1. admin@thedailypadma.com : admin :
পাকিস্তানি গুপ্তচর সন্দেহে একের পর এক গ্রেফতার ভারতে - দ্য ডেইলি পদ্মা
রবিবার, ১৫ জুন ২০২৫, ০১:৩৬ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম
ঢাকায় অতিবর্ষণের সতর্কতা, পাহাড়ি এলাকাগুলোতে ভূমিধ্বসের শঙ্কা: আবহাওয়া অধিদপ্তর নেতানিয়াহু একটি জাতিকে ধ্বংস করছে, ভারত তাকে সমর্থন ও উৎসাহও দিচ্ছে: প্রিয়াঙ্কা ইসরায়েলি ড্রোন হামলায় এবার ইরানের পুলিশপ্রধান নিহত ব্রিটিশ সরকার পাচার হওয়া অর্থ উদ্ধারে ‘অত্যন্ত সহায়ক’ ভূমিকা পালন করছে: প্রধান উপদেষ্টা ইরানের নতুন বিমানবাহিনী প্রধানের নাম ঘোষণা একটি দলের প্রতি বিশেষ অনুরাগ প্রকাশ করেছেন প্রধান উপদেষ্টা : জামায়াত মধ্যপ্রাচ্যে সব মার্কিন সাম‌রিক ঘাঁ‌টি সক্রিয় করেছে যুক্তরাষ্ট্র ইরাকের দূতাবাস থেকে কর্মী সরাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র অপারেশন ‘ট্রু প্রমিজ থ্রি’ শুরু করে ইসরায়েলে বড় ধরনের ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে ইরান ইসরায়েলকে বাঁচাতে এলে তাদের ওপরও হামলা করবে ইরান

পাকিস্তানি গুপ্তচর সন্দেহে একের পর এক গ্রেফতার ভারতে

  • Update Time : বুধবার, ২১ মে, ২০২৫
  • ১৬ Time View

পাকিস্তানের হয়ে গুপ্তচরবৃত্তি করা সন্দেহে স্থানীয় এক ইউটিউবার, একজন ব্যবসায়ী ও এক ছাত্রসহ ১০ জনেরও বেশি নারী-পুরুষকে গ্রেফতার করেছে ভারতের পুলিশ। পাঞ্জাব, হরিয়ানা, উত্তরপ্রদেশসহ একাধিক রাজ্যে অভিযান চালিয়ে এদের আটক করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন বিবিসির সংবাদদাতারা। ভারতীয় গণমাধ্যমও বিষয়টি নিয়ে প্রতিবেদন করেছে।

ধৃতদের মধ্যে সবথেকে বেশি আলোচনা হচ্ছে ভারতের উত্তরাঞ্চলীয় রাজ্য হরিয়ানার বাসিন্দা জ্যোতি মালহোত্রার নাম। তিনি পর্যটন সংক্রান্ত ভ্লগ বানান। মালহোত্রা তার ‘ট্র্যাভেল ভ্লগ’ বানানোর জন্য বেশ কয়েকবার পাকিস্তানে গেছেন বলে জানা গেছে। তার সর্বশেষ যাত্রাটি ছিল এবছরেরই মার্চ মাসে।

হরিয়ানা পুলিশের অভিযোগ, দিল্লিতে পাকিস্তান দূতাবাসের এক কর্মকর্তার সঙ্গে যোগাযোগ ছিল তার। ওই কর্মকর্তাকে ভারত থেকে কিছুদিন আগে বহিষ্কার করা হয়েছে।

মালহোত্রার বাবা অবশ্য তার মেয়ের বিরুদ্ধে ওঠা গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছেন, প্রয়োজনীয় অনুমতি নিয়েই তিনি পাকিস্তানে গিয়েছিলেন।

জ্যোতি মালহোত্রার ব্যাপারে কী জানা যাচ্ছে?

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নিজের বর্ণনা দিতে গিয়ে মালহোত্রা জানিয়েছিলেন তিনি, পুরনো ধ্যানধারণা আছে এমন এক আধুনিক নারী। ইউটিউবে তার সাবস্ক্রাইবারের সংখ্যা তিন লক্ষ ৭৭ হাজার আর ইনস্টাগ্রামে এক লক্ষ ৩৩ হাজার মানুষ তাকে ফলো করেন।

পুলিশ কর্মকর্তারা প্রশ্ন তুলেছেন যে বাংলাদেশ, চীন, থাইল্যান্ড, সংযুক্ত আরব আমিরাত, ইন্দোনেশিয়াসহ বিশ্বের নানা দেশে ভিডিও করার জন্য তিনি যে ঘুরে বেড়াতেন, তার অর্থায়ন কীভাবে হত।

তিনি ভারতেরও বেশ কয়েকটি ধর্মীয় ও পর্যটন কেন্দ্রে ঘুরেছেন। পুলিশ বলছে যে তার জ্ঞাত আয়ের উৎসের সঙ্গে এই ব্যয় মিলছে না।

পুলিশের দাবি, জ্যোতি মালহোত্রা পাকিস্তানি গোয়েন্দাদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখতেন এবং একজন পাকিস্তানি নাগরিকের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখতেন।

হরিয়ানার হিসার জেলার পুলিশ সুপার শশাঙ্ক কুমার সাওয়ান সংবাদ সংস্থা এএনআইকে জানিয়েছেন, পেহেলগাম হামলার সঙ্গে মিজ মালহোত্রার কোনো যোগাযোগ আছে কিনা তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

সাওয়ান এও বলেছেন, মালহোত্রার সঙ্গে সহযোগিতা করতেন, এমন কয়েকজনের ব্যাপারে কিছু সূত্র পেয়েছেন। তবে ওইসব ব্যক্তিদের পক্ষে সরাসরি সামরিক বাহিনী সংক্রান্ত কোনও তথ্য পাওয়া সম্ভব ছিল না।

তিনি অন্যান্য ইউটিউবারদের সঙ্গে তার যোগাযোগ ছিল.. তার পাকিস্তান সফরগুলোর খরচ অন্য কেউ বহন করেছিল।

পাকিস্তানি দূতাবাসে যোগাযোগ ছিল জ্যোতির

দিল্লি থেকে বিবিসি নিউজের সংবাদদাতা নিয়াজ ফারুকি জানাচ্ছেন যে, দিল্লিতে পাকিস্তান দূতাবাসের কর্মকর্তা আহসান-উর-রহিমের সঙ্গে ধৃত জ্যোতি মালহোত্রার যোগাযোগ ছিল বলে অভিযোগ তোলা হয়েছে।

রহিমকে ১৩ মে ভারত ছাড়ার নির্দেশ দেয় ভারতের সরকার। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল যে তিনি এমন কিছু কাজ করছেন, যা তার সরকারি পদের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়।

ওই নির্দেশের পরেই জ্যোতি মালহোত্রাকে গ্রেফতার করা হয়, জানিয়েছেন নিয়াজ ফারুকী।

ওই পাকিস্তানি কর্মকর্তাকে ভারত বহিষ্কার করার পরেই ইসলামাবাদের ভারতীয় দূতাবাসের এক কর্মকর্তা বহিষ্কৃত হন সেদেশ থেকে। এ ক্ষেত্রেও কারণ হিসাবে পাকিস্তান সরকার জানিয়েছিল, যে তার আনুষ্ঠানিক পদমর্যাদার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়, এমন কাজে লিপ্ত রয়েছেন তিনি।

জ্যোতি মালহোত্রার বিরুদ্ধে পুলিশের দায়ের করা অভিযোগে বলা হয়েছে, ২০২৩ সালে পাকিস্তান সফরের ভিসা চেয়ে দিল্লিতে পাকিস্তান দূতাবাসে আবেদন করার সময়েই প্রথমবারের মতো আহসান-উর-রহিমের সঙ্গে পরিচয় হয় মালহোত্রার।

পাকিস্তান নিয়ে তার সাম্প্রতিকতম ভিডিওটি মার্চ মাসে আপলোড করা হয়েছিল, যেখানে তাকে দিল্লিতে পাকিস্তান দূতাবাসে এক রমজানের নৈশভোজে অংশ নিতে দেখা যায়।

পাকিস্তানের অন্যান্য ভিডিওতে তাকে হিন্দু ও শিখ মন্দির, বিখ্যাত স্থানীয় বাজারগুলোতে ঘুরতে দেখা গেছে এবং স্থানীয় মানুষদের সঙ্গে তাকে কথা বলতেও দেখা যায়।

পাঞ্জাব থেকে ধৃত আরেক নারী

পাঞ্জাবের মলেরকোটলা থেকে এক নারীসহ দুজনকে গ্রেফতারের কথা আগেই জানিয়েছিল পাঞ্জাব পুলিশ।

বিবিসির সংবাদদাতা চরণজীব কৌশল জানাচ্ছেন, পাকিস্তান দূতাবাসের এক কর্মকর্তার কাছে তথ্য পাচার করার অভিযোগে এদের গ্রেফতার করা হয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে।

পাঞ্জাব পুলিশের মহানির্দেশক গৌরব যাদব নিজে এ নিয়ে এক্স হ্যান্ডেলে লিখেছিলেন। তিনি জানিয়েছিলেন, ধৃতদের নাম গজালা এবং ইয়ামিন মুহাম্মদ। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জানতে পেরেছে যে গোপন তথ্য সরবরাহ করে তারা অনলাইনে অর্থ পেতেন।

এই দুজন সমানে তাদের হ্যান্ডলারদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখতেন এবং তাদের নির্দেশ মতো স্থানীয় এজেন্টদের মধ্যে অর্থ বিলি বণ্টন করতেন, এমনটাও জানিয়েছেন পুলিশ মহানির্দেশক। তিনি সোমবার আরও একটি সংবাদ প্রকাশ করেছেন নিজের এক্স হ্যান্ডেলে।

যাদব লিখেছেন, সুখপ্রীত ও করণবীর সিং নামে দুজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ যে অপারেশন সিন্দুর চলাকালীন তারা সেনাবাহিনীর চলাচলের খবর এবং পাঞ্জাব, হিমাচল প্রদেশ ও ভারত শাসিত কাশ্মীরের কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাগুলোর ব্যাপারে আইএসআইয়ের কাছে খবর পাঠাচ্ছিলেন।

অন্য যারা গ্রেফতার

গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগে ভারত ও পাকিস্তানে গ্রেফতারের ঘটনা বিরল নয়। তবে ভারত শাসিত কাশ্মীরের পেহেলগামে হামলার পর থেকে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে যে উত্তেজনার পারদ চড়েছিল, যা শেষ হয় চারদিনের এক সামরিক সংঘর্ষের মধ্যে দিয়ে, তার ঠিক পরেই দেশের বিভিন্ন শহর থেকে পাকিস্তানের হয়ে গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগে একাধিক ব্যক্তির গ্রেফতার হওয়া বাড়তি গুরুত্ব পাচ্ছে।

জ্যোতি মালহোত্রা ছাড়া উত্তর প্রদেশ পুলিশের সন্ত্রাসদমন শাখা মোরাদাবাদ থেকে শাহজাদ নামে এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করেছে বলে জানাচ্ছে সংবাদ সংস্থা এএনআই।

ওই রাজ্যের পুলিশকে উদ্ধৃত করে এএনআই জানিয়েছে, শাহজাদ রামপুরের বাসিন্দা এবং গত কয়েক বছর ধরে মাঝে মাঝেই পাকিস্তানে যেতেন তিনি।

প্রসাধনী সামগ্রী, পোষাক, মশলা ইত্যাদি সীমান্ত দিয়ে পাচার করতেন, তার সঙ্গেই পাকিস্তানের গুপ্তচর সংস্থা আইএসআইয়ের হয়ে কাজ করতেন বলে পুলিশকে উদ্ধৃত করে জানিয়েছে এএনআই।

ওদিকে হরিয়ানা পুলিশের বিশেষ গোয়েন্দা শাখা কৈথল থেকে ২৫ বছর বয়সী দেবেন্দ্র সিং ধীলোঁ নামে এক ছাত্রকেও আইএসআইয়ের হয়ে কাজ করার জন্য গ্রেফতার করেছে।

ডেপুটি পুলিশ সুপার বীরভান সিং বলেছেন যে, ‘অপারেশন সিন্দুর’ চলাকালীন ভারতীয় সেনাবাহিনী সর্ম্পকে গোপন তথ্য যোগান দিতেন দেবেন্দ্র সিং।

ডেপুটি পুলিশ সুপার বিবিসিকে এও জানিয়েছেন যে পাকিস্তানের অভ্যন্তরে শিখ ধর্মাবলম্বীদের তীর্থস্থান কার্তারপুর সাহিবে গিয়েছিলেন দেবেন্দ্র সিং।

তিনি জানান, সেই সময়েই আইএসআইয়ের সংস্পর্শে আসেন। ভারতে ফিরে আসার পর থেকে তিনি সামরিক বাহিনী সংক্রান্ত সংবেদনশীল তথ্য পাকিস্তানে পাঠাতে শুরু করেন।

তার কথায়, পাটিয়ালায় পড়াশোনা করার ফাঁকেই দেবেন্দ্র সিং মোবাইল ফোনে সেখানকার সেনা ক্যান্টনমেন্টের ছবি তুলেছিলেন আর সেগুলো আইএসআইকে পাঠিয়েছিলেন।

এরা ছাড়াও পাঞ্জাব আর হরিয়ানা থেকে আরও তিনজন করে ব্যক্তিকে গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট রাজ্যের পুলিশ নিশ্চিত করেছে।

চলতি মাসের শুরুর দিকে দুই প্রতিবেশী দেশের মধ্যে সামরিক উত্তেজনার পরই পাকিস্তানের হয়ে গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগে এতজনকে গ্রেফতার করা হলো।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
স্বপ্নপূরণের ক্ষণগণনা
অপেক্ষা উদ্বোধনের
দিন
ঘন্টা
মিনিট
সেকেন্ড
© স্বর্বস্বত্ব সংরক্ষিত। এই ওয়েবসাইটের লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Theme Customized By BreakingNews