1. admin@thedailypadma.com : admin :
মিয়ানমারের জান্তা সেনারা দেশটির উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে প্রায় ৮০০ বাড়িতে আগুন দিয়েছে - দ্য ডেইলি পদ্মা
মঙ্গলবার, ০৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ১১:৫৭ পূর্বাহ্ন

মিয়ানমারের জান্তা সেনারা দেশটির উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে প্রায় ৮০০ বাড়িতে আগুন দিয়েছে

  • Update Time : রবিবার, ৬ ফেব্রুয়ারী, ২০২২
  • ১৪৩ Time View

মিয়ানমারজুড়ে সামরিক শাসকদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ চলার পাশাপাশি সমানভাবে জান্তার দমন-পীড়ন চলছে। এর অংশ হিসেবে জান্তা সেনারা দেশটির উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে প্রায় ৮০০ বাড়িতে আগুন দিয়েছে, এমন অভিযোগ করেছেন গ্রামবাসী ও জান্তাবিরোধী বিক্ষোভকারীরা। এর আগেও জান্তা সেনারা রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গাদের একাধিক গ্রাম জ্বালিয়ে দিয়েছিল। এর জেরে লাখ লাখ রোহিঙ্গা প্রাণ বাঁচাতে সীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়।

জান্তার দমন-পীড়নের সাম্প্রতিক এই ঘটনা গত সোমবারের। ওই দিন মিয়ানমারের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের সাগাইং অঞ্চলের বিন ও ইন মা হতে গ্রামে প্রায় ৮০০ বাড়ি জ্বালিয়ে দেয় সামরিক বাহিনী। খবর এএফপির।

শুক্রবার বিন গ্রামের একজন নারী বলেন, জান্তাবিরোধী পিপলস ডিফেন্স ফোর্সের (পিডিএফ) যোদ্ধাদের সঙ্গে সংঘর্ষের জের ধরে ওই দিন সকালে তাদের গ্রামে আসেন সেনারা। সেনারা ফাঁকা গুলি ও গোলা ছুড়তে ছুড়তে গ্রামে প্রবেশ করেন। গোলাগুলির শব্দ শুনে গ্রামবাসী ঘরবাড়ি ছেড়ে পালিয়ে যায়। এ সময় জান্তা সেনারা প্রায় ২০০ বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেন। ওই নারী আরও বলেন, সেনারা আমার বাড়িতেও আগুন দিয়েছে। পালানোর সময় সঙ্গে কিছুই আনতে পারিনি।

এদিকে সেনারা ইন মা হতে গ্রামে প্রায় ৬০০ বাড়িতে আগুন দিয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন জান্তাবিরোধী স্থানীয় এক যোদ্ধা। তিনি বলেন, পিডিএফ যোদ্ধারা গ্রাম ছেড়ে যাওয়ার পরপরই সেনারা প্রবেশ করেন। তারা প্রায় ৬০০ বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেন।

স্থানীয় একজন অধিকারকর্মী বলেন, প্রত্যন্ত ওই দুই গ্রামের মানুষজন বেশ গরিব। পুড়ে যাওয়া বাড়িঘর মেরামত করা তাদের জন্য বেশ কষ্টসাধ্য।

মিয়ানমারের রাষ্ট্রনিয়ন্ত্রিত টেলিভিশন চ্যানেলের এক প্রতিবেদনে বৃহস্পতিবার ওই দুই গ্রামে আগুনে পোড়া বাড়িঘরের ছবি প্রচার করা হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, পিডিএফের ‘সন্ত্রাসীরা’ এসব বাড়িঘরে আগুন দিয়েছে। কিন্তু শুক্রবার দেশটির সংবাদমাধ্যম ইরাবতীর অনলাইন সংস্করণের প্রতিবেদনে বলা হয়, জান্তাবিরোধীদের শায়েস্তা করতে সেনাবাহিনী কয়েক শ বাড়িতে আগুন দিয়েছে বলে পিডিএফ জানিয়েছে। তবে ওই দাবি তারা নিরপেক্ষভাবে নিশ্চিত করতে পারেনি বলে খবরে উল্লেখ করা হয়।

গত বছরের ১ ফেব্রুয়ারি রক্তপাতহীন অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে রাষ্ট্রক্ষমতা দখল করে নেয় মিয়ানমারের সেনাবাহিনী। গ্রেপ্তার করা হয় নোবেলজয়ী নেত্রী অং সান সু চিসহ দেশটির বেসামরিক সরকারের শীর্ষ ব্যক্তিদের। জান্তার আমলে দায়ের করা একাধিক মামলায় তাদের বিচার চলছে।

তবে অভ্যুত্থানের পর থেকেই অশান্ত হয়ে উঠেছে পুরো মিয়ানমার। সেনাশাসন প্রত্যাহার, সু চিসহ রাজবন্দীদের মুক্তির দাবিতে দেশটির মানুষ রাজপথে বিক্ষোভ করছেন। জান্তাবিরোধী জাতীয় ঐক্যের সরকার গঠন করে আন্দোলন এগিয়ে নেয়া হচ্ছে। গত এক বছরে অশান্ত মিয়ানমারে দেড় হাজারের বেশি মানুষ প্রাণ হারিয়েছে, যাদের বেশির ভাগ জান্তাবিরোধী।

সেনাশাসন প্রত্যাহারের দাবিতে হাতে অস্ত্র তুলে নিয়েছে মিয়ানমারের বিভিন্ন নৃগোষ্ঠী সশস্ত্র দলগুলোও। এতে দেশটিতে সংঘাত ও রক্তপাত আরও বেড়েছে। পরিস্থিতি এতটাই জটিল রূপ নিয়েছে যে মিয়ানমার ক্রমশ জটিল গৃহযুদ্ধের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে বলে সতর্ক করে দিয়েছে জাতিসংঘ।

রাজধানী নেপিডো, ইয়াঙ্গুন, মান্দালয়ের মতো গত এক বছরে উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের সাগাইং অঞ্চলেও জান্তার বিরুদ্ধে একাধিক বিক্ষোভ, সংঘর্ষ ও রক্তপাতের ঘটনা ঘটেছে। সর্বশেষ গত ডিসেম্বরের মাঝামাঝি সময়ে এই অঞ্চলে বেসামরিক মানুষের ওপর হামলা চালিয়ে জান্তা সেনারা শিশুসহ অন্তত ১১ জনকে হত্যা করে বলে অভিযোগ তোলে যুক্তরাষ্ট্র ও জাতিসংঘ।

এর আগে ২০১৭ সালের আগস্টে রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গাদের একাধিক গ্রামে আগুন লাগিয়ে দেন সেনাসদস্যরা। জান্তার অত্যাচার-নির্যাতন থেকে প্রাণে বাঁচতে লাখো রোহিঙ্গা সীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশে পালিয়ে আসে।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
স্বপ্নপূরণের ক্ষণগণনা
অপেক্ষা উদ্বোধনের
দিন
ঘন্টা
মিনিট
সেকেন্ড
© স্বর্বস্বত্ব সংরক্ষিত। এই ওয়েবসাইটের লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Theme Customized By BreakingNews