সম্প্রতি লন্ডনে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বৈঠকে আগামী বছরের ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় নির্বাচন আয়োজনের কথা উঠে এলেও নির্বাচন কমিশন (ইসি) এ বিষয়ে এখনো কোনো আনুষ্ঠানিক তথ্য পায়নি বলে জানিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিন।
রবিবার (১৫ জুন) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে সিইসি বলেন, “ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন হবে—এ কথা আমরা শুনেছি লন্ডনে বিএনপি ও অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতিনিধিদের দেওয়া এক যৌথ বিবৃতি থেকে। তবে ওই বিবৃতিতে কারও স্বাক্ষর ছিল না। সরকারিভাবেও আমাদের কিছু জানানো হয়নি।”
উল্লেখ্য, গত শুক্রবার (১৩ জুন) লন্ডনের ডরচেস্টার হোটেলে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের মধ্যে দেড় ঘণ্টাব্যাপী এক বৈঠক হয়। ওই বৈঠক শেষে যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়, সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করা গেলে আগামী বছরের রমজানের আগেই, অর্থাৎ ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে পারে।
তবে সিইসি এ বিষয়ে সংশয় প্রকাশ করে বলেন, “যেখানে স্বাক্ষর নেই, সেটা কতটা গ্রহণযোগ্য তা নিয়েও প্রশ্ন রয়েছে। আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু না পেলে আমরা সিদ্ধান্তে যেতে পারি না।”
এর আগে প্রধান উপদেষ্টা ইউনূস চলতি বছরের ডিসেম্বর থেকে আগামী জুনের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠানের সম্ভাবনার কথা বলেছিলেন। তবে বিএনপি ডিসেম্বরেই ভোট চেয়ে চাপ প্রয়োগ করে আসছিল। এক পর্যায়ে গত ৬ জুন জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে ইউনূস এপ্রিলের প্রথমার্ধে নির্বাচনের সময়সূচির ইঙ্গিত দেন। তবে ওই সময় নিয়েও আপত্তি তোলে বিএনপি, কারণ এপ্রিলের সঙ্গে রোজা ও পাবলিক পরীক্ষার সূচি জড়িত।
ফেব্রুয়ারির প্রস্তাবনার পরও এখন পর্যন্ত নির্বাচন কমিশনকে কিছু জানানো হয়নি বলে পুনর্ব্যক্ত করেন সিইসি। সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “আমরা নির্বাচন আয়োজনের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছি। সরকার থেকে তারিখ জানালে আমরা সে অনুযায়ী প্রস্তুত থাকব। যারা নির্বাচনে অংশ নেবেন, সবার জন্য আমরা সমান সুযোগ নিশ্চিত করব। ইসি রেফারির ভূমিকায় থাকবে।”
ভোট সন্ত্রাসীদের উদ্দেশে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে তিনি বলেন, “যারা ভোটকেন্দ্র দখলের স্বপ্ন দেখছেন, তাদের জন্য দুঃসংবাদ আছে। নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে ভোট সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স থাকবে।”
সিইসি আরও জানান, প্রধান উপদেষ্টা বর্তমান নির্বাচন কমিশনের ওপর আস্থা রাখেন বলেই তিনি মনে করেন। ঈদের পর কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময়ে সুষ্ঠু নির্বাচনের প্রস্তুতির নির্দেশনাও দেওয়া হয়েছে।
Leave a Reply