মধুখালী ও ভাঙ্গার আলোচিত দুই ঘটনার বিষয় নিয়ে প্রেস ব্রিফিং করেছে ফরিদপুর জেলা পুলিশ।
আজ সোমবার দুপুর ২টায় সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন ফরিদপুরের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ শাহজাহান (পিপিএম সেবা)।
এই সময় জেলা পুলিশের কর্মকর্তাবৃন্দ এবং ফরিদপুরের বিভিন্ন গণমাধ্যমের সাংবাদিকবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
আড়ুয়াকান্দি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কক্ষে কিশোর ও তার বাবাকে পৈচাশিক নির্যাতনের ঘটনায় মামলার আসামীদেরকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
গত ১৭/০৩/২০২৩ ইং সকাল অনুমান ০৯.০০ ঘটিকার সময় জাহাপুর ইউনিয়নের আড়ুয়াকান্দি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের একটি শ্রেণী কক্ষে স্থানীয় কতিপয় যুবক ও একজন তরুনী কর্তৃক ইয়ামিন মৃধা ওরফে রাজু (৪০), পিতা মৃত কুবাদ আলী মৃধা, সাং সালামতপুর, থানা মধুখালী, জেলা ফরিদপুর এবং তার কিশোর পুত্র রাজন মৃধা (১৫) কে অমানবিক নির্যাতন করে।
এরপর স্থানীয় লোকজন অপপ্রচার করে যে, আড়ুয়াকান্দি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ২য় শ্রেণীর ছাত্রী ইভা খাতুন (৮) তার বাবা ইয়াসমিন মৃধা ওরফে রাজু এবং তার সৎ ভাই রাজন মৃধা কর্তৃক ধর্ষণের শিকার হয়েছে।
উক্ত সংবাদের ভিত্তিতে মধুখালী থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে জনগন কর্তৃক আটককৃত ইয়ামিন মৃধা ওরফে রাজু এবং রাজন মৃধাকে হেফাজতে গ্রহন করে প্রাথমিক চিকিৎসা প্রদান করে।
ঘটনার প্রাথমিক তদন্তকালে প্রতীয়মান হয় যে, ইয়াসমিন মৃধা ওরফে রাজু এর বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন।
ভিকটিম ইভা খাতুনকে জিজ্ঞাসাবাদে সে জানায় যে, তার বাবা তাকে নির্যাতন করেনি। ইয়াসমিন মৃধা ওরফে রাজু তার দুই ছেলে রাজন মৃধা (১৫), স্বজন মৃধা (৯) এবং কন্যা ইভা খাতুন (৮) সহ মাঝকান্দি গ্রামে আব্দুস সালামের বাড়িতে ভাড়াটিয়া হিসেবে বসবাস করতেন।
উক্ত মারপিটের ঘটনায় ২০/০৩/২০১৩ খ্রিঃ তারিখ ইয়াসমিন মৃধা ওরফে রাজু আসামী ১। কুতুব উদ্দিন (৩৬) পিতা নাজিম উদ্দিন ২। ফয়সাল (২০), পিতা আসাদুল ৩। জহিরুল (১৯), পিতা শাজাহান সর্ব সাং মাঝকান্দি, থানা মধুখালী, জেলা ফরিদপুরসহ অজ্ঞাতনামা ৮/৯ জনের বিরুদ্ধে এজাহার দায়ের করেন মধুখালী থানায়।
একই তারিখে এজাহার নামীয় ১নং আসামী কুতুবউদ্দিনকে গ্রেফতার করে বিজ্ঞ আদালতে সোপর্দ করা হয়। অপর দুই আসামী ফয়সাল ও জহিরুল গত ২৩/০৩/২০২৩ খ্রিঃ তারিখ বিজ্ঞ আদালতে স্বেচ্ছায় আত্মসমর্পন করে জামিন লাভ করে।
মারধরের ঘটনার ভিডিও চিত্র হতে সনাক্ত করে ঘটনায় সরাসরি জড়িত আসামী ফরমান মোল্যা (২১), পিতা মৃত আসাদুল মোল্যা, সাং মাঝকান্দি, সজীব মোল্যা (২২), পিতা শাহজাহান মোল্যা, সাং মাঝকান্দি, জুবায়ের শেখ (২০), পিতা নবিয়াল শেখ, সাং শিবরামপুর, হাসিব ভূঁইয়া (২০), পিতা নূর ইসলাম ভূঁইয়া, সাং শিবরামপুর, সর্ব থানা মধুখালী, জেলা ফরিদপুরদের গত ২৬/০৩/২০২৩ খ্রিঃ তারিখ বিভিন্ন স্থানে অভিযান পরিচালনা করে গ্রেফতার করা হয়। অন্যান্য পলাতক আসামীদের গ্রেফতারের চেষ্টা অব্যাহত আছে বলে পুলিশ সুপার গণমাধ্যমকে জানান।
এছাড়া অপর ঘটনায় কোতয়ালী থানায় ডায়রী মুলে ২৬/০৩/২০২৩ ইং মুন্নি আক্তার (২৫), স্বামী ইমারত ফকির, পিং মৃত দেলোয়ার হোসেন মাতুব্বর, সাং উতরাইল, থানা শিবচর, জেলা মাদারীপুর, এ/পি পাড়া, থানা ভাংগা, জেলা ফরিদপুর, ইং ২৬/০৩/২০২৩ তারিখ তাহার ০৩ মাসের শিশু পুত্র সন্তান রোহানকে নিয়ে ফরিদপুর জাহেদ মেমোরিয়াল শিশু হাসপাতাল থেকে হারিয়ে গিয়েছে বলে একটি জিডি করেন।
উক্ত জিডির সূত্র ধরে, অফিসার ইনচার্জ কোতয়ালী থানার এম.এ জলিল, জেলা গোয়েন্দা শাখা ও জরুরী ডিউটিতে নিয়োজিত কিলো-২ অফিসার তাৎক্ষনিকভাবে বিষয়টি নিয়ে অনুসন্ধান শুরু করে এবং বাচ্চাটি উদ্ধারের জন্য সর্বোচ্চ পুলিশি তৎপরতা চালায়।
অনুসন্ধানকালে অফিসার ইনচার্জসহ অন্যান্য অফিসার জাহেদ মেমোরিয়াল শিশু হাসপাতালে থাকা সিসি ক্যামেরা ফুটেজ পর্যালোচনা করেন।
পর্যালোচনায় দেখা যায়, উক্ত অভিযোগকারীনি তাহার অভিযোগের বর্ণনা মতে বাচ্চা নিয়ে হাসপাতালে প্রবেশের বা হাসপাতালের ভিতরে বাথরুমে যাওয়ার কোন ফুটেজ নাই।
শুধুমাত্র তাহার কথিত মামা বকুলকে নিয়ে রিক্সাযোগে হাসপাতালে প্রবেশের ফুটেজটি দেখা যায়, পরবর্তীতে মোবাইল ফোনের কল রেকর্ড এবং প্রযুক্তির মাধ্যমে ব্যাপক অনুসন্ধান চালিয়ে তাহার বাচ্চাকে ভাঙ্গা থেকে উদ্ধার করা হয়।
উক্ত অভিযোগকারীকে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদে তিনি জানান যে, উক্ত বাচ্চাকে তিনি ৪০,০০০/- টাকার বিনিময়ে জনৈক আসমার নিকট বিক্রি করে দিয়েছিল। এই বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন আছে বলে গণমাধ্যামকে জানান ফরিদপুর জেলা পুলিশ সুপার।
Leave a Reply