আইসিসি ওয়ানডে বিশ্বকাপের মহাগুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে ভারতের বিপক্ষে মাঠে নেমেছে ইংল্যান্ড। সেখানে আগে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ৫০ ওভারের খেলা শেষে ৮ উইকেট হারিয়ে ২২৯ রান সংগ্রহ করে স্বাগতিক ভারত। ফলে ইংল্যান্ডের লক্ষ্য দাঁড়ায় ২৩০ রান। এই টার্গেটে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ৫০ ওভারের ৩৪.৪ ওভারে সবগুলো উইকেট হারিয়ে ১২৯ রানে অলআউট হয়ে ১০০ রানের বিশাল ব্যবধানে হেরেছে ইংরেজরা।
রোববার (২৯ অক্টোবর) ভারতরত্ন শ্রী অটল বিহারী বাজপেয়ী ক্রিকেট স্টেডিয়ামে লখনৌয়ে ভারতের দেয়া ২৩০ রানের টার্গেটে ইংল্যান্ডের হয়ে ইনিংস উদ্বোধন করেন জনি বেয়ারস্টো ও ডেভিড মালান। এই দুই জন ভারতীয় বোলারদের দেখে-শুনে খেলে ৩০ রানের জুটি গড়েন। নিজের ব্যক্তিগত তৃতীয় ওভারে ইলিংশ শিবিরে ভিত নাড়া দেন জাসপ্রিত বুমরার।
দলীয় ৪.৫ ওভারে জাসপ্রিত তার বলে বোল্ড হয়েছেন ওপেনিং নামা ডেভিড মালান। এ সময় তিনি করেন ১৭ বলে ১৬ রান। এরপর মাঠে নামা জো রুটও পরের বলে আউট করেন তিনি। দলীয় ৪.৬ ওভারে জাসপ্রিত বুমরারে বলে এলবিডব্লিউর শিকার হয়েছেন রুট। রুটের চলে যাওয়ার পর একই পথে ফিরেছেন বেন স্টোকসও। দলীয় ৭.৬ ওভারে মোহাম্মদ শামির বলে বোল্ড হয়ে প্যাভিলিয়নের পথে হাঁটা দেন বেন স্টোকস। শূন্য রানে আউট হয়েছেন তিনি। এরপর মাঠে নামেন জস বাটলার (অধিনায়ক)।
উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে ইংল্যান্ড। দেখে-শুনে খেলতে গিয়ে আউট হয়েছেন ওপেনিংয়ে নামা জনি বেয়ারস্টোও। দলীয় ৭.৬ ওভারে মোহাম্মদ শামির বলে বোল্ড হয়ে প্যাভিলিয়নের পথে হাঁটা দেন ওপেনিংয়ে নামা জনি বেয়ারস্টোও। যাওয়ার আগে তিনি করেন ২৩ বলে ১৪ রান। এরপর মাঠে নামেন মঈন আলী। এরই মধ্যে দেখে-শুনে খেলতে গিয়ে ভুল করে বসেন অধিনায়ক জস বাটলার। তিনিও বেশিক্ষণ পিচে থিতু হতে পারেননি।
দলীয় ১৫.১ ওভারের কুলদীপ যাদবের বলে বোল্ড হয়ে ফিরেছেন বাটলার। যাওয়ার আগে তিনি করেন ২৩ বলে ১০ রান। এরপর মাঠে নামেন লিয়াম লিভিংস্টোন। তাকে সঙ্গ দেন মঈন আলী। এই দুইজন দেখে-শুনে গড়ে ২৯ রানের জুটি। এরই মধ্যে ভুল করেন মঈন।
দলীয় ২৩.১ ওভারে মোহাম্মদ শামির বলে লোকেশ রাহুলের হাতে ক্যাচ তুলে দিয়ে প্যাভিলিয়নের পথে ফিরেন মঈন আলী। এ সময় তিনি করেন ৩১ বলে ১৫ রান। এরপর মাঠে নামেন ক্রিস ওকস। তিনিও বেশিক্ষণ পিচে থিতু হতে পারেননি। যাওয়ার আগে তিনি করেন ২০ বলে ১০ রান।
শেষ দিকে লিয়াম লিভিংস্টোন (২৭) ও ডেভিড উইলি ১৬ রানও ইংল্যান্ডের হার এড়ানোর জন্য যথেষ্ট ছিল না। ফলে মাত্র ৩৪.৫ ওভারে সব কয়টি হারিয়ে ১২৯ রানে গুটিয়ে যায় ইংলিশরা। ফলে ১০০ রানের জয় পায় স্বাগতিক ভারত।
এদিন ভারতের হয়ে একাই চার উইকেট নেন মোহাম্মদ শামি। এতে তিনি খরচ করেন ২২ রান। তিন উইকেট নিয়েছেন জাসপ্রিত বুমরা। এছাড়া জোড়া উইকেট নেন কুলদীপ যাদব এবং একটি উইকেট নেন রবীন্দ্র জাদেজা।
এর আগে টসে হেরে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে ৪০ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে কোণঠাসা হয়ে যায় ভারত।
ইংল্যান্ডের তারকা পেসার ক্রিস ওকসের গতির শিকার হয়ে ফেরেন ওপেনার শুভগামন গিল ও শ্রেয়াস আইয়ার। দুর্দান্ত ফর্মে থাকা বিরাট কোহলিকে শূন্য রানে সাজঘরে ফেরান পেসার ডেভিড উইলি।
৪০ রানে ৩ উইকেট পতনের পর দলের হাল ধরেন রোহিত শর্মা ও লোকেশ রাহুল। চতুর্থ উইকেটে তারা ১১১ বলে ৯১ রান করেন।
একটা সময়ে ৩ উইকেটে ভারতের সংগ্রহ ছিল ১৩১ রান। তখন মনে হয়েছিল চ্যালেঞ্জিং স্কোরের পথেই এগোচ্ছে ভারত।
কিন্ত এরপর ফের ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়ে বিশ্বকাপের স্বাগতিকরা। মাত্র ৫২ রানের ব্যবধানে ভারত হারায় ৪ উইকেট।
৩৯ রানে ফেরেন রোকেশ রাহুল। ১০১ বলে ১০টি চার আর এক ছক্কায় দলীয় সর্বোচ্চ ৮৭ রান করে ফেরেন অধিনায়ক রোহিত শর্মা। ৮ ও ১ রান করে ফেরেন অলরাউন্ডার রবিন্দ্র জাদেজা ও পেস বোলার মোহাম্মদ শামি।
দলের এমন ব্যাটিং বিপর্যয়ে শেষ দিকে দায়িত্বশীল ইনিংস খেলেন সুরাইয়া কুমার যাদব। তিনি দলীয় ২০৮ রানে অষ্টম ব্যাটসম্যান হিসেবে ফেরার আগে ৪৭ বলে করেন ৪৯ রান।
ইনিংসের একিবারে শেষ দিকে পেসার জসপ্রিত বুমরাহ ও স্পিনার কুলদিব যাদবের ব্যাটে শেষ পর্যন্ত ৯ উইকেট হারিয়ে ২২৯ রানে ইনিংস গুটায় ভারত।
ইংল্যান্ডের হয়ে তিনটি উইকেট নেন ডেভিড উইলি। এতে তিনি খরচ করেন ৪৫ রান। এরপর জোড়া উইকেট নেন ক্রিস ওকস ও আদিল রশিদ। আর একটি উইকেট নেন মার্ক উড।
Leave a Reply