মানবিক মুখোশের আড়ালে নানা অপকর্মের অভিযোগে ‘চাইল্ড অ্যান্ড ওল্ড এইজ কেয়ার’ আশ্রমের চেয়ারম্যান মিল্টন সমাদ্দারকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ। বুধবার (১ মে) রাতে রাজধানীর মিরপুর এলাকায় অভিযান চালিয়ে মিল্টন সমাদ্দারকে গ্রেপ্তার করে ডিবি।
তার বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগগুলোর অন্যতম হলো, অসহায় মানুষকে আশ্রয় দেওয়ার নামে তাদের অঙ্গপ্রত্যঙ্গ বিক্রি করা।
এমনকি তার পরিচালিত আশ্রমে তিনি যে কয়জনকে লালন-পালন করছেন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ বিভিন্ন জায়গায় তার চেয়ে কয়েক গুণ প্রচার করেন। এছাড়াও মরদেহ দাফন করার যে হিসাব তিনি নিয়মিত দিয়ে থাকেন, তাতেও বিরাট গরমিলের অভিযোগ রয়েছে।
সম্প্রতি মিল্টন সমাদ্দারের বিভিন্ন অপকর্ম নিয়ে গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ হয়। এরপর থেকেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তাকে নিয়ে শুরু হয় সমালোচনার ঝড়। মুখ খুলতে থাকেন ভুক্তভোগীরা। যদিও কয়েকটি গণমাধ্যমে সাক্ষাৎকার দিয়ে তার বিরুদ্ধে ওঠা সব অভিযোগ অস্বীকার করেন মিল্টন সমাদ্দার।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক পেজে মিল্টন সমাদ্দার প্রায়ই দাবি করেন, তার আশ্রমে সব সময় আড়াইশ থেকে তিনশ অসুস্থ রোগী থাকেন। এছাড়া বিভিন্ন সময়ে রাস্তায় যারা মারা যান, তাদের দাফন করেন মিল্টন। আবার তার আশ্রমে অবস্থানকালেও অনেকে মারা যান।
মিল্টনের দাবি, সব মিলিয়ে এখন পর্যন্ত প্রায় ৯০০ মরদেহ দাফন করেছেন তিনি। যাদের দাফন করা হয়েছে, তাদের মধ্যে ৬০০ জন তার আশ্রমে মারা গেছেন। আর বাকি ৩০০ মরদেহ রাস্তা থেকে এনে তিনি দাফন করেছেন। এসব মরদেহ রাজধানীর মিরপুর বুদ্ধিজীবী কবরস্থান, রায়ের বাজার বুদ্ধিজীবী কবরস্থান ও আজিমপুর কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে বলে দাবি তার।
তবে বিভিন্ন গণমাধ্যমের অনুসন্ধানে মিল্টনের মিথ্যা তথ্য দেওয়ার বিষয়টি বেরিয়ে আসে। জানা যায়, মিরপুর বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে মিল্টন সমাদ্দারের প্রতিষ্ঠানের তত্ত্বাবধানে সব মিলিয়ে ৫০টি মরদেহ দাফন করা হয়েছে। এছাড়া রায়েরবাজার বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে ১৫টির মতো মরদেহ দাফনের প্রমাণ পাওয়া গেছে। তবে আজিমপুর কবরস্থানে ওই প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে এখন পর্যন্ত কোনো মরদেহের দাফন হয়নি বলে গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেন সেখানকার দায়িত্বরতরা।
তাহলে প্রশ্ন ওঠে মিল্টন সমাদ্দারের দাবি অনুযায়ী ৯০০ মরদেহ দাফন করা হলে বাকি ৮৩৫টি মরদেহ কোথায় গেলো?
মরদেহে কাটাছেঁড়ার দাগ, মৃতদের ডেথ সার্টিফিকেট দেন নিজেই
Leave a Reply