প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, দেশের অভ্যন্তরীণ শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষা, অপরাধ দমন ও আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় বাংলাদেশ পুলিশ নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে।
রোববার (২৩ জানুয়ারি) পুলিশ সপ্তাহ ২০২২ উপলক্ষে দেওয়া এক বাণীতে তিনি একথা বলেন।
সরকারপ্রধান বলেন, জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসবাদ দমন, মাদক নির্মূল এবং চোরাচালান দমনে পুলিশের ভূমিকা বিশ্ব দরবারে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি আরও উজ্জ্বল করেছে। এছাড়া জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে সক্রিয় অংশগ্রহণের মাধ্যমে বাংলাদেশ পুলিশের সাহসী সদস্যরা উল্লেখযোগ্য প্রশংসনীয় অবদান রেখে চলেছে।
শেখ হাসিনা বলেন, জনগণের সেবা করাই পুলিশ বাহিনীর প্রতিটি সদস্যের পবিত্র দায়িত্ব। সেখানে কোনো ধরনের অনুরাগ বা বিরাগের সুযোগ নেই। দায়িত্ব অবহেলা বা নৈতিক পদস্থলন অমার্জনীয় অপরাধ।
পুলিশ বাহিনীর সদস্যরা মানবিক মূল্যবোধ সমুন্নত রেখে দক্ষতা, পেশাদারিত্ব ও নিরপেক্ষতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করবেন এবং জাতির পিতার স্বপ্নের ‘সোনার বাংলাদেশ’ বিনির্মাণে সহায়ক শক্তি হিসেবে কাজ করবেন বলেও আশা প্রকাশ করেন তিনি।
পুলিশ বাহিনীর উন্নয়নে সরকারের নেওয়া বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সরকার গঠনের পর বাংলাদেশ পুলিশের জনবল ধাপে ধাপে ব্যাপকহারে বাড়িয়েছি। পেশাগত উৎকর্ষ সাধনে পুলিশের পদোন্নতি ও পদমর্যাদা বাড়াতে আমাদের সরকার কাজ করে যাচ্ছে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ পুলিশে নতুন পদ সৃষ্টির মাধ্যমে পুলিশ কর্মকর্তাদের পদোন্নতি পাওয়ার জটিলতা নিরসনে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করেছি। একইসঙ্গে গ্রেড-১ ও গ্রেড-২ পদের সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে। তাছাড়া শিল্পাঞ্চলের জন্য ২০১০ সালে শিল্প পুলিশ ইউনিট ও পর্যটকদের নিরাপত্তার জন্য ২০১৩ সালে ট্যুরিস্ট পুলিশ ইউনিট গঠন করি।
শেখ হাসিনা বলেন, আকাশ পথে সক্ষমতা অর্জনের মাধ্যমে পুলিশের গতিশীলতা ত্রিমাত্রিক পর্যায়ে উন্নীতকরণের জন্য ইতোমধ্যে রাশিয়া থেকে দুটি হেলিকপ্টার কেনার ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। পুলিশ বাহিনীকে একটি আধুনিক, যুগোপযোগী, দক্ষ ও জনবান্ধব বাহিনীতে রূপান্তরিত করার লক্ষ্যে উদ্যোগ গ্রহণ করেছি। ফলে পুলিশ সদস্যদের কার্যক্রমে এসেছে গতিশীলতা ও কর্মচাঞ্চল্য।
সরকার থানা, ফাঁড়ি তদন্ত কেন্দ্র, ব্যারাক, আবাসিক ভবন নির্মাণের জন্য জমি বরাদ্দসহ পুলিশ বাহিনীর সদস্যের কল্যাণে নেওয়া পদক্ষেপের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, পুলিশ সদস্যদের চিকিৎসা সেবার লক্ষ্যে ১০ তলা বিল্ডিং করে রাজারবাগে পুলিশ হাসপাতাল নির্মাণ করা হয়েছে। সেখানে পুলিশ সদস্যরা চিকিৎসা সেবা পাচ্ছেন। প্রতি বিভাগে একটা করে হাসপাতাল নির্মাণ করা হবে।
সাম্প্রতিক সময়ে কোভিড-১৯ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে জনগণের সেবায় ১০৬ জন নির্ভীক পুলিশ সদস্য জীবন উৎসর্গ করেছেন উল্লেখ করে তিনি মহান মুক্তিযুদ্ধে ও বিভিন্ন সময়ে দেশের জন্য আত্মোৎসর্গকারী পুলিশ সদস্য ও তাদের পরিবারবর্গের প্রতি গভীর সমবেদনা ও শ্রদ্ধা জানান।
প্রধানমন্ত্রী ‘পুলিশ সপ্তাহ ২০২২’র সব কর্মসূচির সার্বিক সাফল্য কামনা করেন।
Leave a Reply