দেশের সর্বপ্রথম জাতীয় ও ছয় লেনের এক্সপ্রেসওয়ের নাম পরিবর্তন করেছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। এই মহাসড়কটি এখন থেকে ‘ঢাকা–মাওয়া–ভাঙ্গা এক্সপ্রেসওয়ে’ নামে পরিচিত হবে। বৃহস্পতিবার (২৬ জুন, ২০২৫) প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে এই তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে।
আগে ঢাকা থেকে পদ্মা সেতু হয়ে ফরিদপুরের ভাঙ্গা পর্যন্ত বিস্তৃত এই সড়কটি শেখ মুজিবুর রহমানের নামে ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মহাসড়ক’ নামে পরিচিত ছিল। তবে এই নামটি পরিবর্তন করে নতুন নামকরণ করা হলো।
২০২৪ সালে ছাত্র-জনতার সফল অভ্যুত্থানের পর এলাকাবাসী এক্সপ্রেসওয়ের সরকারি নামফলক ভেঙে ফেলে এবং এর পরিবর্তে ‘জাতির পিতা হযরত ইব্রাহিম (আ.) এক্সপ্রেসওয়ে’ নামে ব্যানার টাঙিয়ে দেয়। এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতেই সরকার নতুন নামকরণের সিদ্ধান্ত নিল।
প্রসঙ্গত, ২০১৯ সালের ১৯ ফেব্রুয়ারি প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে সড়কটির নাম ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মহাসড়ক’ রাখা হয়েছিল। তবে প্রথম থেকেই এটি জনসাধারণের কাছে ‘ঢাকা–মাওয়া–ভাঙ্গা এক্সপ্রেসওয়ে’ নামেই বেশি পরিচিত ছিল। ২০২২ সালে সরকারিভাবে এক্সপ্রেসওয়ের ধলেশ্বরী টোল প্লাজায় ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মহাসড়ক’ লেখা হয়।
এই এক্সপ্রেসওয়েটি ঢাকা জেলার যাত্রাবাড়ী থেকে শুরু হয়ে মুন্সিগঞ্জের তিনটি উপজেলা (সিরাজদিখান, শ্রীনগর ও লৌহজং) অতিক্রম করে ফরিদপুরের ভাঙ্গা থানায় গিয়ে শেষ হয়েছে। পদ্মা সেতুর মাধ্যমে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২২টি জেলার সঙ্গে সারাদেশের যোগাযোগ স্থাপনের লক্ষ্যে ঢাকা থেকে মাওয়া এবং জাজিরা থেকে ভাঙ্গা পর্যন্ত ৫৫ কিলোমিটারের এই এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণ করা হয়। এতে প্রায় ১১ হাজার ৪ কোটি টাকা ব্যয় হয়েছে।
সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের তত্ত্বাবধানে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর স্পেশাল ওয়ার্কস অর্গানাইজেশন (পশ্চিম) এই সড়কটি নির্মাণ করেছে। মূল এক্সপ্রেসওয়েটি চার লেনের হলেও, এর দুই পাশে ধীরগতির যানবাহন চলাচলের জন্য সাড়ে পাঁচ মিটার প্রশস্ত সার্ভিস লেন রাখা হয়েছে।
এই ছয় লেনের এক্সপ্রেসওয়েতে দুটি সার্ভিস লেন, ৫টি ফ্লাইওভার, ১৯টি আন্ডারপাস, ২টি ইন্টারচেঞ্জ, চারটি রেলওয়ে ওভারব্রিজ, ৪টি বড় সেতু, ২৫টি ছোট সেতু এবং ৫৪টি কালভার্ট রয়েছে। পদ্মা সেতুর নির্মাণ কাজ শেষ হওয়ার পর, পদ্মা সেতুর মাধ্যমে এক্সপ্রেসওয়ের দু’পাশ সংযুক্ত হয়েছে, যা দেশের যোগাযোগ ব্যবস্থায় নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছে।
Leave a Reply