ঢাকা জেলার ২০টি নির্বাচনী আসনে আওয়ামী লীগ, জাতীয় পার্টি, জাকের পার্টি, মুক্তিজোটসহ মোট ৩৪ জন প্রার্থী মনোনয়পত্র প্রত্যাহার করেছেন।
তাদের মধ্যে ঢাকা-১৭ আসনে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের (জিএম কাদের), কো-চেয়ারম্যান ও মহিলা জাতীয় পার্টির সভাপতি সালমা ইসলাম, ঢাকা-৬ আসনে বর্তমান সংসদ সদস্য কাজী ফিরোজ রশিদসহ জাতীয় পার্টির ৬ এবং ঢাকা-১৮ আসন থেকে আওয়ামী লীগের প্রার্থী সংসদ সদস্য মোহাম্মদ হাবিব হাসান মনোনয়ন প্রত্যাহার করেছেন।
এছাড়া ঢাকার সব কয়টি আসন থেকে জাকের পার্টি প্রার্থীরা মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেছেন। ফলে এ আসনগুলোতে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর সংখ্যা দাঁড়াল ১৬১ জন।
রবিবার (১৭ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় ঢাকা বিভাগীয় কমিশনার ও ঢাকা রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. সাবিরুল ইসলাম এবং ঢাকা জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের অতিরিক্ত নির্বাচন কমিশনার ফরিদ আহমেদ এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
ঢাকা বিভাগীয় কমিশনার ও ঢাকা রিটার্নিং কর্মকর্তা সাবিরুল ইসলাম বলেন, আপিল শুনানির পর এই ১৫ আসনে ১৫২ জন বৈধ প্রার্থী ছিলেন। তাঁদের মধ্যে আজ ২৭ জন প্রার্থিতা প্রত্যাহার করেছেন। এছাড়া ঢাকার বাকি ৫টি আসনে ৪৩ জন বৈধ প্রার্থী ছিলেন। তাদের মধ্যে ৭ জন প্রার্থিতা প্রত্যাহার করেছেন।
ঢাকা জেলা প্রশাসন, বিভাগীয় কার্যালয় ও রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে জানা যায়, ১৯৫ প্রার্থীর মধ্যে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেছেন ঢাকা-১ আসনে মুক্তিজোটের আব্দুর রহিম এবং জাকের পার্টির মো. লুৎফর রহমান খান, ঢাকা-২ আসনে জাকের পার্টির আবুল কালাম, ঢাকা- ৩ আসনে জাকের পার্টির আব্দুল রাজ্জাক, জাতীয় পার্টির হাজী ফারুক, ঢাকা-৪ আসনে জাকের পার্টির মো. রবিউল ইসলাম, ঢাকা-৫ আসনে জাতীয় পার্টির মীর আব্দুস সবুর, স্বতন্ত্র প্রার্থী কাজী মনিরুল ইসলাম, ঢাকা-৬ আসনে জাতীয় পার্টির কাজী ফিরোজ রশিদ, জাকের পার্টির তারিকুল ইসলাম, স্বতন্ত্র প্রার্থী তারিকুল ইসলাম, ঢাকা-৭ আসনে জাতীয় পার্টির তারেক আহমেদ আদেল, জাকের পার্টির বিপ্লব চন্দ্র বনিক, ঢাকা-৮ আসনে জাকের পার্টির মো. নজরুল ইসলাম লিটন, ঢাকা-৯ আসনে জাতীয় সমাজতান্তিক দলের (জাসদ) নীলঞ্জনা রিফাত, জাকের পার্টির মোহাম্মদ মফিজ উল্লাহ, ইসলামী ঐক্যজোটের মো. লোকমান শেখ, ঢাকা-১০ আসনে জাকের পার্টির মো. হুমায়ুন কবির, ঢাকা-১১ আসনে জাকের পার্টির মো. মাসুদ রানা, ঢাকা-১২ আসন থেকে জাকের পার্টির হুমায়ুন কবির, ঢাকা-১৩ আসনে জাতীয় পার্টির মোহাম্মদ শফিকুল ইসলাম, ঢাকা-১৪ আসনে জাতীয় পার্টির মোহাম্মদ শফিকুল ইসলাম, জাতীয় পার্টির (জেপি) শেখ শহিদুল ইসলাম, জাকের পার্টির মো. জাকির হোসেন, ঢাকা-১৫ আসনে জাকের পার্টির মাইনুল ইসলাম, ঢাকা-১৬ আসনে জাকের পার্টির আমিনুল ইসলাম, ঢাকা-১৭ আসনে জাতীয় পার্টির গোলাম মোহাম্মদ কাদের (জিএম কাদের), সালমা হোসেন, জাকের পার্টির কাজী মো. রাশিদুল হাসান, সাংস্কৃতিক মুক্তিজোটের নাজমুন নাহার, ঢাকা-১৮ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী মোহাম্মদ হাবিব হাসান, জাকের পার্টির মো. শরিফ হাসান, ঢাকা- ১৯ আসনে জাকের পার্টির মো. শামসুদ্দিন আহমেদ ও ঢাকা-২০ আসনে জাকের পার্টির সাইদুর রহমান।
এদিকে রাজধানীর সেগুনবাগিচার বিভাগীয় কমিশানরের কার্যালয় থেকে ঢাকা-১৫ আসন থেকে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করা জাকের পার্টির স্থায়ী কমিটির সদস্য কাজী মো. রাশেদুল হাসান সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা ৩০০ আসনে প্রার্থী দিয়েছিলাম। বিভিন্ন কারণে কিছু প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দিতে পারেননি। ২১৮ আসনে আমাদের প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বৈধ ছিল।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমি ভেবেছিলাম নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টির সঙ্গে জাকের পার্টির প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে। কিন্তু গতকাল পর্যন্ত দেখা গেল, নির্বাচনের আসন ভাগাভাগি হয়ে গেছে। এতে জাকের পার্টির জনপ্রিয়তা যাচাইয়ের সুযোগ নষ্ট হয়েছে। তাই হাই কমান্ডের নির্দেশে আমিসহ আমাদের ঢাকার প্রার্থীরা মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করে নিয়েছেন। ঢাকা-৫ আসনে জাকের পার্টির কোনো প্রার্থী ছিল না আর ঢাকা-১৩ আসনে ঋণখেলাফির অভিযোগে প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়।’
বেশিরভাগ আসনে জাকের পার্টির প্রার্থীরা মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করে নিয়েছেন জানিয়ে কাজী মো. রাশেদুল হাসান বলেন, কিছু আসনে প্রার্থী থাকবে কি-না সেটি দলের শীর্ষ নেতারা সিদ্ধান্ত নেবেন। কিন্তু আমরা বেশিরভাগ প্রার্থী মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করে নিয়েছি।’
এর আগে গত ৪ ডিসেম্বর জেলার রির্টানিং কর্মকর্তা ঢাকার ২০টি আসনে মোট ১৯৫ জন প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বৈধ ঘোষণা করেন।
Leave a Reply