বিচার বিভাগের নিয়ন্ত্রণ সংক্রান্ত সংবিধানের ১১৬ অনুচ্ছেদের কিছু অংশ অবৈধ ও বাতিল ঘোষণা করেছেন হাইকোর্ট। এ ছাড়া তিন মাসের মধ্যে পৃথক সচিবালয় গঠনের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।
মঙ্গলবার (২ সেপ্টেম্বর) বিচারপতি আহমেদ সোহেল ও বিচারপতি দেবাশীষ রায় চৌধুরীর সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় দেন।
রায়ে পাশাপাশি বিচারকদের জন্য ২০১৭ সালে করা শৃঙ্খলাবিধি সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক ঘোষণা করে করা হয়েছে।
এর ফলে অধস্তন আদালতের বিচারকদের বদলি ও পদোন্নতির ক্ষমতা সুপ্রিম কোর্টের হাতে ফিরল বলে জানিয়েছেন আইনজীবীরা। এ ছাড়া এ রায়ের ফলে সুপ্রিম কোর্টের পৃথক সচিবালয় স্থাপনে কোনো বাধা থাকল না বলে জানিয়েছেন আইনজীবীরা।
গত ১৩ আগস্ট বিচার বিভাগের নিয়ন্ত্রণ সংক্রান্ত সংবিধানের ১১৬ অনুচ্ছেদের বৈধতা নিয়ে রুলের চূড়ান্ত শুনানি শেষ হয়। সেই দিন আদালত রায়ের জন্য ২ সেপ্টেম্বর নির্ধারণ করে। শুনানিতে রিট পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ শিশির মনির, রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান, আর ইন্টারভেনর ছিলেন অ্যাডভোকেট আহসানুল করিম।
এই রুল জারি হয়েছিল ২৩ এপ্রিল। তার আগে প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ ২০ এপ্রিল এই রুল নিষ্পত্তির জন্য বিশেষ বেঞ্চ গঠন করেছিলেন।
মামলাটি আগে বিচারপতি ফারাহ মাহবুবের বেঞ্চে ছিল। কিন্তু ২৪ মার্চ তিনি আপিল বিভাগের বিচারপতি হওয়ায় বেঞ্চ ভেঙে যায়। এর পর রিটকারী আইনজীবী শিশির মনির নতুন বেঞ্চ গঠনের আবেদন করেন।
মূল রিট আবেদন করা হয় ২০২৪ সালের ২৫ আগস্ট। ১০ জন আইনজীবীর পক্ষে রিট দাখিল করেন শিশির মনির। রিটে মূলত ১৯৭২ সালের সংবিধান অনুযায়ী ১১৬ অনুচ্ছেদ পুনরায় বহাল করার দাবি করেন তারা। হাইকোর্ট পরে রুল জারি করে জানতে চায়, বর্তমান সংশোধিত ১১৬ অনুচ্ছেদ কেন অসাংবিধানিক ঘোষণা করা হবে না।
বর্তমান (সংশোধিত) ১১৬ অনুচ্ছেদ অনুসারে, অধস্তন আদালতের ম্যাজিস্ট্রেটদের নিয়ন্ত্রণ—যেমন পদোন্নতি, বদলি, ছুটি ও শৃঙ্খলা রাষ্ট্রপতি কন্ট্রোল করেন, সুপ্রিম কোর্টের পরামর্শে। কিন্তু ১৯৭২ সালের মূল সংবিধানে এসব নিয়ন্ত্রণ সুপ্রিম কোর্টের অধীন ছিল।
Leave a Reply