আগামী ১২ই মে ফরিদপুর জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন। কে হচ্ছে দলটির কর্ণধার। মরিয়া হয়ে উঠেছে দলটির নেতারা। পদ পেতেই হবে, আশায় পোস্টার ফেস্টুন ব্যানারে ছেয়ে গেছে। রঙিন এসব পোস্টার দেখে শহরের মানুষও উজ্জীবিত। অনেকদিন পর হওয়া সম্মেলনে যেই আসুক সে যেন দলের পাশাপাশি সাধারণ মানুষের কাজ করে এটাই জেলাবাসীর প্রত্যাশা।
সভাপতির দৌড়ে যারা আছেন, বর্তমান সভাপতি এডভোকেট সুবল চন্দ্র সাহা, সহ-সভাপতি শামিম হক, সাবেক সাধারণ সম্পাদক বিপুল ঘোষ, ডা. খবিরউদ্দিন। সাধারণ সম্পাদক পদে বর্তমান সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ মাসুদ হোসেন, সাবেক কোতোয়ালির সাধারণ সম্পাদক ও পৌর মেয়র অমিতাব বোষ, যুবলীগ আহ্বায়ক জিয়াউল হাসান মিঠু, স্বেচ্ছাসেবক লীগের আহ্বায়ক শওকত আলী জাহিদ ও জেলা আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক অমিমেষ রায়। জানা যায়, বর্তমানের কমিটি নিয়ে রয়েছে নানা বিতর্ক। ২০১৬ সালে ২২শে মার্চ এডভোকেট সুবল সাহাকে সভাপতি ও সৈয়দ মাসুদ হোসেনকে সাধারণ সম্পাদক করে ৭৫ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়। কমিটিতে বিএনপি ও বহিরাগতদের সংখ্যাই বেশি থাকায় নানা বিতর্ক ছিল তৎকালীন মন্ত্রী খন্দকার মোশাররফ হোসেন আদর্শের কমিটির কারণে কেউ মুখ খুলতে পারেনি। অবশেষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ফরিদপুরে সাঁড়াশি অভিযান চালান। এতে অনেক রাঘববোয়াল কারাবরণ করছেন। কেউ আছে পালিয়ে, আবার কেউ গা ঢাকা দিয়েছেন।
সূত্র বলছে, সুবল সাহা সাবেক মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার খন্দকার মোশাররফ হোসেনের ছত্রছায়ায় সভাপতি হন। মোশাররফ আমলে ক্ষমতার অপব্যবহারের কারণে তৃণমূল নেতারা তার ওপর চরম ক্ষুব্ধ ছিলেন। ২০২০ সালের ১৬ই মে তার বাড়িতে হামলা হলে তিনি কেন্দ্রীয় নেতাদের আশ্বাসে এখনো পদটি ধরে রেখেছেন। সুবল সাহা বলেন, আমি নির্যাতনের শিকার হয়েছি। দল আমাকেই মূল্যায়ন করবেন। সভাপতি চাইছেন বিপুল ঘোষ তিনি নিজেকে ত্যাগী নেতা মনে করেন। তাকে পদ দিলে দলের জন্য নিবেদিত হয়ে কাজ করবেন।
সহ-সভাপতি শামিম হক হঠাৎ শূন্য হওয়া রাজনীতিকে আবার চাঙ্গা করেন। দলীয় নেতাকর্মীর পাশে থেকে সহায়তা করেন। করোনাকালে বিভিন্ন এলাকায় দলের পক্ষে সহযোগিতা করেছেন। শামিম হক বলেন, দল যদি তাকে পদ দেয় তবে তিনি জেলা সবক’টি সংসদীয় আসন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে উপহার দিতে পারবেন। সেই সঙ্গে দলীয় সকলকে নিয়ে তিনি একটি শক্তিশালী দল গঠনে কাজ করবেন।
আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিকী সম্মেলনকে সামনে রেখে সভাপতি পদে মনোনয়ন প্রত্যাশী প্রবীণ আওয়ামী লীগ নেতা,বিশিষ্ট আইনজীবি বীরমুক্তিযোদ্ধা এ্যডভোকেট শামসুল হক ভোলা মাস্টার শহরে এক বিশাল মোটরসাইকেল শোভাযাত্রা বের করেছে ।শোভাযাত্রাটি থেকে জয় বাংলা,জয় বঙ্গবন্ধু শ্লোগানে মুখরিত হয়ে উঠে ফরিদপুর শহর।
শামসুল হক ভোলা মাস্টার জেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য। তিনি বর্তমানে জেলা পরিষদের প্রশাসক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। এর আগে তিনি জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ছিলেন তারও আগে তিনি ফরিদপুর সদর উপজেলা পরিষদের নির্বাচিত চেয়ারম্যান ছিলেন। বর্ণাঢ্য রাজনৈতিক জীবন রয়েছে তার।
অপরদিকে সাধারণ সম্পাদক পদে দু’জনের নাম শোনা যাচ্ছে জোরালোভাবে। এদের একজন কেন্দ্রীয় যুবলীগ নেতা ফারুক হোসেন, অপরজন পৌর মেয়র অমিতাব বোস। ফারুখ হোসেন জেলায় অনেকদিন না থাকলেও এখন তিনি নিয়মিত। কখনো কখনো দলীয় কর্মসূচিতে অংশ নিচ্ছেন। ফারুখ হোসেন বলেন, আমি সারা দেশে দলটির জন্য কাজ করেছি। আমি মনেকরি, আমাকে যদি পদটি দেয়া হয় তবে দলের জন্য ভালো কাজ করতে পারবো।
এদিকে, ফরিদপুর সদর উপজেলার ভাইস চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ার পর দলীয় নেতাদেরকে একই প্লাটফর্মে আনতে বিশেষ ভূমিকা রাখেন বলে দাবি কোতোয়ালি আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক অমিতাভ বোসের। পরে দলীয় মনোনয়ন পেয়ে পৌরসভার মেয়র নির্বাচিত হন। অমিতাভ বলয়ের নেতাকর্মীদের দাবি, নির্বাচিত হওয়ার পর আবার ষড়যন্ত্রের শিকার হচ্ছেন তিনি। অমিতাভ বোস বলেন, দলের দুর্দিনে আমি রাজপথে কাজ করেছি। সবসময় দলের নেতাকর্মীদের সাহায্য সহযোগিতা করেছি। এখন সম্মেলনকে কেন্দ্র করে আমার বিরুদ্ধে নানা ধরনের অপপ্রচার চালানো হচ্ছে। আমি সৎ আছি বিধায় ভয় করি না। সকল ষড়যন্ত্রকে উপেক্ষা করে এগিয়ে যেতে চাই। দলের জন্য কাজ করতে চাই।
Leave a Reply