মাহবুব পিয়াল,ফরিদপুর প্রতিনিধি: ফরিদপুরের সালথা উপজেলায় আধিপত্য বিস্তার ও ইফতারি খাওয়াকে কেন্দ্র করে দেশীয় অস্ত্র নিয়ে অতর্কিত হামলার ঘটনার বিচারের দাবিতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল করে এলাকাবাসী। মানববন্ধন শেষে বাড়ি ফেরার পথে দেশীয় অস্ত্র নিয়ে ফের হামলা চালায় প্রতিপক্ষ। এসময় নারী-পুরুষ শিশুসহ অন্তত ১৫ জন আহত হয়েছেন।
বুধবার (০৫ এপ্রিল) সন্ধ্যায় উপজেলার গট্টি ইউনিয়নের বালিয়াগট্টি বাজারে মানববন্ধন শেষে বাড়ি ফেরার পথে পাশের দোহার গট্টি এলাকায় এ হামলার ঘটনা।
এলাকাবাসী জানায়, গত ০২ এপ্রিল সন্ধ্যায় সালথা উপজেলার বড় বালিয়া গ্রামে আধিপত্য বিস্তার ও ইফতারি খাওয়াকে কেন্দ্র করে দেশীয় অস্ত্র নিয়ে অতর্কিত হামলার ঘটনা ঘটে। এতে মহিলাসহ কয়েকজন গুরুতর আহত ও কয়েকটি বাড়ি-ঘর ভাংচুর করা হয়। পরে এ ঘটনার প্রতিবাদ ও সুষ্ঠু বিচারের দাবিতে বুধবার (০৪) এপ্রিল বিকাল ৪টার দিকে বালিয়াগট্টি বাজারে একটি মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল করে এলাকাবাসী। পরে মানববন্ধন ও মিছিল শেষে বাড়ি ফেরার পথে দেশীয় অস্ত্র নিয়ে ফের অতর্কিত হামলা করে ওয়ালিদ ফকির ও সবুর খানের নেতৃত্বে কয়েকশত লোকজন।
এসময় রামদা, সুরকি, লাঠিসোঁটাসহ দেশীয় অস্ত্র নিয়ে অতর্কিত হামলায়, উপজেলার দোহার গট্টি গ্রামের ফিরোজ মাতুব্বর (৩৮), হাবিব শেখ (২৮), কামাল মাতুব্বর (৩৭), অলি (৪০), জানো বেগম (৪৫), লিটন (৩৫), ইব্রাহিম শিকদার (২৩), লিখন মাতুব্বর (১১), ইসাহাক মাতুব্বর (৪০), রাকিব (১৮), সেলিম মাতুব্বরসহ (৩৬) অন্তত ১৫ জন আহত হন। আহতদের উদ্ধার করে ফরিদপুরের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালসহ জেলার বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
এর মধ্যে রামদা’র কোপে আহত অলির অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তাকে ঢাকায় রিফার্ড করা হয়েছে।
এলাকাবাসীর দাবি, “স্থানীয় এক প্রভাবশালীর ছত্রছায়ায় ওয়ালিদ ফকির ও সবুর খানের নেতৃত্বে কয়েকশ লোক এ হামলা চালায়। এসময় হামলার বিচারের দাবিতে করা মানববন্ধনকারীদের বলা হয় তোদের কত বড় সাহস আমাদের বিরুদ্ধে মানববন্ধন করিস। আজকে তোদের কোন বাপ বাঁচায় দেখবো? আমরা পূর্বের হামলার বিচার চাইতে গেয়ে ফের হামলার শিকার হলাম। আমরা এই দুর্বৃত্তদের বিচার চাই। আমরা কি ন্যায় বিচার দাবী করতে পারবোনা।”
তবে হামলার অভিযোগ অস্বীকার করেছে ওয়ালিদ ফকির ও সবুর খান। তারা এ হামলার সাথে জড়িত নয় বলে দাবী করেন।
তারা বলেন, এসব মারামারির বিষয়ে আমরা কিছু জানিনা। তবে শুনেছি বালিয়া গ্রামের সেলিম মাতুব্বর ও গট্টি গ্রামের হাকিম খা’র মধ্যে মারামারি হয়েছে। এ মারামারিতে কেউ আহত হয়ে থাকতে পারে।
এদিকে প্রতিপক্ষের কয়েকজন উল্টো দাবী করেন, মানববন্ধনকারীরাই আগে এ হামলা চালায়। হামলায় তাদেরও মহিলাসহ বেশ কয়েকজন আহত হন। এছাড়া বালিয়াগট্টি বাজারের পাশের মিরের গট্টি গ্রামের গফুর মাতুব্বর, মকবুল মাতুব্বর ও নজরুল মাতুব্বরসহ আরও কয়েকজনের বাড়িঘর ভাংচুর করা হয়। এসময় তাদেরও বেশ কয়জন হামলার শিকার হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন বলে দাবী তাদের।
সালথা থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) আওলাদ হোসেন বলেন, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে ৮ রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছুঁড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। আপাতত পরিবেশ শান্ত রয়েছে। তবে, এঘটনায় এখন পর্যন্ত থানায় কোনো লিখিত অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে তদন্তপূর্বক আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
Leave a Reply