1. admin@thedailypadma.com : admin :
পদ্মা সেতু উদ্বোধনের দিন নিরাপত্তার চাদরে ঢেকে ফেলা হবে সেতু এলাকা - দ্য ডেইলি পদ্মা
বৃহস্পতিবার, ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১০:১১ অপরাহ্ন

পদ্মা সেতু উদ্বোধনের দিন নিরাপত্তার চাদরে ঢেকে ফেলা হবে সেতু এলাকা

  • Update Time : শনিবার, ১৮ জুন, ২০২২
  • ২০২ Time View

পদ্মা সেতুর উদ্বোধনী অনুষ্ঠান ঘিরে দুই পাড়ে যেন উৎসবের আমেজ। আর মাত্র ৬ দিন পরই খুলছে স্বপ্নের দুয়ার। স্বপ্ন বাস্তবায়নের দ্বারপ্রান্তে দক্ষিণাঞ্চলের মানুষ। এই খুশির মহোউৎসব ছড়িয়ে পড়েছে সারাদেশে। পদ্মা সেতু উদ্বোধনের দিন নিরাপত্তার চাদরে ঢেকে ফেলা হবে সেতু এলাকা।

রাজধানীসহ সারাদেশে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। একটি মহল নাশকতা ও ধ্বংসাত্মক কিছু ঘটিয়ে জনগণের দৃষ্টি অন্যদিকে ঘুরাতে পারে বলে মনে করছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। তবে যে কোনো ধরনের নাশকতা ঠেকাতে প্রস্তুত থাকবে পুলিশের সবকটি ইউনিট। নজরদারিতে থাকবে চৌকস গোয়েন্দা টিম। এ কারণে পুলিশ সদরদপ্তর থেকে সারাদেশের প্রতিটি থানায় নির্দেশ পাঠানো হয়েছে সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থানে থাকার জন্য। ডিএমপির থানাগুলোতেও দেয়া হয়েছে নির্দেশনা। এছাড়া সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কেউ যাতে গুজব ছড়াতে না পারে সেজন্য সার্বক্ষণিক সাইবার মনিটারিং করা হচ্ছে।

উদ্বোধনের দিন পদ্মার দুই পাড়েই শুধু ৫ হাজারের বেশি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য ইউনিফর্মে মোতায়েন থাকবেন। সাদা পোশাকে তৎপর থাকবেন বিপুলসংখ্যক গোয়েন্দা সদস্য।

পুলিশ সূত্র বলেছে, সারাদেশে ডিজিটাল ডিসপ্লের মাধ্যমে উদ্বোধনী অনুষ্ঠান দেখানো হবে। এজন্য সারাদেশে নিরাপত্তার বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করা হচ্ছে। সারাদেশে ঝুঁকি বিশ্লেষণ করে সংশ্লিষ্টদের প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে। তাদের সঙ্গে সদর দপ্তর থেকে মিটিংও করা হচ্ছে। পদ্মা সেতুর উদ্বোধন নিয়ে অনলাইনে গুজব প্রতিরোধের বিষয়ে নিয়মিত সাইবার পেট্রোলিং করা হচ্ছে। অনলাইনে গুজব ছড়িয়ে যাতে কেউ বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি না করতে পারে সেদিকটিও গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হচ্ছে।

এদিকে গত বুধবার (১৫ জুন) সকালে নিজ কার্যালয়ের (পিএমও) শাপলা হলে স্পেশাল সিকিউরিটি ফোর্স (এসএসএফ)-এর ৩৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে আগামী ২৫ জুন পদ্মা সেতুর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের আগে সশস্ত্র বাহিনীসহ সব বাহিনীকে সতর্ক থাকার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

পদ্মা সেতুর বিরোধিতাকারীরা যাতে কোনো রকম ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ড চালাতে না পারে সেজন্য এ নির্দেশ দেন তিনি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, সম্পূর্ণ নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণের মত এত বড় একটা চ্যালেঞ্জ নিয়ে সেতু নির্মাণের কাজ আমরা সম্পন্ন করেছি। কিন্তু, যারা সেতু নির্মাণের বিরোধিতা করেছিল তাদের একটা উদ্দেশ্য রয়েছে। যার কিছু কিছু তথ্যও আমরা পেয়েছি। আমরা জানতে পেরেছি, এমন একটা ঘটনা ঘটানো হবে যাতে ২৫ তারিখে আমরা উদ্বোধনী অনুষ্ঠান করতে না পারি। বিরোধিতাকারীরা কী করবে তা কিন্তু আমরা জানি না।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত তিন বাহিনী প্রধান, পুলিশ, র‌্যাব, বিজিবি এবং আনসার ও ভিডিপি’র প্রধানদের উদ্দেশ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের সবাইকে কিন্তু সতর্ক থাকতে হবে। সমস্ত বিষয়টাই একটু রহস্যজনক। এ জন্য সবাইকে বলবো একটু সতর্ক থাকতে হবে এবং আমাদের গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনার দিকেও সবাইকে নজর দিতে হবে।

তিনি আরও বলেন, এরই মধ্যে রেলে আগুন, লঞ্চে আগুন, ফেরিতে আগুন এমনকি সীতাকুণ্ডে যে আগুনটা সেটা একটা জায়গা থেকে লাগতে পারে, কিন্তু বিক্ষিপ্তভাবে কয়েকটা জায়গায় আগুন লাগে কীভাবে? আর রেলের আগুনের বিষয়ে একটি ভিডিও পাওয়া গিয়েছে যেখানে দেখা গেছে রেলের চাকার নিকটে আগুন জ্বলছে, সেটা কী করে সম্ভব সে প্রশ্নও তিনি তোলেন।

এর আগে রোববার (১২ জুন) সন্ধ্যায় পদ্মা সেতুর মাওয়া প্রান্তে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের একই কথা বলেন।

তিনি বলেন, পদ্মা সেতুর উদ্বোধনকে কেন্দ্র করে নাশকতার আশঙ্কা রয়েছে। সম্প্রতি সীতাকুণ্ডে অগ্নিকাণ্ড, সিলেটে ট্রেনে আগুনসহ কয়েকটি ঘটনার প্রসঙ্গ উল্লেখ করে প্রশ্ন করেন সাংবাদিকরা। এসব ঘটনা পদ্মা সেতুর উদ্বোধনকে কেন্দ্র করে কোনো ষড়যন্ত্র কি না?

বহুল প্রত্যাশিত স্বপ্নের পদ্মা সেতু উদ্বোধন হতে যাচ্ছে আগামী ২৫ জুন। উদ্বোধনকে কেন্দ্র করে নাশকতা বা ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ড ঘটতে পারে বলে আশঙ্কা করছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।

সরকারের একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তার সূত্র থেকে জানা যায়, পদ্মা সেতু আওয়ামী লীগ সরকারের একটি বড় সাফল্য। সেতুটি নির্মাণের শুরু থেকেই সরকারবিরোধীরা ষড়যন্ত্র করছে। তারা দেশে-বিদেশে নানা অপপ্রচার চালাচ্ছে, ষড়যন্ত্র করছে। সেতুর উদ্বোধনকে ঘিরেও নাশকতার অপচেষ্টা চলছে।

পুলিশ সদরদপ্তর সূত্রে জানা যায়, রাজধানীসহ দেশের প্রতিটি রেঞ্জের অফিসারদের পদ্মা সেতু উদ্বোধন অনুষ্ঠানকে ঘিরে সতর্ক করা হয়েছে। বিশেষ করে ডিএমপির প্রতিটি থানাকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে, থানা এলাকায় অবস্থিত মেস ও আবাসিক হোটেলগুলোতে নজরদারি বাড়াতে। পাশাপাশি অভিযান চালানোরও নির্দেশ দেয়া হয়েছে। ডিএমপির একাধিক থানার ভারপ্রাপ্ত (ওসি) কর্মকর্তারাও এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

তারা বলছেন, ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) সদরদপ্তর থেকে নির্দেশনা আসছে। বিশেষ করে নজর রাখা হচ্ছে মেস ও আবাসিক হোটেলগুলোতে। ঢাকার বাইরে থেকে বহিরাগত কেউ অবস্থান নিয়েছে কি না, অবস্থান নিলেও তার নাম-ঠিকানা সংগ্রহ করা হচ্ছে। আর কারো ওপর সন্দেহ হলে তার ওপর বিশেষ নজরদারি রাখা হচ্ছে।

গোয়েন্দা কর্মকর্তারা বলছেন, রাজধানীর প্রতিটি মেসে সাঁড়াশি অভিযান চালানো হবে। অনেক কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা মেসে অবস্থান করেন। তাদের মধ্যে বহিরাগতরা অবস্থান নিয়েছে কি না, সেটা নিশ্চিত করা হচ্ছে।

এবিষয়ে ডিবির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার এ কে এম হাফিজ আক্তার বাংলাদেশ জার্নালকে বলেন, পদ্মা সেতু ঢাকা মেট্রপলিটনের বাইরে হলেও আমাদের সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। আমরা পদ্মা সেতুর উদ্বোধনী অনুষ্ঠান ঘিরে সর্তকতার সাথে আছি। এখন পর্যন্ত হামলা বা নাশকতার কোন তথ্য পায়নি।

সূত্র জানিয়েছে, পদ্মার দুই পাড়ে সংশ্লিষ্ট দুই জেলার বাইরে থেকেও ফোর্স নিয়ে আসা হবে উদ্বোধন অনুষ্ঠান ঘিরে। নদীতে নৌপুলিশ নিরাপত্তা দেবে। সঙ্গে কোস্টগার্ডও থাকবে। পদ্মা সেতুর উদ্বোধনের দিন প্রধানমন্ত্রী, মন্ত্রিসভার সদস্য, বিশিষ্ট রাজনীতিক ছাড়াও বাংলাদেশে নিযুক্ত বিভিন্ন দেশের কূটনীতিকরা অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকবেন। তাদের নিরাপত্তায় নেয়া হবে বিশেষ ব্যবস্থা।

র‍্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বাংলাদেশ জার্নালকে বলেন, কোনো স্বার্থান্বেষী মহল যাতে পদ্মা সেতু উদ্বোধন ঘিরে নাশকতা না করতে পারে সে জন্য র‌্যাবের গোয়েন্দা নজরদারি বৃদ্বি করা হয়েছে। সাইবার মনিটরিং করা হচ্ছে। এছাড়াও রাজধানী জড়েও নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হছে। কেউ গুজব ছড়ালে তার আইনের আওতায় নিয়ে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে। যাতে করে কেউ অনলাইনে কোনো ধরনের উসকানিমূলক তথ্য না প্রচার করতে পারে।

উদ্বোধন অনুষ্ঠান ঘিরে কোনো হুমকি বা নাশকতার পরিকল্পনা আছে কি না জানতে চাইলে র‍্যাবের মুখপাত্র বলেন, এ ধরনের কোনো হুমকি নেই তবে র‍্যাব সতর্ক রয়েছে।

পুলিশ সদর দপ্তরের ডিআইজি (অপারেশনস ও অতিরিক্ত দায়িত্বে মিডিয়া অ্যান্ড প্ল্যানিং) মো. হায়দার আলী খান বলেন, পদ্মা সেতু উদ্বোধনকে ঘিরে দেশের বাইরে থেকে উসকানি দেয়া হচ্ছে। দেশের ভেতরেও কেউ এ ধরনের কাজ করতে পারে। তাদের মনিটরিং করা হচ্ছে। তাদের ওপর সাইবার নজরদারি চলছে। সেই অনুযায়ী ফোর্সও মোতায়েন করা হয়েছে। পাশাপাশি সারাদেশেই নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে।

পুলিশ সদরদপ্তরের মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্সের সহকারী মহাপরিদর্শক মো. কামরুজ্জামান বলেন, জলে, স্থলে এবং আকাশে এ তিন স্তরের ব্যবস্থার মাধ্যমে কিন্তু আমরা আমাদের নিরাপত্তা বেষ্টনী এবং বলয় ঠিক রেখে আমরা ২৫ তারিখের আনন্দঘন মুহূর্তে যে অনুষ্ঠানটি হবে সেটি সম্পন্ন করতে পারব।

পুলিশের এই কর্মকর্তা বলেন, কেউ যদি এই পদ্মা সেতুর উদ্বোধনকে কেন্দ্র করে কোনো রকম নাশকতা, কোনো রকম দুষ্টুচক্রে লিপ্ত হতে চায় সেজন্য আমাদের গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ানো হয়েছে অবশ্যই। আর ২৫ জুনকে কেন্দ্র করে মানুষের মধ্যে যে আনন্দ-উল্লাস, যে বাঁধভাঙা আবেগ নিয়ে মানুষ পদ্মা সেতুর কাছে যাবে, সেটিকে কন্ট্রোল করার জন্য আমরা পূর্বপ্রস্তুতি অবশ্যই নিয়েছি।

বহুল আকাঙ্ক্ষিত পদ্মা সেতু আগামী ২৫ জুন উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এর একদিন পর ২৬ জুন থেকে যান চলাচলের জন্য খুলে দেয়া হবে। এটি দেশের পদ্মা নদীর ওপর নির্মাণাধীন একটি বহুমুখী সড়ক ও রেল সেতু। এর মাধ্যমে মুন্সীগঞ্জের লৌহজংয়ের সঙ্গে শরীয়তপুর ও মাদারীপুর যুক্ত হবে। ফলে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের সঙ্গে উত্তর-পূর্বাংশের সংযোগ ঘটবে।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
স্বপ্নপূরণের ক্ষণগণনা
অপেক্ষা উদ্বোধনের
দিন
ঘন্টা
মিনিট
সেকেন্ড
© স্বর্বস্বত্ব সংরক্ষিত। এই ওয়েবসাইটের লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Theme Customized By BreakingNews