মাহবুব পিয়াল, ফরিদপুর থেকে : বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমীর ডা: শফিকুর রহমান বলেছেন, আমাদের মাবুদের একান্ত মেহেরবানী এদেশের মানুষকে সাড়ে ১৫ বছরের জগদ্দল পাথরের নিচে চাপা পড়া মানবতাকে আল্লাহ উদ্ধার করেছেন ,২০২৪ সালে ৫ আগস্ট আমাদের কলিজার টুকরা সন্তানদের নেতৃত্বে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃত্বের মধ্য দিয়ে এদেশের মানুষকে স্বৈরাচার হাত থেকে মুক্ত করেছে, আমাদের সন্তানদের জন্য আমরা গর্বিত, আমাদের সকল ভালোবাসা তাদের জন্য, আমরা তাদেরকে স্যালুট জানাই, সাড়ে ১৫ বছর আমরা আন্দোলন করেছি, কখনো দফায় দফায় কখনো যুগোপথ কিন্তু আমরা আন্দোলনে পরিসমাপ্তি আনতে পারিনি আনতে পেরেছে আমাদের সন্তানেরা। আল্লাহ আমাদেরকে এমন সন্তান দিয়েছে সেজন্য মাবুদের কাছে শুকরিয়া আদায় করি। এই লড়াইয়ে যারা দুনিয়া থেকে বিদায় নিয়েছেন তাদের ঋণ যেন এ জাতিকে পরিষদ করার তৌফিক দান করেন। তিনি রবিবার (১ডিসেম্বর) বিকেলে ফরিদপুরের সরকারী রাজেন্দ্র কলেজ মাঠে জেলা জামায়াতে কর্মী সম্মেলনে এ কথা বলেন।
ডা: শফিকুর রহমান বলেন, বিগত ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকার দেশের জনগণের উপর জুলুম,অত্যাচারের স্টিমরোলার চালিয়েছিল৷ বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ছিল গত সরকারের জুলুমের প্রধান টার্গেট। জামায়াতে ইসলামীর অনেক নেতাকে জুডিশিয়াল ক্যু এর মাধ্যমে হত্যা করেছে৷এরমধ্যে ফরিদপুরের দুই কৃতি সন্তান তৎকালীন জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ এবং সাবেক জেনারেল সেক্রেটারি আব্দুল কাদের মোল্লাকে অন্যায়ভাবে ফাঁসি দিয়ে হত্যা করা হয়েছে।
এছাড়া ২০০৬ সালের ২৮ অক্টোবরে লগি-বৈঠা দিয়ে জামায়াতে ইসলামীর নেতাকর্মীদের হত্যা করা হয়েছে এবং ২০০৯ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি পিলখানায় ৫৭ জন চৌকস ও দেশপ্রেমিক সেনা কর্মকর্তাকে হত্যা করা হয়েছে৷ আগামীতে জামায়াত ক্ষমতায় এলে এই ঘটনার সাথে জড়িত সবার বিচার করা হবে৷ বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী দেশকে ন্যায়বিচার ও ভ্রাতৃত্বের ভিত্তিতে কল্যাণ রাষ্ট্র হিসেবে গড়ে তুলতে বদ্ধপরিকর। এজন্য দেশে ইসলামী শাসনব্যাবস্থা কায়েম করার জন্য নেতাকর্মীদেরকে জনগণের ঘরে ঘরে গিয়ে ইসলামী শাসনব্যাবস্থা সম্পর্কে অবগত করার আহ্বান জানান। এছাড়া গত ৫ আগস্টের জনতার বিপ্লবে শহীদ হওয়া প্রতিটি নাগরিককে শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করে তাদের রুহের মাগফেরাত কামনা করেন। চিরজীবন এদেশের ছাত্র সমাজের প্রতি কৃতজ্ঞ থাকা অঙ্গীকার করেন৷ এছাড়া শিক্ষাব্যবস্থার আধুনিকায়ন করে সাজাতে চান যাতে শিক্ষাজীবন শেষে ছাত্রসমাজকে বেকার বসে থাকতে না হয়।এছাড়া তিনি দেশের নারী সমাজের উদ্দেশ্যে বলেন, আমাদের বিরুদ্ধে কুৎসা রটানো হয় যে আমরা ক্ষমতায় গেলে দেশের আমাদের মা-বোনদেরকে ঘরে আবদ্ধ করে রাখব৷ তিনি এসব অভিযোগকে ভিত্তিহীন বলেন। বাংলাদেশকে একটি ন্যায় ভিত্তিক কল্যাণ রাষ্ট্রে পরিণত করার আশাবাদ ব্যক্ত করেন৷ ফরিদপুরের মাটিকে জামায়াতে ইসলামীর দুর্গ হিসেবে গড়ে তোলার জন্য নিরলসভাবে কাজ করার আহবান জানান। বলেন সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় বাংলাদেশকে একটি উন্নত দেশ হিসেবে গড়ে তোলা সম্ভব এজন্য সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। এবং ভবিষ্যতে ফ্যাসিবাদ কোন শক্তি যেন মাথা ছাড়া দিয়ে উঠতে না পারে এদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে।
ফরিদপুর জেলা জামায়াতে ইসলামের আমীর মাওলামা মোহাম্মদ বদরুদ্দিন এর সভাপতিত্বে সম্মেলনে বিশেষ অতিথি ছিলেন সহকারি সেক্রেটারি জেনারেল ও সাবেক এমপি এ এইচ এম হামিদুর রহমান আযাদ ।এসময় জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য মোবারক হোসেন, কেন্দ্রীয় মজলিশের শুরা সদস্য প্রফেসর আব্দুত তাওয়াব,শামসুল ইসলাম আল বরাটি, জেলা জামায়াতের নায়েবে আমির ইমতিয়াজ আহমেদ, জেলা জামায়াতের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল ওয়াহাব, সদর উপজেলা জামাতের আমির জসিম উদ্দিন সহ নেতাকর্মীগন উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে কর্মী সমাবেশে অংশগ্রহণের জন্য বিভিন্ন স্থান থেকে একাধিক মিছিল সমাবেশ স্থলে এসে উপস্থিত হয়।
Leave a Reply