপ। ১০ম ওভারের প্রথম বলেই ৩১ বলে মাত্র ১৬ রান করা অধিনায়ক বাভুমাকে বোল্ড করেন দক্ষিণ আফ্রিকায় জন্ম নেওয়া ক্রিকেটার ভ্যান ডার মারওয়ে।
১১তম ওভারে দ্বিতীয় বলে প্রোটিয়াদের হয়ে প্রথম ম্যাচের সেঞ্চুরিয়ান মারকরামকে বোল্ড করেন ভ্যান মেকেরেন। এরপরের ওভারেই আবার প্রোটিয়া শিবিরের দম্ভ চূর্ণ করে দেন ভ্যান ডার মারওয়ে। দারুণ ফর্মে থাকা ভ্যান ডার ডুসেনকে ব্যক্তিগত ৪ রানে ফিরিয়ে দেন তিনি। মুহূর্তের মধ্যে প্রোটিয়ারা ৩৬ রানে বিনা উইকেট থেকে ৪২ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে বসে।
এরপর ক্রিজে এসে ক্লাসেন ও ডেভিড মিলার কিছুটা বিপর্যয় সামাল দেওয়ার চেষ্টা করেন। কিন্তু এই সাময়িক প্রতিরোধও বেশিক্ষণ স্থায়ী হতে দেয়নি ডাচ বোলাররা। দুইজনের ৪৫ রানের জুটিতে ফাটল ধরান ভ্যান বিক। ফাইন লেগে ভিকরমজিৎ সিংয়ের হাতে ক্যাচ দিয়ে ২৮ বলে ২৮ রান করে প্যাভিলিয়নে ফেরেন তিনি।
আবারো বিপর্যয়ে পড়ে প্রোটিয়ারা। ইনিংসের ২৫তম ওভারর শেষ বলে ২৫ বলে ৯ রান করে কোনোমতে টিকে থাকা মার্কো ইয়ানসেনকে বোল্ড করেন অভিজ্ঞ পেস বোলার ভ্যান মেকেরেন।
তখনও ক্রিজের একপ্রান্তে আগলে ছিলেন ডেভিড মিলার। কোয়েটজেকে সঙ্গে নিয়ে তিনি ৩৬ রানের জুটি গড়েন। কিন্তু দলকে আর বিপদে রেখে তিনিও বিদায় নেন। ৫২ বলে ৪৩ রান করে ভ্যান বিকের বলে বোল্ড হন এই বা হাতি মারকুটে ব্যাটসম্যান।
মিলারের আউটের পর কার্যত শেষ হয়ে যায় প্রোটিয়াদের ম্যাচে ফেরা। কোয়েটজে ২৩ বলে ২২ রান করলে তা কেবল হারের ব্যবধানই কমিয়েছে প্রোটিয়াদের। তবে ডাচদের বিরুদ্ধে অলআউটের লজ্জায় ডুবতে হয়নি প্রোটিয়াদের। নির্ধারিত ৪৩ ওভারে সবকটি উইকেট হারিয়ে ২০৭ রান করে দক্ষিণ আফ্রিকা। কেশব মাহারাজ ৪০ রানে শেষ ব্যাটসম্যান হিসেবে আউট হন। ডাচদের হয়ে ভ্যান বিক ৩ উইকেট, ভ্যান ম্যাকেরেন, ভ্যান মারওয়ে, ডি লিড ২টি করে উইকেট নেন।
এর আগে টস জিতে নেদারল্যান্ডসকে ব্যাটিং করার আমন্ত্রণ জানান প্রোটিয়া অধিনায়ক টেম্বা বাভুমা। ২৭ ওভারে ১১২ রান তুলতে ৬ উইকেট হারিয়ে বসেছিল ডাচরা। সেখান থেকে তারা দাঁড় করালো ২৪৫ রানের পুঁজি, ৪৩ ওভারেই!
নেদারল্যান্ডসকে এই বড় রান এনে দেওয়ার কারিগর অধিনায়ক স্কট এডওয়ার্ডস। ৬৯ বলে ১০ চার আর ১ ছক্কায় ৭৮ রানের হার না মানা এক ইনিংস খেলেন তিনি।
এছাড়া শেষদিকে রয়্যালফ ফন ডার মারউই ১৯ বলে ২৯ আর আরিয়ান দত্ত ৯ বলেই ৩ ছক্কায় খেলেন অপরাজিত ২৩ রানের ইনিংস। দক্ষিণ আফ্রিকার লুঙ্গি এনগিদি, মার্কো জানসেন আর কাগিসো রাবাদা নেন দুটি করে উইকেট।
<p>সম্পাদক: মো:রোকন উদ্দিন রুমন </p><p>লেখক: আবদুল্লাহ যায়েদ তানজিন </p><p>উপদেষ্টা: মো: মোশাররফ হোসেন </p><p>thedailypadma@gmail.com<br></p><p> বার্তা কার্যালয়: দক্ষিন কমলাপুর,ফরিদপুর সদর, ফরিদপুর। </p><p>মোবাইল:০১৭১১১৪৮৯৫১, ০১৯১১৩০৩২২৯ ইমেইল: thepadma24@gmail.com<br></p>
© স্বর্বস্বত্ব সংরক্ষিত। এই ওয়েবসাইটের লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।