বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর তিনটি স্বতন্ত্র কন্টিনজেন্ট জাতিসংঘের দুটি অঞ্চলে নিয়োজিত আছে। এর মধ্যে ডেমোক্রেটিক রিপাবলিক অব কঙ্গোতে (ডিআর কঙ্গো) ছয়টি এমআই সিরিজ হেলিকপ্টারসহ একটি ইউটিলিটি এভিয়েশন ইউনিট এবং সি-১৩০ পরিবহন বিমানসহ একটি এয়ার ট্রান্সপোর্ট ইউনিট এবং সেন্ট্রাল আফ্রিকান রিপাবলিকে তিনটি এমআই সিরিজ হেলিকপ্টারসহ একটি বাংলাদেশ আর্মড মিলিটারি ইউটিলিটি ইউনিট মোতায়েন রয়েছে।
বাংলাদেশ পুলিশ সূত্র জানায়, জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে এ পর্যন্ত পুলিশের ২১ হাজার ৮১৫ জন সদস্য তাঁদের দায়িত্ব সম্পন্ন করেছেন। এর মধ্যে নারীর সংখ্যা এক হাজার ৯২৭ জন। বর্তমানে ৭১ জন নারীসহ মোট ১৯৯ জন পুলিশ সদস্য শান্তিরক্ষা মিশনে দায়িত্ব পালন করছেন।
আইএসপিআর জানায়, বাংলাদেশের শান্তিরক্ষীরা বিশ্বের ৪৩টি দেশ ও স্থানে ৬৩টি জাতিসংঘ মিশন সফলতার সঙ্গে সম্পন্ন করেছেন। এসব মিশনে মোট দুই লাখ ৫৫৮ জন শান্তিরক্ষী দায়িত্ব পালন করেন। এর মধ্যে নারী শান্তিরক্ষী তিন হাজার ৬৪৫ জন। সেনাবাহিনী থেকে দায়িত্ব পালন করেছেন এক লাখ ৬২ হাজার ৩৫ জন। বর্তমানে জাতিসংঘের ১০টি শান্তিরক্ষা মিশনে বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর পাঁচ হাজার ৬১৯ জন শান্তিরক্ষী নিয়োজিত আছেন। এর মধ্যে ৯টি মিশনে সেনাবাহিনীর সদস্য রয়েছেন প্রায় পাঁচ হাজার। সম্প্রতি প্রধমবারের ডিআর কঙ্গোতে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর তিনটি হেলিকপ্টার মোতায়েন করা হয়েছে। শুরু থেকে এ পর্যন্ত জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে বাংলাদেশের ১৬৮ জন শান্তিরক্ষী জীবন উৎসর্গ করেছেন। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন সেনাবাহিনীর ১৩১ জন, নৌবাহিনীর চারজন, বিমানবাহিনীর ছয়জন এবং পুলিশের ২৪ জন। আহত হয়েছেন ২৭২ জন। এই বছর দুজন আহত শান্তিরক্ষীকে সম্মাননা প্রদান করা হচ্ছে।
দিবসের কর্মসূচি : আন্তর্জাতিক জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী দিবস উদযাপনে বাংলাদেশ রাষ্ট্রীয়ভাবে নানা কর্মসূচি হাতে নিয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার সকালে শান্তিরক্ষীদের স্মরণের মাধ্যমে দিবসের কর্মসূচি শুরু হবে। স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লে. জেনারেল মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী (অব.) প্রধান অতিথি হিসেবে সকালে ‘শান্তিরক্ষী দৌড়-র্যালি-২০২৫’ অনুষ্ঠান উদ্বোধন করেন। পরে বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে আয়োজিত অনুষ্ঠানে আহত শান্তিরক্ষীদের জন্য সংবর্ধনা এবং জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমের ওপর বিশেষ উপস্থাপনা অনুষ্ঠিত হবে। আহত শান্তিরক্ষীদের জন্য সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন। সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে সরকারের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্যরা, বাংলাদেশে নিযুক্ত বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত-হাইকমিশনার, বাংলাদেশে নিযুক্ত জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারী, তিন বাহিনীর প্রধান, সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার, পুলিশের মহাপরিদর্শক, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা, গণমাধ্যম ব্যক্তিত্বসহ ঊর্ধ্বতন সামরিক ও অসামরিক কর্মকর্তারা উপস্থিত থাকবেন।
দিবসটির তাৎপর্য তুলে ধরার লক্ষ্যে বিশেষ জার্নাল ও জাতীয় দৈনিকসমূহে বিশেষ ক্রোড়পত্র প্রকাশিত হয়েছে এবং বাংলাদেশ টেলিভিশন, বাংলাদেশ বেতারসহ বিভিন্ন বেসরকারি চ্যানেলে বিশেষ টক শো প্রচারিত হবে। এ ছাড়া শান্তিরক্ষায় বাংলাদেশের কার্যক্রমের ওপর নির্মিত প্রামাণ্যচিত্র বাংলাদেশ টেলিভিশনসহ অন্যান্য বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলে প্রচারিত হবে।
Leave a Reply