মাহবুব পিয়াল, ফরিদপুর
ফরিদপুরের কানাইপুর বাজার বণিক সমিতির নির্বাচন না করার জন্য জেলা প্রশাসন কোন লিখিত নির্দেশনা দেননি। ফলে উদ্ভুত পরিস্থিতিতে প্রশাসনের কর্তাদের সাথে কথা বলেই নির্বাচন করা হয়েছে। নির্বাচন পরবর্তি এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি করেছে কানাইপুর বাজার বণিক সমিতি নির্বাচন পরিচালনা কমিটি। গতকাল সোমবার দুপুর ১২টার দিকে কানাইপুর পাট বাজারে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয় জুলফিকার আলী মোল্লার আড়তে।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পড়ে শোনান নির্বাচন পরিচালনা কমিটির প্রধান ও কানাইপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. জুলফিকার আলী মোল্লা। লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, প্রশাসন নির্বাচন বন্ধের কোন নির্দেশ দেননি। নির্বাচন না হলে প্রার্থীরা তাদের দোকানপাট ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে রাস্তায় নেমে যেতো। চরম বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হতো বাজারে। এজন্য নির্বাচন করা ছাড়া আর কিছু করার ছিলো না।
জুলফিকার আলী মোল্লা বলেন, প্রশাসনকে যথাযথ সম্মান প্রদর্শন করেই একথা বলছি। তারা আমাদের কর্তা। যদি আমাদের কোন ভুল হয়ে থাকে ক্ষমা করে দিবেন।
সংবাদ সম্মলনে উপস্থিত অন্যান্য প্রার্থীরা প্রশ্ন করে বলেন, করোনা ভাইরাসের কারণে নির্বাচন বন্ধে নির্দেশের যে কথা বলা হচ্ছে তা ব্যবসায়ীরা মানতে পারেনি। করোনার মধ্যেই ফরিদপুর ট্রাক ড্রাইভার্স ইউনিয়নের নির্বাচন হয়েছে। জাতীয়ভাবেও ইউপি নির্বাচন হচ্ছে। তাহলে আমাদের নির্বাচন করতে বাধা কোথাও।
সংবাদ সম্মেলনে নির্বাচন পরিচালনা কমিটির আরেক সদস্য মো. খোকন মাতুব্বর, সদ্য নির্বাচিত সভাপতি মো. লিয়াকত মাতুব্বর, সাধারণ সম্পাদক মো. তুষার খান, সহ-সভাপতি মো.সিরাজ মৃধা খোকন, যুগ্ম সম্পাদক শফিকুল ইসলাম খোকন, ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক মো. মনির হোসেন শাহীনসহ নির্বাচিত অন্যান্য প্রার্থী ও সাধারণ ব্যবসায়ীরা উপস্থিত ছিলেন।
গত রোববার এ বণিক সমিতির এ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনে ১৭টি পদে ৩৪ জন প্রতিদ্বন্দিতা করেন। ভোটার ছিলেন ১১৭২ জন। ভোট দিয়েছেন ১০৫১ জন। গণনা শেষে ফলাফল ঘোষণা করা হয়।
এ মর্মে গত ৩ ফেব্রæয়ারি ফরিদপুর সদরের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মাসুদুল আলম ওই বাজার বণিক সমিতির আহŸায়ক ও প্রধান নির্বাচন কমিশনার মো. জুলফিকার আলীকে করোন ভাইরাসজনিত রোগ ১৯ এর নতুন ভ্যারিয়েন্ট অমিক্রমের প্রাদুর্ভাবের কারনে ‘কানাইপুর বাজার বণিক সমিতির নির্বাচন স্থগিত করার’ অনুরোধ জানান।
কিন্তু ইউএনওর ওই অনুরোধ উপেক্ষা করে নির্বাচনী কার্যক্রম অব্যাহত থাকে। এ প্রেক্ষাপটে নির্বাচনের আগের দিন গত শনিবার বিকেলে ফরিদপুর সদরের সহকারি কমিশনার ভ‚মি কানাইপুর বাজারে গিয়ে নির্বাচন আয়োজন স্থগিত করতে বলেন।
এর প্রতিবাদে মহা সড়ক অবরোধ করে নির্বাচনমুখী ব্যাবসায়ী ও তাদের সমর্থকরা। গত
শনিবার রাতে ঢাকা-খুলনা মহা সড়ক অবরোধ করেন। পরে জেলা প্রশাসন ও পুলিশের ঊর্ধতন কর্মকর্তারা গিয়ে নির্বাচনে অংশ নেওয়া ও নির্বাচন আয়োজনকারী নেতাদের সাথে কথা বলে অবরোধ কর্মসূচি তুলে নেয়।
শনিবার রাতে বাজার বণিক সমিতির নেতাদের সাথে প্রশাসন ও পুলিশ কর্মকর্তাদের সাথে আলোচনা হয়। সভায় নির্বাচন আয়োজকদের করোনাজনিত বিধি নিষেধ চালাকালীন সময় অর্থাৎ আগামী ২১ ফেব্রæয়ারির পর করার আনুরোধ জানান।
তবে সব নির্দেশনা ও অনুরোধ উপেক্ষা করে গত রবিবর যথারীতি অনুষ্ঠিত হয়।
Leave a Reply