ঈদ ঘিরে বাজারে চিনির দামও আরেক দফা বেড়েছিল। সেই বাড়তি দামেই এখনো বিক্রি করা হচ্ছে। বাজারে প্যাকেটজাত চিনির সরবরাহ কম। খোলা চিনি বিক্রি করা হচ্ছে ১২০ টাকা কেজি দরে। সরকার খোলা চিনির সর্বোচ্চ দাম বেঁধে দিয়েছে ১০৪ টাকা কেজি। কিন্তু প্রতি কেজি চিনি কিনতে ক্রেতাকে বাড়তি গুনতে হচ্ছে ১৬ টাকা। গত সাত মাসে সরকার পাঁচবার চিনির দাম বেঁধে দিয়েছে, কিন্তু কোনোবারই নির্ধারিত দামে চিনি বিক্রি হয়নি।
বাজারে বিভিন্ন ধরনের সবজি ও চিনির দাম কিছুটা বেড়ে বিক্রি হলেও চাল, ডাল, আটা, ময়দা, সয়াবিন তেলের দামে পরিবর্তন হয়নি। উচ্চমূল্যে স্থিতিশীল রয়েছে এসব পণ্য। ফার্মের ডিমের ডজন বিক্রি হচ্ছে ১৩০ টাকায়।
ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি) গতকাল বাজারদরের তালিকায় জানিয়েছে, রাজধানীর বাজারগুলোয় ব্রয়লার মুরগির কেজি বিক্রি হচ্ছে ২৩০ থেকে ২৫০ টাকায়। খোলা চিনি বিক্রি হচ্ছে ১১৫ থেকে ১২৫ টাকা কেজি দরে।
সরকার নির্ধারিত দামে চিনি বিক্রি না হওয়ার বিষয়ে রামপুরা বাজারের ভ্যারাইটিজ স্টোরের আবুল খায়ের বলেন, ‘বর্তমানে আমাদের চিনির বস্তা কিনতে প্রতি কেজিতে পড়ে ১১৬-১১৭ টাকা। বিক্রি করছি ১২০ টাকা কেজি দরে। সরকার নির্ধারণ করে দিয়েছে ১০৪ টাকা। নির্ধারিত দামে বিক্রি করলে প্রতি কেজি চিনিতে আমাদের লোকসান হবে ১২-১৩ টাকা। এটা কোনো ব্যবসায়ীর পক্ষে সম্ভব নয়।’
তিনি বলেন, পাইকারি পর্যায়ে চিনির দাম না কমলে খুচরা পর্যায়ে দাম কমার সুযোগ নেই। বেশি দামে কিনে কেউ লস দিয়ে বিক্রি করবে না।
কারওয়ান বাজারের ব্রয়লার হাউসের ব্যবসায়ী আমজাদ হোসেন গতকাল বলেন, ‘ঈদের আগে বাজারে মুরগির দাম বাড়তি ছিল। তখন ব্রয়লার মুরগি প্রতি কেজি ২৬০ থেকে ২৭০ টাকা এবং সোনালি মুরগি প্রতি কেজি ৩৮০ থেকে ৩৯০ টাকায় বিক্রি করেছি। এখন বাজার অনেকটা কমতির দিকে। আজ (গতকাল) ব্রয়লার মুরগির কেজি ২৪০ টাকা এবং সোনালি মুরগির কেজি ৩৫০ থেকে ৩৬০ টাকা।’
জোয়ারসাহারা বাজারের মুরগি ব্যবসায়ী রফিকুল ইসলাম বলেন, বাজারে মুরগির চাহিদা কিছুটা কমায় এখন দাম কমছে। তবে ব্রয়লারের তুলনায় সোনালির দাম বেশি কমেছে।
অন্যদিকে ঈদের পরে মানভেদে প্রতি কেজি পেঁয়াজে ১০ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৫০ টাকায়। পাইকারি বাজারে বিক্রি হয় ৩৬ থেকে ৪২ টাকা কেজি দরে। আর আলুর দাম ৫-৭ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ৩০-৩৫ টাকা কেজিতে।
সবজির বাজার
ঈদের এক দিন আগে রাজধানীর বাজারে শসার চাহিদা অস্বাভাবিক বেড়ে যাওয়ায় দেশি শসার কেজি ১৪০ থেকে ১৫০ টাকা পর্যন্ত উঠেছিল। ঈদের পর দেশি শসার দাম কমে প্রতি কেজি ৮০ থেকে ১০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তবে ঈদের আগের চেয়ে এখন বেশ কিছু সবজির দাম কেজিতে ১০ থেকে ২০ টাকা পর্যন্ত বেড়ে বিক্রি হচ্ছে। বেগুন প্রতি কেজি ৬০ থেকে ৭০ টাকা, বরবটি ৮০ টাকা, কাঁচা পেঁপে ৫০ টাকা, টমেটো ৫০ টাকা, করলা (উস্তা) ৮০ টাকা, পটোল ৬০ টাকা, চিচিঙ্গা ৭০ থেকে ৮০ টাকা, ঝিঙা ৭০ থেকে ৮০ টাকা, কাঁচা মরিচ ১০০ থেকে ১২০ টাকা, কাঁচা আম ৬০ থেকে ৮০ টাকা, চালকুমড়া প্রতিটি ৫০ থেকে ৬০ টাকা, লাউ আকারভেদে ৬০ থেকে ৭০ টাকায় বিক্রি করা হচ্ছে।
রামপুরা বাজারের সবজি ব্যবসায়ী জসিম উদ্দিন বলেন, বর্তমানে বাজারে সবজির দাম বাড়তির দিকে। কারওয়ান বাজারে আমদানি কম। এ কারণে বাজারে সবজির দাম বাড়তি। ঈদের পর এখনো কারওয়ান বাজারে সেভাবে সবজি আসা শুরু হয়নি। আগামী সপ্তাহ থেকে আসা শুরু করলে দাম কমে যাবে।
স্বস্তি নেই মাছের বাজারেও
প্রতি কেজি বোয়াল মাছ ৮০০ টাকা, পাবদা ৫০০ টাকা, টেংড়া ৭০০ টাকা, পুঁটি ৮০০ টাকা, ফলি মাছ ৭০০ টাকা, বাতাসী ৬০০-৮০০ টাকা, কোরাল ৭০০ টাকা, বাইলা ৮০০ টাকা, বাটা ৫০০ টাকা, দেশি কই ১২০০ টাকা, মাগুর ৫০০ টাকা, শিং ৪০০ টাকা, রুই ৩০০-৩৫০ টাকা, কাতল ৩৫০-৪০০ টাকা, রূপচাঁদা ১৪০০ টাকা, বাগদা চিংড়ি ৭০০ টাকা, গলদা চিংড়ি ১০০০ টাকা, পোয়া ৮০০ টাকা, তপসী ৭০০ টাকা, মলা ৬০০ টাকা, চাপিলা ৮০০ টাকা, ইলিশ ১৬০০-২০০০ টাকা। , কাচকি ৬০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
নিত্যপণ্যের বাজার
Leave a Reply