পাকিস্তানের মুলতান ক্রিকেট স্টেডিয়ামে পাকিস্তান বনাম নেপালের ম্যাচ দিয়ে বুধবার (৩০ আগস্ট) পর্দা উঠে এশিয়া কাপের ষোলতম আসরের। এই ম্যাচে প্রথম দিকে কোণঠাসা হয়ে পড়লেও ৩০ ওভারের পর অধিনায়ক বাবর আজম ও ইফতিখার আহমেদের ঝড়ো ইনিংসে ৩৪২ রানের লড়াকু সংগ্রহ পায় স্বাগতিক দলটি।
এরপর বোলারদের আক্রমণে ৩৪৩ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নামা নেপাল একের পর এক উইকেট হারাতে থাকলে জয়ের পথে এগুতে থাকে স্বাগতিক পাকিস্তান। বড় লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে ২৩.৪ ওভারেই ১০৪ রান করে থেমে যায় নেপালের ইনিংস।
এরমধ্য দিয়ে ২৩৮ রানের বড় জয় দিয়ে এশিয়া কাপ শুরু করে আয়োজক পাকিস্তান। বল হাতে পাকিস্তানের পক্ষে শাদাব খান ৪টি এবং শাহীন আফ্রিদি ও হারিস রউফ ২টি করে উইকেট লাভ করেন।
পাকিস্তানি অধিনায়ক বাবর আজম ও মিডল অর্ডার ব্যাটার ইফতিখার আহমেদের জোড়া সেঞ্চুরির কারণে ৩৪৩ রানের বড় লক্ষ্যে ব্যাট করতে নামে নেপালের ওপেনার কুশাল ভার্তাল ও আসিফ শেখ।
দুই ব্যাটারই শুরুটা আক্রমণাত্মক করতে গিয়ে ব্যর্থ হন। শাহীন আফ্রিদির করা প্রথম ওভারের পঞ্চম বলেই আউট হন কুশাল। তিনি ৪ বলে ২ বাউন্ডারিতে ৮ রান করেন।
এরপর তিনে নামা রোহিত পাউরেল একই ওভারে গোল্ডেন ডাক মেরে সাজঘরে ফিরে যান। চারে নামা আরিফ শেখকে নিয়ে দলের হাল ধরতে পারতেন আসিফ।
তিনিও দ্বিতীয় ওভারে ৫ বলে ৫ রান নিয়ে আউট হলে চাপে পড়ে নেপাল। দুই ওভার না যেতেই ১৪ রানে গুরুত্বপূর্ণ তিনটি উইকেট হারায় সফরকারী দলটি। তিনি সাজঘরে ফেরার পর সম্পাল কামিকে সঙ্গে নিয়ে লক্ষ্যের দিকে এগুতে থাকেন আরিফ।
তবে ভালো শুরু করলেও ইনিংস বড় করতে পারেননি দুই ব্যাটার। তাদের মধ্যে আরিফ আউট হন ৩৮ বলে ২৬ রান করে, আর সম্পাল আউট হন ৪৬ বলে ২৮ রানের ইনিংস খেলে। সম্পালের বিদায়ের পরপরই ৩ রানের ইনিংস খেলে প্যাভিলিয়নের পথ ধরেন দিপেন্দ্র সিং।
এরপর একে একে গুলশান ঝা ১৩ রানে, দিপেন্দ্র সিং ৩ রানে, সন্দ্বীপ লামিচানে ডাক মেরে, কুশাল মাল্লা ৬ রানে বিদায় নেন। সবশেষে ডাক মেরে সাজঘরের পথ ধরেন ললিত রাজবংশী। যার কারণে মাত্র ১০৪ রানে অলআউট হয় নেপাল।
এর আগে টস জিতে প্রথমে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন স্বাগতিক পাকিস্তানের অধিনায়ক বাবর। দলটির হয়ে ইনিংস শুরু করেন ফখর জামান ও ইমাম উল হক।
দুই ব্যাটারের ব্যর্থতায় প্রথমেই চাপে পড়ে পাকিস্তান। করন কেসির বলে কট বিহাইন্ড হয়ে প্রথমে সাজঘরের পথ ধরেন ২০ বলে ১৪ রান করা ফখর। তার ছোট ইনিংসটি সাজানো ছিল ৩টি চারে।
এরপরের ওভারেই ১৪ বলে ৫ রান করে আউট হন ইমাম। ২৫ রানে ২ উইকেট হারিয়ে প্রথমেই চাপে পড়ে স্বাগতিকরা। এর মধ্যে তিনে নামা বাবর দলের হাল ধরতে শরু করেন। ইমামের বিদায়ের পর তাকে সঙ্গ দেন উইকেটরক্ষক ব্যাটার মোহাম্মদ রিজওয়ান।
দুই ব্যাটার মিলে রক্ষণাত্মক ব্যাটিংয়ে পাকিস্তানের স্কোরবোর্ড ভারী করতে থাকেন। রিজওয়ান অধিনায়কের সঙ্গ ছাড়েন ২৩তম ওভারের চতুর্থ বলে। দিপেন্দ্র সিংয়ের রান আউটের শিকার হয়ে তিনি ৬টি বাউন্ডারিতে গড়া ৪৪ রানের ইনিংস খেলে সাজঘরে ফিরে যান।
এরপর আঘা সালমানও আউট হন মাত্র ৫ রান নিয়ে। ছয়ে নামা ইফতিখারের সঙ্গে জুটি বেঁধে এরপর দলকে এগিয়ে নিতে থাকেন বাবর আজম। দুই ব্যাটার রক্ষণাত্মক ভঙ্গিতে খেলে দলকে বড় সংগ্রহের দিকে নিয়ে যান। এর মধ্যেই সেঞ্চুরি পূরণ করেন বাবর আজম।
শতরান ছোঁয়ার পর থেকে তিনি আক্রমণাত্মক হয়ে উঠেন। এরপরপরই অর্ধশতক করেন ইফতিখার। দুই ব্যাটারের দুর্দান্ত পারফরম্যান্সেই লড়াকু হয়ে উঠে পাকিস্তান দল। এরপর থেকে তারা নেপালের বোলারদেরকে চার ছক্কায় ভাসাতে থাকেন।
একের পর এক বাউন্ডারি হাঁকিয়ে বাবর-ইফতিখার জুটি পাকিস্তানের স্কোরবোর্ড ভারী করতে থাকলে বিপদে পড়তে শুরু করে সফরকারী নেপাল। বাবরকে থামাতে তাদের অপেক্ষা করতে হয় শেষ ওভারের চতুর্থ বল পর্যন্ত। ১৪টি বাউন্ডারি ও ৪টি ছক্কায় গড়া ১৫১ রানের ইনিংস খেলে সাজঘরে যান বাবর।
এর আগেই সেঞ্চুরি পূরণ করেন ইফতিখারও। ইনিংসের শেষ বলে তিনি ১১ চার ও ৪টি ছক্কায় গড়া ১০৯ রানের ইনিংস খেলে আউট হন। দুই ব্যাটারের আক্রমণাত্মক পারফরম্যান্সে নেপালের সামনে ৩৪৩ রানের লক্ষ্য ছুড়ে দেয় পাকিস্তান।
Leave a Reply