1. admin@thedailypadma.com : admin :
ষষ্ঠবারের মতো যুক্তরাষ্ট্র ভেটো দিল, ভেস্তে গেল গাজায় যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব - দ্য ডেইলি পদ্মা
শনিবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১১:৩৫ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম
বাগদান সারলেন হান্নান মাসউদ, কনে কে? যাত্রাবাড়ীতে এসি বিস্ফোরণে একই পরিবারের চারজন সদস্য দগ্ধ ষষ্ঠবারের মতো যুক্তরাষ্ট্র ভেটো দিল, ভেস্তে গেল গাজায় যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব ইসরায়েল গাজা নগরীতে চলমান যুদ্ধের দুই বছরে সবচেয়ে তীব্র হামলা চালাচ্ছে, পালাচ্ছে হাজারো মানুষ এক নজরে বিশ্ব সংবাদ: ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫ আজকে কোন টিভি চ্যানেলে কোন খেলা আজকের নামাজের সময়সূচি ২০ সেপ্টেম্বর এক বছরে এনসিপি যতটা শক্তিশালী হওয়ার কথা ছিল, তা অর্জন করা যায়নি: নাহিদ ইসলাম বাংলাদেশ ভ্রমণে নাগরিকদের সতর্কতা অবলম্বনের পরামর্শ দিয়েছে কানাডা লঙ্কানরাই এবার এশিয়া কাপের সুপার ফোরে প্রথম বাধা টাইগারদের জন্য

ষষ্ঠবারের মতো যুক্তরাষ্ট্র ভেটো দিল, ভেস্তে গেল গাজায় যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব

  • Update Time : শনিবার, ২০ সেপ্টেম্বর, ২০২৫
  • ০ Time View

ফিলিস্তিনের গাজায় মানবিক পরিস্থিতি যখন চরম আকার ধারণ করেছে, ঠিক সেই মুহূর্তে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে একটি প্রস্তাব উত্থাপন করা হয়েছিল। এই প্রস্তাবে গাজায় অবিলম্বে এবং স্থায়ী যুদ্ধবিরতি, হামাসের হাতে থাকা বন্দিদের মুক্তি এবং গাজায় মানবিক সাহায্য প্রবেশের ওপর থেকে সবরকম নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার দাবি জানানো হয়েছিল।

কিন্তু বিশ্বজুড়ে ক্রমবর্ধমান চাপ সত্ত্বেও যুক্তরাষ্ট্র এই প্রস্তাবে ভেটো দিয়েছে। এর মধ্য দিয়ে গাজায় চলমান সংঘাতের প্রায় দুই বছর সময়কালে এ নিয়ে ষষ্ঠবারের মতো যুক্তরাষ্ট্র ভেটো দিল। এতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সামনে যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান আরও একবার স্পষ্ট হয়েছে, যেখানে বিশ্বজুড়ে ইসরায়েলের কর্মকাণ্ডের তীব্র নিন্দা জানানো হলেও যুক্তরাষ্ট্র বরাবরই ইসরায়েলের পাশে দাঁড়িয়েছে।

বিবিসি, রয়টার্স ও আলজাজিরার প্রতিবেদন অনুযায়ী, নিরাপত্তা পরিষদের ১৫ সদস্যের মধ্যে ১৪টি দেশই প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দেয়। শুধু যুক্তরাষ্ট্রের ভেটোর কারণে প্রস্তাবটি বাতিল হয়ে যায়। এই ভেটোর পর যুক্তরাষ্ট্রের উপ-মধ্যপ্রাচ্যবিষয়ক দূত মরগান অরটাগাস বলেন, প্রস্তাবটিতে হামাসের নিন্দা জানানো হয়নি এবং ইসরায়েলের আত্মরক্ষার অধিকারের স্বীকৃতি দেওয়া হয়নি, যা হামাসের ‘মিথ্যা বয়ানকে’ বৈধতা দেয়। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের প্রতিনিধিরা যুক্তরাষ্ট্রের এই সিদ্ধান্তে তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। ফিলিস্তিনের জাতিসংঘ দূত রিয়াদ মনসুর এই ভেটোকে ‘গভীরভাবে দুঃখজনক ও বেদনাদায়ক’ বলে অভিহিত করেছেন। তিনি বলেন, এর ফলে নিরাপত্তা পরিষদ গাজায় ‘চলমান নৃশংসতার মুখে তার সঠিক ভূমিকা পালন করতে ব্যর্থ হলো’। পাকিস্তানের রাষ্ট্রদূত অসীম আহমেদ এই ভেটোকে ‘এক অন্ধকার মুহূর্ত’ হিসেবে বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেন, ‘বিশ্ব তাকিয়ে আছে। শিশুদের কান্না আমাদের হৃদয়কে বিদীর্ণ করা উচিত।’ আলজেরিয়ার রাষ্ট্রদূত আমার বেন্দজামা ফিলিস্তিনি জনগণের কাছে ক্ষমা চান। তিনি বলেন, ‘ফিলিস্তিনি ভাই ও বোনেরা, আমাদের ক্ষমা করুন। আমাদের আন্তরিক প্রচেষ্টা প্রত্যাখ্যানের এই প্রাচীরের সঙ্গে ধাক্কা খেয়ে ভেঙে গেছে।’

ভেটোর পেছনের যুক্তি এবং আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া: আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমের তথ্য অনুসারে, এই ভেটোর পক্ষে যুক্তরাষ্ট্র কিছু নির্দিষ্ট যুক্তি তুলে ধরেছে। মরগান অরটাগাস বলেন, এই প্রস্তাবে হামাসের নিন্দা জানানো হয়নি এবং ইসরায়েলের আত্মরক্ষার অধিকারকে স্বীকৃতি দেওয়া হয়নি। তিনি আরও যোগ করেন, প্রস্তাবটি এমন এক পরিস্থিতিতে আনা হয়েছে, যখন ইসরায়েল যুদ্ধ শেষ করার জন্য প্রস্তাবিত শর্তগুলো মেনে নিয়েছে, কিন্তু হামাস তা প্রত্যাখ্যান করে চলেছে। অরটাগাসের মতে, যদি হামাস জিম্মিদের মুক্তি দেয় এবং অস্ত্র জমা দেয়, তাহলে এই যুদ্ধ আজই শেষ হতে পারে।

এই ভেটোর পর জাতিসংঘে ফিলিস্তিনের রাষ্ট্রদূত রিয়াদ মনসুর বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের এই ভেটো ‘গণহত্যার মুখে বেসামরিক নাগরিকদের সুরক্ষার জন্য’ নিরাপত্তা পরিষদকে তার সঠিক ভূমিকা পালন করতে বাধা দিয়েছে। তিনি আরও বলেন, ‘কাউন্সিল নীরব থাকে, যার ফলে এর বিশ্বাসযোগ্যতা এবং কর্তৃত্বের ওপর গুরুতর আঘাত আসে।’

জাতিসংঘে ডেনমার্কের রাষ্ট্রদূত ক্রিস্টিনা মার্কাস ল্যাসেন ভোটের আগে বলেন, ‘গাজায় দুর্ভিক্ষ নিশ্চিত হয়েছে—এটি অনুমান করা হয়নি, ঘোষণা করা হয়নি, নিশ্চিত করা হয়েছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘ইসরায়েল গাজা শহরে তার সামরিক অভিযান বাড়িয়েছে, যা বেসামরিক মানুষের দুর্ভোগ আরও গভীর করছে।’

গাজার বর্তমান পরিস্থিতি এবং ইসরায়েলের অবস্থান: গাজায় মানবিক পরিস্থিতি ক্রমাগত খারাপ হচ্ছে। জাতিসংঘের মানবিকবিষয়ক কার্যালয় (ওসিএইচএ) সতর্ক করে দিয়ে বলেছে, ইসরায়েলের সামরিক অভিযান বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে গাজা শহরের বেসামরিক মানুষের জন্য শেষ আশ্রয়স্থলগুলো ভেঙে পড়ছে। বিবিসির প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, ইসরায়েলি ট্যাংক এবং সেনারা গাজায় স্থল অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে, যার ফলে হাজার হাজার মানুষ এলাকা ছেড়ে পালাচ্ছে।

জাতিসংঘের মানবাধিকার পরিষদের একটি স্বাধীন বিশেষজ্ঞ দল সম্প্রতি একটি প্রতিবেদনে এই সিদ্ধান্তে আসে যে, ইসরায়েল গাজায় ‘গণহত্যা’ চালাচ্ছে। তবে জাতিসংঘে ইসরায়েলের রাষ্ট্রদূত ড্যানি ড্যানন তার দেশকে রক্ষা করতে এই প্রতিবেদনকে প্রত্যাখ্যান করেন। তিনি বলেন, ইসরায়েলের এই যুদ্ধের জন্য কোনো ‘যুক্তি’ প্রয়োজন নেই। তিনি ভেটো দেওয়ার জন্য মরগান অরটাগাসকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, ইসরায়েল ‘হামাসের বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যাবে এবং তার নাগরিকদের রক্ষা করবে, এমনকি যদি নিরাপত্তা পরিষদ সন্ত্রাসবাদের দিকে চোখ বন্ধ করে থাকে।’

আন্তর্জাতিক মঞ্চে ‘বিচ্ছিন্ন’ যুক্তরাষ্ট্র-ইসরায়েল: এই ভেটোর পর আন্তর্জাতিক মঞ্চে ইসরায়েল এবং তার প্রধান মিত্র যুক্তরাষ্ট্র আরও বেশি বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। আলজাজিরার কূটনৈতিক সম্পাদক জেমস বেস এই ভেটোকে জাতিসংঘের ৮০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে একটি ‘বিষণ্ন’ মুহূর্ত হিসেবে বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেন, যখন অনেক দেশ ‘বহুপক্ষীয় কূটনীতি’ সমর্থন করছে, তখন যুক্তরাষ্ট্র ‘আমেরিকা-ফার্স্ট’ দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে চলেছে।

২০২৩ সালের অক্টোবরে ইসরায়েল গাজায় সামরিক অভিযান শুরুর পর থেকে এ পর্যন্ত সেখানে ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় ৬৫ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে বলে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে। এর মধ্যে ৪৩৫ জন অপুষ্টি এবং অনাহারে মারা গেছেন। এমন সংকটময় পরিস্থিতিতে যুক্তরাষ্ট্রের ভেটো আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের মধ্যে গভীর হতাশার জন্ম দিয়েছে এবং এটি জাতিসংঘের কার্যকারিতা ও নৈতিক অবস্থানের ওপর প্রশ্ন তুলেছে।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
স্বপ্নপূরণের ক্ষণগণনা
অপেক্ষা উদ্বোধনের
দিন
ঘন্টা
মিনিট
সেকেন্ড
© স্বর্বস্বত্ব সংরক্ষিত। এই ওয়েবসাইটের লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Theme Customized By BreakingNews