মাহবুব পিয়াল,ফরিদপুর : আর্ন্তজাতিক খ্যাতিসম্পন্ন চলচ্চিত্র নির্মাতা তারেক মাসুদ এর ১২তম মৃত্যু বার্ষিকী ফরিদপুরে পালিত হয়েছে।
তারেক মাসুদ ফিল্ম সোসাইটির আয়োজনে শহরের রাইট ট্র্যাক স্কুলের হল রুমে আজ রবিবার সকালে ১১টায় এ উপলক্ষে আলোচনা সভা অনুষ্টিত হয়।তারেক মাসুদ ফিল্ম সোসাইটির সভাপতি মৃর্ধা রেজাউল করিম এর সভাপতিত্বে আলাচনা সভায় অধ্যাপক লিয়াকত হোসেন হিমু,সাংস্কৃতি কর্মী মো:শরীফ খান,কলেজ ছাত্র মো: তাহসিনুল করীমসহ অন্যান্যরা আলোচনায় অংশ নেন।
তারেক মাসুদ ফিল্ম সোসাইটির সভাপতি মৃর্ধা রেজাউল করিম বলেন, তারেক মাসুদ কে নতুন প্রজন্মের অনেকেই ভালো ভাবে চেনে না তাই তার সম্পর্কে আলোচনা এবং তার নির্মিত চলচিত্র বেশী বেশী দেখা উচিৎ সবার। স্কুল কলেজে তার নির্মিত চলচিত্র দেখানো হলে নতুনদের মধ্যে থেকেও সৃজনশীল নির্মাতা উঠে আসবে যারা এক সময় তারেক মাসুদের মতো আন্তর্জাতিক খ্যাতি নিয়ে আসতে পারবে বাংলাদেশের জন্য।
অধ্যাপক লিয়াকত হোসেন হিমু বলেন, আমাদের দুর্ভাগ্য অকালেই তারেক মাসুদকে আমরা হারিয়েছি। তিনি বেঁচে থাকলে আমরা আরো সুন্দর সুন্দর চলচ্চিত্র পেতাম। তারেক মাসুদ মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত ঘটনা তার চলচ্চিত্রের মাধ্যমে আমাদের সামনে তুলে ধরেছেন।
সাংস্কৃতি কর্মী শরীফ খান বলেন,তারেক মাসুদের নামে ফরিদপুর শহরে একটি রাস্তার নাম করন করা প্রয়োজন এবং তার বাড়িকে কেন্দ্র করে একটি চলচ্চিত্র গবেষণা কেন্দ্র করা হলে বাংলা চলচ্চিত্র এবং তারেক মাসুদ সম্পর্কে নতুন প্রজন্ম অনেক কিছু জানতে পারবে।
আর্ন্তজাতিক খ্যাতিসম্পন্ন চলচ্চিত্র নির্মাতা তারেক মাসুদ ১৯৫৬সালে ফরিদপুর জেলার ভাঙ্গা উপজেলার নুরপুরে জন্ম গ্রহন করেন। বিশ্ববিদ্যালয় পড়াকালীন সময়ে তিনি সুস্থ ধারার চলচ্চিত্র আন্দোলনে যুক্ত হন। ১৯৮২সালে বাংলাদেশের খ্যাতনামা চিত্রকর এস এম সুলতান এর উপর নির্মিত ডকুমেন্টরি “আদম সুরাত” দিয়ে যাত্রা শুরু করেন তিনি। মুক্তির গান, মুক্তির কথা, নারীর কথা, নরসুন্দর, অর্ন্তযাত্রা, রানওয়ে তাঁর অনন্য সৃষ্টি। ২০০২সালে তাঁর নির্মিত চলচ্চিত্র “মাটির ময়না” ফ্রান্সের কান ফ্লিম ফেস্টিভ্যালে প্রথম স্থানের গৌরব অর্জন করে। এছাড়াও ২০১২সালে সফল চলচ্চিত্রকর তারেক মাসুদকে একুশে পদক (মরণোত্তর) এ ভুষিত করা হয়।
প্রখ্যাত এই চলচ্চিত্র নির্মাতা ২০১১ সালের ১৩আগস্ট মানিকগঞ্জ থেকে ঢাকা যাওয়ার পথে এক মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত্যু বরণ করেন। আজও মনে-প্রাণে গেঁথে আছে সকলের মনে গুনি এ চলচ্চিত্র নির্মাতার নির্মাণশৈলি। তারেক মাসুদের সব চিন্তা আর চেতনার মাঝেই ছিল, দেশের মাটি আর মানুষের কথা। যা প্রকাশ পায় তার সৃষ্টির মাঝে। আর্ন্তজাতিক খ্যাতিসম্পন্ন চলচ্চিত্র নির্মাতা তারেক মাসুদের স্মৃতি ধরে রাখতে একটি মিউজিয়াম প্রতিষ্ঠিতার দাবী পরিবার ও এলাকাবাসীর।
Leave a Reply