1. admin@thedailypadma.com : admin :
প্রতিদিন প্রচুর পরিমাণে প্রাকৃতিক গ্যাস পুড়িয়ে ফেলছে; আর্থিক মূল্য প্রায় এক কোটি ডলার - দ্য ডেইলি পদ্মা
সোমবার, ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৬:২৫ অপরাহ্ন

প্রতিদিন প্রচুর পরিমাণে প্রাকৃতিক গ্যাস পুড়িয়ে ফেলছে; আর্থিক মূল্য প্রায় এক কোটি ডলার

  • Update Time : শুক্রবার, ২৬ আগস্ট, ২০২২
  • ১২০ Time View

স্যাটেলাইট থেকে তোলা ছবিতে দেখা যাচ্ছে রাশিয়া তাদের একটি গ্যাস স্থাপনায় প্রতিদিন প্রচুর পরিমাণে প্রাকৃতিক গ্যাস পুড়িয়ে ফেলছে যার আর্থিক মূল্য প্রায় এক কোটি ডলার।

রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় জ্বালানি প্রতিষ্ঠান গ্যাজপ্রমের নতুন এই স্থাপনাটি ফিনল্যান্ড সীমান্তের কাছে, সেন্ট পিটার্সবার্গের উত্তর-পশ্চিমে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই গ্যাস এর আগে নর্ডস্ট্রিম ওয়ান পাইপলাইন দিয়ে জার্মানিতে রফতানি করা হতো।

জুলাই মাসের মাঝামাঝি সময়ের পর থেকে রাশিয়া এই পাইপলাইন দিয়ে গ্যাস সরবরাহ কমিয়ে দিয়েছে।

মস্কো বলছে কারিগরি ত্রুটির কারণে গ্যাসের সরবরাহ কমে গেছে।

কিন্তু জার্মানি বলছে, ইউক্রেনে সামরিক অভিযান শুরু হওয়ার পর পশ্চিমা দেশগুলো রাশিয়ার কাছ থেকে তেল ও গ্যাস আমদানি কমিয়ে দেয়ার পর, রাজনৈতিক কারণেই মস্কো গ্যাসের সরবরাহ কমিয়ে দিয়েছে।

এর জের ধরে ইউরোপ জুড়ে জ্বালানির মূল্য নজিরবিহীন হারে বেড়ে গেছে।

ব্রিটেনে জার্মানির রাষ্ট্রদূত বিবিসিকে বলেছেন, কোথাও গ্যাস বিক্রি করতে না পারায় রাশিয়া এখন এই গ্যাস পুড়িয়ে ফেলছে।

জ্বালানি সংক্রান্ত একটি কোম্পানি রাইস্টাড এনার্জি বলছে, পোর্তোভায়ার ওই এলএনজি স্থাপনায় প্রতিদিন ৪০ লাখ ঘনমিটারেরও বেশি গ্যাস পোড়ানো হচ্ছে।

এ বছরের আরো কিছু আগের দিকে ফিনল্যান্ডের কিছু নাগরিক প্রথমে দেখতে পান যে রাশিয়ার সীমান্তের ওপারে দাউ দাউ করে আগুন জ্বলছে।

তারা মনে করেন সেখানে হয়তো কোনো দুর্ঘটনা ঘটেছে।

নর্ডস্ট্রিম ওয়ান পাইপলাইন যেখান থেকে শুরু হয়েছে, পোর্তোভায়ার এই স্থাপনাটি তার খুব কাছে। এই পাইপলাইন দিয়েই জার্মানিতে গ্যাস সরবরাহ করা হয়।

জুন মাসের পর গবেষকরা দেখতে পান যে ওই স্থাপনা থেকে বেরিয়ে আসা তাপ উল্লেখযোগ্য পরিমাণে বেড়ে গেছে।

ধারণা করা হয় ওই স্থাপনায় প্রাকৃতিক গ্যাস পুড়িয়ে ফেলার কারণে সেখানে এই তাপ উৎপন্ন হচ্ছে।

যেসব কেন্দ্রে গ্যাস পরিশোধন করা হয় সেখানে গ্যাস পুড়িয়ে ফেলা একটি স্বাভাবিক ঘটনা। সাধারণত কারিগরি ও নিরাপত্তাজনিত কারণেই তা করা হয়ে থাকে।

কিন্তু এই স্থাপনাটিতে যে পরিমাণে গ্যাস পোড়ানো হচ্ছে তা বিশেষজ্ঞদের বিস্মিত করেছে।

যুক্তরাষ্ট্রের মায়ামি বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন বিশেষজ্ঞ ড. জেসিকা ম্যাকার্টি বলেন, ‘কোনো এলএনজি কারখানায় এত গ্যাস কখনো পুড়তে দেখিনি। জুন মাসের শুরুতে আমরা প্রচুর গ্যাস জ্বলতে দেখলাম। কিন্তু সেটা আর বন্ধ হলো না, বরং প্রচুর পরিমাণে গ্যাস পুড়তেই থাকলো।’

যুক্তরাজ্যে জার্মান রাষ্ট্রদূত মিগুয়েল বের্গার বলছেন, ইউরোপ গ্যাসের জন্য রাশিয়ার ওপর নির্ভরশীলতা কমাতে চাইছে এবং তার প্রভাব পড়েছে রুশ অর্থনীতির ওপর।

‘তাদের কাছে আর কোনো দেশ নেই যাদের কাছে তারা এই গ্যাস বিক্রি করতে পারে। ফলে তাদেরকে এই গ্যাস পুড়িয়ে ফেলতে হচ্ছে,’ বলেন তিনি।

জ্বলে ওঠা গ্যাস সামলাতে কাজ করে এরকম একটি কোম্পানি ক্যাপটেরিওর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মার্ক ড্যাভিস বলেছেন, রাশিয়ার ওই স্থাপনায় যে গ্যাস জ্বলছে সেটা কোনো দুর্ঘটনার কারণে ঘটেনি। তিনি মনে করেন, ইচ্ছাকৃতভাবেই এই গ্যাস পোড়ানো হচ্ছে।

‘পরিচালনাকারীরা সহজেই কোনো স্থাপনা বন্ধ করে দিতে চান না। তারা মনে করেন এটি পুনরায় চালু করা কারিগরি দিক থেকে কঠিন কিম্বা ব্যয়বহুল হতে পারে। সম্ভবত এখানেও তাই হয়েছে,’ বলেন তিনি।

কোনো কোনো বিশেষজ্ঞ মনে করছেন, এই পাইপলাইনে এত বেশি গ্যাস চলে আসছে যে তা সামাল দিতে গিয়েই সেখানে গ্যাস পুড়িয়ে ফেলা হচ্ছে।

আবার অনেকে মনে করছেন যন্ত্রপাতির অভাবের কারণে এমনটা হয়ে থাকতে পারে।

ফিনল্যান্ডের এলইউটি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকৌশল বিভাগের অধ্যাপক এসা ভাক্কিলাইনেন বলেছেন, ‘এত সময় ধরে গ্যাস জ্বলার অর্থ হতে পারে যে তাদের কাছে হয়তো কিছু যন্ত্রপাতি নেই।’

‘রাশিয়ার ওপর যে বাণিজ্য নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে তার ফলে তেল ও প্রক্রিয়াজাত করতে প্রয়োজনীয় উঁচু মানের ভাল্ভ তারা তৈরি করতে পারছে না। হয়তো কিছু ভাল্ভ ভেঙে গেছে এবং তারা সেখানে নতুন ভাল্ভ বসাতে পারছে না,’ বলেন তিনি।

এ বিষয়ে রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় জ্বালানি প্রতিষ্ঠান গ্যাজপ্রমের পক্ষ থেকে কোনো মন্তব্য করা হয়নি।

বিজ্ঞানীরা বলছেন, প্রতিদিন এতো গ্যাস পোড়ানোর ফলে অর্থনৈতিক ক্ষতির পাশাপাশি পরিবেশকেও এর মূল্য দিতে হচ্ছে।

কোভিড মহামারীর কারণে সারা বিশ্বেই জ্বালানির মূল্য বেড়ে গেছে। তবে লকডাউনসহ কোভিড বিধিনিষেধ তুলে নেয়ার পর অর্থনৈতিক পরিস্থিতি ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হয়ে আসতে শুরু করে।

কিন্তু এ বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে ইউক্রেনে রাশিয়ার সামরিক অভিযান শুরু হওয়ার পর জ্বালানির মূল্য আবার ঊর্ধ্বমুখী হতে থাকে।

সূত্র : বিবিসি

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
স্বপ্নপূরণের ক্ষণগণনা
অপেক্ষা উদ্বোধনের
দিন
ঘন্টা
মিনিট
সেকেন্ড
© স্বর্বস্বত্ব সংরক্ষিত। এই ওয়েবসাইটের লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Theme Customized By BreakingNews