ইউক্রেনে রাশিয়ার সর্বাত্মক সামরিক অভিযান গড়িয়েছে দ্বাদশ দিনে। রুশ সামরিক বাহিনীর ব্যাপক হামলার মুখে অনেকটাই বিপর্যস্ত পূর্ব ইউরোপের এই দেশটি। এর ওপর বেশ কিছু শহরে হামলা আরও জোরদার করেছে রুশ সেনারা। এই পরিস্থিতিতে রাশিয়ার বিরুদ্ধে নতুন অভিযোগ সামনে এনেছে যুক্তরাষ্ট্র।
দেশটির অভিযোগ, ইউক্রেনের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে অংশ নিতে দেশটিতে সিরিয়ার ভাড়াটে সেনাদের নিয়োগ করছে রাশিয়া। যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তারা মার্কিন সংবাদমাধ্যম ওয়াল স্ট্রিট জার্নালকে এই তথ্য জানিয়েছেন বলে সোমবার (৭ মার্চ) এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
মার্কিন কর্মকর্তাদের অভিযোগ, ইউক্রেনে রাশিয়ার চলমান সামরিক অভিযানে অংশ নিতে সিরিয়ার ভাড়াটে সেনাদের নিয়োগ করছে রাশিয়া। এসব সেনারা শহর এলাকায় যুদ্ধ করতে পারদর্শী। আর এসব যোদ্ধাকে নিয়োগের মাধ্যমে বড় বড় ইউক্রেনীয় শহরগুলো দখল করার জন্য মস্কো প্রস্তুত হচ্ছে বলেও জানিয়েছেন তারা।
বিবিসি বলছে, ইউক্রেনে চলমান যুদ্ধে অংশ নিতে কতজন সিরীয় যোদ্ধা রাজি হয়েছেন সেটি জানাতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন মার্কিন গোয়েন্দা কর্মকর্তারা। তবে তারা বলেছেন, ইউক্রেন যুদ্ধে অংশ নিতে বেশ কিছু সিরীয় যোদ্ধা ইতোমধ্যেই রাশিয়ায় পৌঁছেছে এবং তাদেরকে ইউক্রেনে মোতায়েনের প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে।
সিরিয়ার পূর্বাঞ্চলীয় শহর দেইর ইজ্জর থেকে বের হওয়া একটি প্রকাশনা অনুযায়ী, ইউক্রেনে গিয়ে গার্ড হিসেবে কাজ করার জন্য সিরিয়া থেকে স্বেচ্ছাসেবক খুঁজছে রাশিয়া। এ কাজে স্বেচ্ছাসেবকদের ২০০ থেকে ৩০০ মার্কিন ডলার করে বেতন দেওয়া এবং একবারে ছয় মাসের জন্য ইউক্রেনে গিয়ে কাজ করার অফার দিয়েছে মস্কো।
রুশ কর্মকর্তাদের বিশ্বাস, সিরিয়ার গৃহযুদ্ধে এক দশকেরও বেশি সময় ধরে শহুরে যুদ্ধের লড়াইয়ে দক্ষ হয়ে ওঠা সিরীয় যোদ্ধাদের ইউক্রেনে মোতায়েন করা গেলে রাজধানী কিয়েভসহ পূর্ব ইউরোপের এই দেশটির গুরুত্বপূর্ণ শহরগুলো দখলে সুবিধা হতে পারে মস্কোর।
উল্লেখ্য, গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ভোরে ইউক্রেনে ঢুকে হামলা শুরু করে রাশিয়ান সৈন্যরা। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ইউরোপের প্রথম দেশ হিসেবে রাশিয়ার সশস্ত্র বাহিনী স্থল, আকাশ ও সমুদ্রপথে ইউক্রেনে এই হামলা শুরু করে। একসঙ্গে তিন দিক দিয়ে হওয়া এই হামলায় ইউক্রেনের বিভিন্ন শহরে রাশিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র পড়েছে বৃষ্টির মতো।
সর্বাত্মক হামলা শুরুর পর এক সপ্তাহের মধ্যেই পূর্ব ইউরোপের এই দেশটির বহু শহর কার্যত ধ্বংসস্তুপে পরিণত হয়েছে। সামরিক অবকাঠামোর বাইরে রাশিয়ার হামলার লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হয়েছে আবাসিক ভবন, স্কুল ও হাসপাতাল। আর তাই জীবন বাঁচাতে দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন ১০ লাখেরও বেশি ইউক্রেনীয়।
Leave a Reply